22 C
Dhaka
মঙ্গলবার, ডিসেম্বর ৩, ২০২৪
বিজ্ঞাপন

ভারতে পালিয়ে বেকায়দায় আওয়ামী লীগের নেতারা

ভারতে পালিয়ে গিয়ে বেকায়দায় পড়েছেন আওয়ামী লীগের নেতারা। পড়েছেন তিন ধরনের সংকটে। পালানোর সময় সঙ্গে করে নেয়া টাকা প্রায় ফুরিয়ে গেছে। তাই দেশে থাকা আত্মীয়স্বজনের কাছ থেকে টাকা নিতে হচ্ছে। পলাতক অনেকের কাছেই নেই পাসপোর্ট। এ ছাড়াও কারও কারও ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে ইতিমধ্যে। এই তিন সংকট তাদের জন্য বড় ধরনের অস্বস্তি তৈরি করেছে।

গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর আওয়ামী লীগের শীর্ষস্থানীয় অনেক নেতা, সাবেক মন্ত্রী-এমপি অবৈধভাবে দেশ ছেড়েছেন। আইনি প্রক্রিয়ার বাইরে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে দেশত্যাগের এই প্রক্রিয়া এখনও অব্যাহত রয়েছে।

৫ লাখ থেকে ২ কোটি টাকায় রফা
অবৈধ পথে ভারতে যাওয়ার বেলায় সিলেটের কানাইঘাট, কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া, হবিগঞ্জ, ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট, নেত্রকোনা, দিনাজপুরের হিলি, যশোরের বেনাপোল, পঞ্চগড়ের বাংলাবান্ধা ও লালমনিরহাটের দহগ্রাম সীমান্ত ব্যবহৃত হচ্ছে। সীমান্ত পার হওয়ার পর ভারতের কলকাতা, আগরতলা, ত্রিপুরা, দিল্লি, আসাম ও মেঘালয় রাজ্যে অবস্থান নিয়েছেন তারা।

সীমান্ত পার হতে জনপ্রতি ৫ লাখ থেকে ২ কোটি টাকা দিতে হচ্ছে দুই দেশের দালালদের। অনেকের কাছে থাকা বড় অঙ্কের টাকা কেড়ে নিচ্ছে দালাল চক্র। সাবেক বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক ভারতে পালাতে গিয়ে স্থানীয় লোকজনের হাতে ধরা পড়েন। এ সময় তাঁর কাছে থাকা ৬০-৭০ লাখ টাকা নিয়ে যায় দালালরা। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় গত ১২ সেপ্টেম্বর গ্রেপ্তার হন সাবেক এমপি এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী। তিনি প্রায় ২ কোটি টাকার বিনিময়ে ভারতে যাওয়ার রফা করেছিলেন বলে জানা গেছে।

ভারতে কেমন আছেন নেতারা?
ভারতে পালিয়ে থাকা মন্ত্রীদের তালিকা বেশ দীর্ঘ। ভারতের বিভিন্ন জায়গায় প্রকাশ্যে দেখা গেছে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক স্থানীয় সরকার মন্ত্রী তাজুল ইসলাম, সাবেক বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাবেক মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী আব্দুর রহমান, সাবেক কৃষিমন্ত্রী উপাধ্যক্ষ ড. আব্দুস শহীদ, সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, সাবেক বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু, রাজশাহীর মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন এবং কুমিল্লার সাবেক মেয়র তাহসিন বাহার সূচনাকে।

আত্মগোপনে থাকা এই নেতাদের ভাষ্য, তাদের পাসপোর্ট বা ভিসা না থাকলেও সে দেশে চলাচল করতে কোন সমস্যা হচ্ছে না। তারা ভারতের নাগরিকদের মতোই অবাধে চলাফেরার সুযোগ পাচ্ছেন। তাদের কয়েকজন দলগতভাবে আবাসিক হোটেলে থাকছেন। কেউ থাকছেন একা, ফ্ল্যাটে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, তাহলে কি ভারত প্রশাসন এসব দেখেও দেখছে না?

নেতারা অবৈধ পথে দেশ ছাড়ায় ইমিগ্রেশন বিভাগের নথিতে কারোরই দেশত্যাগের তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে বেশির ভাগই ভারতে গেছেন তার প্রমান মিলেছে। ভারতে আত্মগোপনে থাকা নেতারা আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলে অর্থ পাঠানোর অনুরোধ করছেন। তারা হুন্ডি করে টাকা পাঠাচ্ছেন ভারতে। তা ছাড়া পরিচিতদের মধ্যে যারা চিকিৎসার জন্য ভারতে যাচ্ছেন, তাদের মাধ্যমেও টাকা পাঠানো হচ্ছে।

এখনো খোঁজ নেই ওবায়দুল কাদেরের
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এখনো কোনো খোঁজ নেই। কেউ কেউ বলছে, সরকার পতনের পর ওবায়দুল কাদেরের অবস্থান ছিল যশোরে। সেখান থেকে তিনি অবৈধ প্রক্রিয়ায় ভারত গেছেন। কেউ বলছে, দুবাই কিংবা সিঙ্গাপুরে আছেন। আবার কারও কারও ধারণা, ওবায়দুল কাদের পালানোরই সুযোগ পাননি, তবে কি তিনি দেশেই আছেন?

বিজ্ঞাপন

আরও পড়ুন

বিজ্ঞাপন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

বিশেষ প্রতিবেদন