অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টাদের আশ্বাসে হাসপাতালে ফিরেছেন বিক্ষোভরত ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আহত ব্যক্তিরা।
গভীর রাতে চার উপদেষ্টা যাওয়ার পর অবশেষে সড়ক ছেড়ে ফেরেন তারা। সুচিকিৎসা ও পুনর্বাসনের দাবিতে নিটোরের সামনের সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করছিলেন তারা।
সরকারের ভূমিকায় ক্ষুব্ধ হয়ে বুধবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার পর বিছানাপত্র নিয়ে রাজধানীর জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানের (পঙ্গু হাসপাতাল) সামনের সড়কে অবস্থান করার ঘোষণা দেন আহতরা। এই বিক্ষুব্ধ ব্যক্তিদের কারও এক পা নেই, কেউ কেউ হুইলচেয়ারে, আবার কারও চোখে ব্যান্ডেজ দেখা গেছে।
পরে রাত আড়াইটার দিকে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে দেখা করতে যান আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার, স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া, উপদেষ্টা মাহফুজ আলম এবং প্রতিমন্ত্রী পদমর্যাদায় সহকারী (স্বাস্থ্য) হিসেবে দায়িত্বপ্রাপ্ত মো. সায়েদুর রহমান।
উপদেষ্টারা ভুল স্বীকার ও দুঃখপ্রকাশ করেন। তাঁরা আহতদের দাবি–দাওয়া নিয়ে আলোচনার জন্য বৃহস্পতিবার দুপুর ২টায় সচিবালয়ে বৈঠকে বসার কথা বলেন। আহতদের প্রতিনিধি দলের যাওয়ার জন্য দুটি গাড়ি পাঠাবেন বলে জানান। আহতদের চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের জন্য একটি রূপরেখা তৈরি করে ডিসেম্বরের মধ্যে তা বাস্তবায়নের ঘোষণা দেন।
হাসপাতালে আগে যা হয়েছিলো
গত জুলাই–আগস্টে সরকারবিরোধী আন্দোলনের সময় আহত হওয়া ব্যক্তিদের এই ক্ষোভ–বিক্ষোভের শুরু হয় স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নুরজাহান বেগমের পঙ্গু হাসপাতাল পরিদর্শনকে কেন্দ্র করে। জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে আহত ব্যক্তিদের দেখতে সকালে তিনি পঙ্গু হাসপাতালে যান। তাঁর সঙ্গে ছিলেন ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক। স্বাস্থ্য উপদেষ্টা সবার সঙ্গে দেখা করেননি—এ অভিযোগে হাসপাতাল থেকে বেরোনোর সময় তাঁর পথ আটকে বিক্ষোভ করেন আহত ব্যক্তিরা। পরে তাঁরা রাস্তায় নামেন।
দেখুন: আহতদের দেখতে গিয়ে তোপের মুখে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা
সন্ধ্যার পর প্রথম দফায় ঘটনাস্থলে যান বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ। জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে আন্দোলনে নিহত মীর মাহফুজুর রহমান মুগ্ধের ভাই মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধও বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে কথা বলতে যান। তবে তাঁদের অনুরোধে আহত ব্যক্তিরা রাস্তা ছাড়েননি। একপর্যায়ে তাঁরা সেখান থেকে চলে আসেন।
হাসনাত আবদুল্লাহ রাত ১২টার আগে আবার ঘটনাস্থলে যান। এ সময় তাঁর সঙ্গে থাকা দুজনের সঙ্গে আহত কয়েকজনের ধাক্কাধাক্কির ঘটনা ঘটে। তবে অল্প কিছুক্ষণের মধ্যেই তা শান্ত হয়।