টানা ৬ কার্যদিবস পর আজ ১০ সেপ্টেম্বর দেশের শেয়ারবাজারে সূচক বেড়েছে। কিন্তু দৈনিক লেনদেন ও হাতবদলের শেয়ার সংখ্যা কমেছে। তবে যেভাবে সূচকের বৃদ্ধি পেয়েছে সেই অনুযায়ী বাড়েনি শেয়ার দর। সারাদিনেই বিতর্কিত ও গেম্বলিং শেয়ারের দর বৃদ্ধি ছিলো চোখে পড়ার মতো।
খান ব্রাদার্স, নর্দান জুট, খুলনা প্রিন্টিং অ্যান্ড প্যাকেজিং, গ্লোবাল হেভি ক্যামিকেল, ইয়ানিক পলিমার, জুট স্পিনার্সসহ বেশকিছু উৎপাদনহীন, স্বল্প মূলধনী ও দুর্বল মৌলভিত্তি সম্পন্ন কোম্পানিগুলোর শেয়ার দর বৃদ্ধিতে আজ শীর্ষ ভূমিকা পালন করেছে।
অন্যদিকে ১০ ব্যাংক দেউলিয়া হওয়ার পথে রয়েছে- বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্নরের এমন বক্তব্যের পর ব্যাংকখাতে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। এছাড়া ভালো মৌলভিত্তির কোম্পানিগুলোতে রাজনৈতিক ইস্যুতে বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ দেখা যাচ্ছে না। অর্থাৎ কোম্পানির মৌলভিত্তি স্ট্রং হওয়া স্বত্ত্বেও আওয়ামী লীগের সঙ্গে কোন না কোনভাবে সম্পৃক্ততা থাকলেই বিনিয়োগকারীরা সেসব কোম্পানিতে সতর্কতা অবলম্বন করছেন।
তারওপর বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চলমান তদন্ত বড় বড় ব্যক্তি ও প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের আতঙ্কের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এছাড়া ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশ (আইসিবি) সামগ্রিক পুঁজিবাজারের মঙ্গলের চেয়ে নিজের সুবিধাটাই বড় করে দেখছে। যে কারণে বর্তমান শেয়ারবাজারের উত্থান-পতনে আইসিবি মূল ভূমিকা পালন করছে বলে মনে করছেন বাজার বিশেষজ্ঞরা।
জানা যায়, আজ ১০ সেপ্টেম্বর ডিএসই’র ব্রড ইনডেক্স আগের দিনের চেয়ে ১.৩০ শতাংশ বা ৭৩.২৯ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ৫ হাজার ৭০২.৮৩ পয়েন্টে। আর ডিএসই শরিয়াহ সূচক ২০.২৫ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ১ হাজার ২৩৫.৩৫ পয়েন্টে এবং ডিএসই–৩০ সূচক ২২.২২ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ২ হাজার ১১৪.৭৪ পয়েন্টে। দিনভর লেনদেন হওয়া ৩৯৬টি কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ২৭৩টির, কমেছে ৭৬টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৪৭টির। অর্থাৎ পুঁজিবাজারে আজ ৬৮.৯৪ শতাংশ শেয়ারের দর বেড়েছে। সারাদিনে ডিএসইতে ১৪ কোটি ৭০ লাখ ৮৬ হাজার ৯৬৮টি শেয়ার ১ লাখ ৫৭ হাজার ৬০০ বার হাতবদল হয়েছে। আর দিন শেষে লেনদেন হয়েছে ৫২৬ কোটি ৭২ লাখ ৩৪ হাজার টাকা।
গত কার্যদিবসে অর্থাৎ ৯ সেপ্টেম্বর ডিএসই’র ব্রড ইনডেক্স আগের দিনের চেয়ে ০.৮৮ শতাংশ বা ৪৯.৭৭ পয়েন্ট কমে অবস্থান করেছিল ৫ হাজার ৬২৯.৫৪ পয়েন্টে। আর ডিএসই শরিয়াহ সূচক ৬.২৭ পয়েন্ট কমে অবস্থান করেছে ১ হাজার ২১৫.১১ পয়েন্টে এবং ডিএসই–৩০ সূচক ৬.৬৭ পয়েন্ট কমে অবস্থান করেছে ২ হাজার ৯২.৫২ পয়েন্টে। দিনভর লেনদেন হওয়া ৩৯৯টি কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বৃদ্ধি পায় ৬৭টির, কমে ৩০৭টির এবং অপরিবর্তিত রয় ২৫টির। অর্থাৎ পুঁজিবাজারে গত কার্যদিবসে ১৬.৭৯ শতাংশ শেয়ারের দর বৃদ্ধি পেয়েছিল। এদিন ডিএসইতে ১৮ কোটি ৬৬ লাখ ৯৭ হাজার ৩২টি শেয়ার ১ লাখ ৬৮ হাজার ১২৭ বার হাতবদল হয়। আর দিন শেষে লেনদেন হয় ৬২১ কোটি ৩৫ লাখ ৬৮ হাজার টাকা।
সে হিসেবে লেনদেন কমেছে ৯৪ কোটি ৬৩ লাখ ৩৪ হাজার টাকা।
এদিকে আজ দিন শেষে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সাধারণ মূল্য সূচক সিএএসপিআই ০.৩৯ শতাংশ বা ৬২.৭২ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করেছে ১৬ হাজার ১২৭.৪০ পয়েন্টে। দিনভর লেনদেন হওয়া ২২৭টি কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ৯৬টির, কমেছে ১০০টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৩১টির। আজ দিন শেষে সিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৫ কোটি ৭৮ লাখ ৮৬ হাজার ৪৯৩ টাকা।