নাট্যকার ও চলচ্চিত্রকার মোস্তফা সরয়ার ফারুকী লিখেছেন, আমি আর আরিফ আর হোসাইন সেই ২০১২ সালে আলাপ করতাম, কীভাবে সরকারকে হটানো যায়। বিনোদন অঙ্গনের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে জড়িত এই নির্মাতা দায়িত্ব পেয়েছেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের। শপথ নেওয়ার পরই তার পুরোনো কিছু ফেসবুক পোস্ট সামনে টেনে এনেছেন নেটিজেনদের অনেকে। সেসব তুলে ধরে ফারুকীকে বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের ‘দোসর’ তকমা দেওয়া হচ্ছে।
আজ মঙ্গলবার রাতে সে প্রসঙ্গে ব্যাখ্যা দিয়েছেন ফারুকী। সেখানে আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে তার অবস্থান স্পষ্ট করেছেন তিনি। তার দাবি, ২০১২ সাল থেকেই এই সরকারের পতন চেয়েছেন তিনি।
ওই পোস্টে ফারুকী লিখেছেন, ‘মাত্র দুই দিন হলো কাজ করছি। এর মধ্যে আমার ধারণা, আমার মন্ত্রণালয়ে সহকর্মীদের মাঝে এই ধারণা দিতে পেরেছি যে আমরা কিছু দৃশ্যমান পরিবর্তন ঘটাতে চাই। যেটা স্বল্প এবং দীর্ঘমেয়াদে আমাদের সংস্কৃতি কর্মীদের কাজে আসবে। যাই হোক, যদিও আমি কোনও পদ চাই নাই, তবুও দায়িত্বটা নেয়ার পর আমি আমার সর্বোচ্চ দিয়ে করার চেষ্টা করছি।’
তিনি লিখেছেন, ‘কিন্তু এর মধ্যে আমাকে মুখোমুখি হতে হয়েছে এক অবিশ্বাস্য অভিযোগের! আমি নাকি ফ্যাসিস্টের দোসর! যেই ফ্যাসিস্টকে তাড়ানোর জন্য জীবনের সবচেয়ে বড় ঝুঁকি নিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পাশে দাঁড়ালাম ১৬ জুলাই থেকে, অল আউট অ্যাটাকে গেলাম এটা জেনে যে ফ্যাসিস্ট হাসিনা টিকে গেলে আমার জন্য অপেক্ষা করছে মৃত্যু অথবা জেল, আমি তারই সহযোগী?’
তিনি লিখেন, চেয়ারের জন্য কোনো সাফাই দেওয়ার প্রয়োজন মনে করছি না। কিন্তু শিল্পী হিসাবে অপমানিত বোধ করেছি বলেই কয়টা কথা বলছি।
২০১৪ সালে, এই দুইটা লেখার যে কোনো একটা লেখা ছাপা হওয়ার পর বিএনপির শিমুল বিশ্বাস সাহেব ফোন দিয়েছিলেন কৃতজ্ঞতা জানানোর জন্য। আমি কোনো দল করি না। কিন্তু আমি আওয়ামী লীগ হলে বিএনপির একজন সিনিয়র নেতা আমার লেখায় কি খুঁজে পেলেন যে আমার সাথে পরিচয় না থাকা স্বত্বেও আমার নম্বর জোগাড় করে ফোন দিলেন?
আমি ঘটনাচক্রে একজন পরিচিত মুখ, ভাই ও বোনেরা। একজন লেখক যতোটা স্বাধীন ভাবে লিখতে পারেন, ফ্যাসিবাদের কালে আমার সেই স্বাধীনতা পাওয়ার সুযোগ ছিল না। তার মধ্যেও যতটুকু করেছি তার ফলও আমাকে ভোগ করতে হয়েছে। ২০১৫ সালে সেন্ট্রাল ইনভেস্টিগেশন সেলের হেনস্তার শিকার হওয়ার মধ্যে যে দীর্ঘ অত্যাচারের শুরু। সেই বিস্তারিত বর্ণনা দিয়ে আমার সিমপ্যাথি পাওয়ার ইচ্ছা এবং প্রয়োজন নাই।