২০১২ সালে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে বসবাসকারী কয়েক লাখ রোহিঙ্গাকে তাদের বসতভিটা থেকে উচ্ছেদ করে আশ্রয় শিবিরে বসবাসে বাধ্য করে দেশটির সেনাবাহিনী। এর ৫ বছর পর ২০১৭ সালের আগস্টে মিয়ানমারের রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর দমন-পীড়নের মাত্রা বাড়ানো হয়, বৈশ্বিক গণমাধ্যমে যাকে তুলনা করা হয় জাতিগত নিধন হিসেবে। সেসময় রাখাইন অঙ্গরাজ্য থেকে বিতাড়িত হয়ে প্রতিবেশী বাংলাদেশের কক্সবাজার জেলার টেকনাফ ও উখিয়া উপজেলায় আশ্রয় নেয় প্রায় ৭ লাখ রোহিঙ্গা, যার ৬ লাখ এখনো সেখানে অবস্থান করছে। কক্সবাজার থেকে বেশ কয়েকবার রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠানোর উদ্যোগ নেওয়া হলেও তা ভেস্তে যায় মিয়ানমারের অনীহার কারণে।
সম্প্রতি নিজ ভূমি থেকে বিতাড়িত সেই রোহিঙ্গাদের কাছেই বিদ্রোহীদের বিপক্ষে যুদ্ধে সাহায্য চাইছে দেশটির সামরিক সরকার।
ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসির সাংবাদিকের সঙ্গে সম্প্রতি কথা হয়েছে রাখাইন রাজ্যের কয়েকজন রোহিঙ্গার সঙ্গে। বিবিসি নিশ্চিত হয়েছে, কমপক্ষে ১শ রোহিঙ্গাকে সম্প্রতি মিয়ানমারের সেনাদের পক্ষে যুদ্ধ করার জন্য ভাড়া করা হয়েছে। এসব রোহিঙ্গার নিরাপত্তায় তাদের নাম পরিবর্তন করা হয়েছে।
নিজ দেশে ভাড়াখাটা রোহিঙ্গা ৩১ বছর বয়সের মোহাম্মদ। ৩ সন্তান নিয়ে তিনি থাকছেন রাখাইনের রাজধানী সিত্তেতের একটি ক্যাম্পে। মোহাম্মদ জানিয়েছেন, তিনি ভয় পাচ্ছিলেন, তবুও তাকে যেতে হয়েছে। তিনি জানিয়েছেন, ‘‘ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝিতে গভীর রাতে ক্যাম্পের প্রধান তাকে মিয়ানমারের সেনাদের পক্ষে যুদ্ধ করতে হবে বলে জানান। তাকে বলা হয়, ‘‘এটা সেনাবাহিনীর আদেশ। অস্বীকার করলে পরিবারের ক্ষতি হবে।’’
বর্তমানে মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের কোনো নাগরিকত্ব নেই। নিজস্ব সম্প্রদায়ের বাইরে যাওয়ার সুযোগ নেই এ গোষ্ঠীর।