29 C
Dhaka
শনিবার, মার্চ ১৫, ২০২৫

রাতের আঁধারে শিক্ষার্থীর বাড়িতে ইউএনও

এসএসসি, দাখিল ও সমমান পরীক্ষা উপলক্ষে শিক্ষার্থীদের খোঁজখবর নিতে রাতের আঁধারে শিক্ষার্থীদের বাড়িতে যাচ্ছেন মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) প্রীতম সাহা। শিক্ষার জন্য নিবেদিত এ প্রশাসনিক কর্মকর্তা ঘরে ঘরে শিক্ষার আলো জ্বালাতে নিজের দায়িত্ববোধ থেকে ছুটে চলেছেন উপজেলার এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই প্রীতম সাহা শুধু প্রশাসনিক কাজেই সীমাবদ্ধ থাকেননি, বরং উপজেলায় শিক্ষার মানোন্নয়ন ও সচেতনতা বৃদ্ধিতে গ্রহণ করেছেন একাধিক ব্যতিক্রমী কার্যক্রম। তারই অংশ হিসেবে তিনি শুরু করেছেন ‘সান্ধ্যকালীন হোম ভিজিট’ কার্যক্রম।

মার্চ মাসের শুরু থেকেই প্রতিদিন রাত ৮টা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত তিনি উপজেলার বিভিন্ন এলাকার এসএসসি ও দাখিল পরীক্ষার্থীদের বাড়িতে যাচ্ছেন। উদ্দেশ্য একটাই—পরীক্ষার্থীদের পড়াশোনায় মনোযোগী করে তোলা, সঠিকভাবে প্রস্তুতি নিচ্ছে কি না তা পর্যবেক্ষণ এবং অভিভাবকদের সঙ্গে সরাসরি মতবিনিময় করা।

হোম ভিজিটকালে ইউএনও প্রীতম সাহা শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলেন, তাদের পরীক্ষার প্রস্তুতির খোঁজ নেন এবং প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা প্রদান করেন। তিনি অভিভাবকদেরও পরামর্শ দেন কীভাবে সন্তানদের আরও ভালোভাবে পড়াশোনায় মনোযোগী করা যায়। এছাড়াও পরীক্ষার্থীদের মাঝে বিতরণ করছেন প্রয়োজনীয় শিক্ষা উপকরণ ও উপহার সামগ্রী, যা শিক্ষার্থীদের অনুপ্রেরণার উৎস হিসেবে কাজ করছে।

এমন একটি উদ্যোগে অভিভাবকদের মধ্যে স্বস্তি ও সন্তুষ্টি প্রকাশ পেয়েছে। তারা বলছেন, একজন প্রশাসনিক কর্মকর্তার এমন সরাসরি সম্পৃক্ততা নিঃসন্দেহে শিক্ষাক্ষেত্রে ইতিবাচক পরিবর্তন আনবে।

একজন অভিভাবক বলেন, “ইউএনও স্যার আমাদের বাসায় এসে সন্তানদের পড়ালেখার খোঁজ নিয়েছেন, এটা আমাদের জন্য খুব গর্বের ও আনন্দের। এতে আমরা যেমন উৎসাহিত হয়েছি, তেমনি সন্তানরাও আরও মনোযোগী হচ্ছে।

একজন শিক্ষার্থী জানায়, ইউএনও স্যারের উপহার এবং উৎসাহে আমরা অনেক অনুপ্রাণিত হয়েছি। এখন পড়াশোনায় আরও মনোযোগ দিচ্ছি।

গাংনী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার হোসনে মোবারক বলেন, দীর্ঘ অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, ইউএনও মহোদয়ের এই উদ্যোগ নিঃসন্দেহে শিক্ষাক্ষেত্রে নতুন উদ্দীপনা সৃষ্টি করেছে। তার সান্ধ্যকালীন হোম ভিজিট কার্যক্রম অত্যন্ত প্রশংসনীয় ও গ্রহণযোগ্য।

ইউএনও প্রীতম সাহা বলেন, “আমাদের লক্ষ্য শুধু প্রশাসনিক দিক নয়, শিক্ষাক্ষেত্রেও একটি ইতিবাচক পরিবর্তন আনা। এই উদ্যোগের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মনিটরিং, উৎসাহ প্রদান এবং শিক্ষার প্রতি মনোযোগ বৃদ্ধিই আমাদের উদ্দেশ্য। আমাদের শিক্ষার্থীরা যদি বইমুখী হয়, নিয়মিত পড়াশোনা করে, তাহলে তারা ভবিষ্যতে আরও ভালো করবে। এ কার্যক্রম চলমান থাকবে এবং ভবিষ্যতে আরও সম্প্রসারিত হবে।”

গাংনী উপজেলার সচেতন মহল, অভিভাবক, শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ এলাকাবাসী এই ব্যতিক্রমী উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে বলছেন—এ রকম উদ্যোগ অব্যাহত থাকলে আগামী দিনে গাংনী উপজেলায় শিক্ষার মান উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পাবে।

পড়ুন: রাতের শবে বরাতের মিষ্টিমুখ: মুখরোচক কাপ সেমাইয়ের ক্ষীর রেসিপি

দেখুন: রাতের রহস্যময় এক গ্রাম- সকালে দৃশ্যমান রাতে গায়েব 

ইম/

বিজ্ঞাপন

আরও পড়ুন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

বিশেষ প্রতিবেদন