বৃহস্পতিবার ঢাকার প্রাণ সেন্টারের কনফারেন্স রুমে ‘আমরা নারী’ ও ‘আমরা নারী রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট’ এবং ‘প্রাণ আরএফএল’ গ্রুপের যৌথ উদ্যোগে একটি স্তন ক্যান্সার সচেতনতা বিষয়ক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। সেমিনারের মূল উদ্দেশ্য ছিল প্রতিষ্ঠানটির নারী কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের স্তন ক্যান্সার সম্পর্কে সচেতন করে তোলা।
সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (কর্পোরেট ফ্যাইনান্স) উজমা চৌধুরী, ডিজিএম এন্ড হেড অফ কর্পোরেট ব্র্যান্ড নুরুল আফসার, সান হেলথ কেয়ারের ডা. লোপাসহ প্রাণ আরএফএল গ্রুপ ও প্রতিষ্ঠানের অন্যান্য কর্মকর্তারা।
আয়োজকদের পক্ষ থেকে অনুষ্ঠানে মূল বক্তা ও অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্তন ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ ডা. উম্মে হুমায়রা, সাবেক কৃষি সচিব ও কর্মসংস্থান ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান মোঃ সায়েদুল ইসলাম, অর্থ মন্ত্রণালয়ের সাবেক অতিরিক্ত সচিব রহিমা বেগম, অবসরপ্রাপ্ত অতিরিক্ত সচিব সাবিহা পারভীন, শিক্ষা, রিসার্চ এন্ড ডেভেলপমেন্ট পরিচালক হুসনা কাদরী, আইটি কনসালটেন্ট সামিউল ইসলাম হিরণ এবং আমরা নারী ও আমরা নারী রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান সমন্বয়কারী এম এম জাহিদুর রহমান (বিপ্লব)। বিশেষজ্ঞ ডা. উম্মে হুমায়রা, মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন এবং স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি, প্রাথমিক পর্যায়ে শনাক্তকরণ এবং প্রতিরোধ সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য তুলে ধরেন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্যমতে, বাংলাদেশে প্রতি বছর ১৫,০০০ এরও বেশি নারী স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত হন। এর মধ্যে প্রতি বছর প্রায় ৭,৫০০ জন এই রোগে মারা যান। অধিকাংশ নারীর মধ্যেই স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি থাকা সত্ত্বেও বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করতে অনেকে সংকোচবোধ করেন। ডা. হুমায়রা উপস্থিতদের স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি নিরূপণ, প্রাথমিক লক্ষণ শনাক্তকরণ ও নিয়মিত স্তন পরীক্ষা করার পরামর্শ দেন।
স্তন ক্যান্সারের লক্ষণসমূহ হলো: বগল বা স্তনে গাঁটের উপস্থিতি, স্তনে ফোলা-ব্যথা বা চামড়া কুঁচকে যাওয়া, স্তনের আকার পরিবর্তন বা লালচে ভাব, স্তনের বোঁটা থেকে রস নির্গত হওয়া।
এক্ষেত্রে চিকিৎসকদের পরামর্শ হলো: ২০ বছর বয়সের পর থেকে প্রতি মাসে মাসিকের পরে নিজ নিজ স্তন পরীক্ষা করা এবং ৪০ বছর বয়সের পর থেকে বছরে একবার ম্যামোগ্রাম করানো উচিৎ।
‘আমরা নারী’ একটি অরাজনৈতিক, অলাভজনক সংস্থা। ‘আমরা নারী’ নারীদের ক্ষমতায়ন, কল্যাণ ও সামাজিক উন্নয়নে নিবেদিত। এর সহযোগী সংগঠন ‘আমরা নারী রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট’ দেশের বিভিন্ন স্থানে ধারাবাহিকভাবে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য এই ধরনের সেমিনার পরিচালনা করে। অক্টোবর মাসে স্তন ক্যান্সার সচেতনতা মাস উপলক্ষ্যে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে এই ধরনের সেমিনার আয়োজন করা হয়েছে, চলবে ২০ নভেম্বর পর্যন্ত যাতে করে সমাজের সকল স্তরের মানুষ, বিশেষ করে নারীরা, প্রাথমিক পর্যায়ে স্তন ক্যান্সার শনাক্ত ও প্রতিরোধে সচেতন হতে পারে।
এই উদ্যোগের প্রধান লক্ষ্য হলো মেয়েদের স্তন ক্যান্সার সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং প্রাথমিক শনাক্তকরণ ও প্রতিরোধে সহায়ক ভূমিকা রাখা, যাতে নারীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষিত ও সুস্থ থাকে। স্বাস্থ্য সচেতন একটি ভবিষ্যৎ প্রজন্ম গড়ে উঠে।
আরও পড়ুন কম বয়সীদের ক্যানসার হওয়ার প্রবণতা ৮০ শতাংশ বেড়েছে!