ভারতের ১৮তম লোকসভা নির্বাচনে দেশটির গুজরাট প্রদেশের সুরাট আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী হয়েছেন ভারতীয় জনতা পার্টি-বিজেপির প্রাথী মুকেশ দালাই। ওই আসনের মনোনয়নপত্রে প্রতিদ্বন্দ্বি কংগ্রেস প্রার্থীর স্বাক্ষরে মিল না পাওয়ায় তাকে নির্বাচন থেকে অযোগ্য ঘোষণা করা হয়েছে। দেশটির নির্বাচন কমিশন থেকে জানানো হয়েছে, বিজেপির প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিল এবং অন্যান্য প্রার্থী নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোয় বিজেপির প্রার্থীর কোন প্রতিদ্বন্দ্বি ছিলো না।
প্রায় ১.৪ বিলিয়ন জনসংখ্যার বিশ্বের সবচেয়ে বড় গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে পরিচিত ভারতের আইনসভার নিম্নকক্ষ লোকসভার ৫৪৩ সদস্য নির্বাচনে দেশটির ৯৭০ মিলিয়ন ভোটার এবার ভোট দেবেন যা জনসংখ্যার বিচারে বিশ্বের ১০ শতাংশেরও বেশি। লোকসভার সদস্যরা পরবর্তি ৫ বছরের জন্য দায়িত্ব পালন করবেন। জুনের ৪ তারিখ ভোট গণনা হবে। ভারতের মোট রাজ্য রয়েছে ২৮টি। ১৯ এপ্রিল প্রথম দফা ভোটে ১৬৬.৩ মিলিয়ন ভোটারের মধ্যে ৬২ শতাংশ ভোটার ভোট দেন।
প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনে ৭ ধাপের লোকসভা নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপের ভোট হয় ২৬ এপ্রিল। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে দেশটির গণতান্ত্রিক নির্বাচনের ইতিহাসে সর্বোচ্চ ৬৭.১১ শতাংশ ভোট পড়ে।
নির্বাচনে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের কেউ কেউ এগিয়ে রাখছেন বিজেপির নেতা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস ডেইলিতে ভারতের একজন রাষ্ট্রবিজ্ঞানী প্রতাপ ভানু মেহতা জানিয়েছেন, ‘‘নির্বাচনের ফল সম্পর্কে আগাম ধারণা তৈরি হওয়ায় ভোট নিয়ে ভোটারদের মধ্যে আগ্রহ কম, এমনকি ৪০০ আসন পাওয়ার প্রত্যাশী মোদির পার্টির মধ্যে আনন্দ নেই।
মোদির সমালোচকরা বলেছেন, বিজেপি ক্ষমতায় আসার পর ভারতের বৈচিত্র্যপূর্ণ ঐতিহ্য এবং ধর্মনিরপেক্ষতা হুমকিতে পড়েছে। বিজেপি ধর্মীয় অসহিষ্ণতা এবং সংঘর্ষের পেছনে ইন্ধন জুগিয়ে যাচ্ছে। যদিও বিজেপি মনে করে, তাদের নীতি ভারতের সব মানুষের জন্য লাভজনক।
২১ এপ্রিল ভারতের রাজস্থানে একটি নির্বাচনী সভায় নরেন্দ্র মোদির মুসলিমবিদ্বেষী এক বক্তব্য ঘিরে সপ্তাহজুড়েই সমালোচনা হয়েছে। ওই জনসভায় মোদি তার পূর্বসূরি কংগ্রেস নেতা মনমোহন সিং এর বক্তব্য টেনে বলেন, ‘‘ তিনি বলেছেন দেশের সম্পদে প্রথম অধিকার রয়েছে মুসলিমদের।’’ মোদি বলেন, ‘‘এর অর্থ তারা সম্পদ তাদের মধ্যে বন্টন করে দেবেন যাদের অনেক সন্তান রয়েছে এবং যারা অনুপ্রবেশকারী।’’ ২০১৪ এবং ২০১৯ সালে দুই দফায় লোকসভা নির্বাচনে জয়ী হয়ে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন মোদি। এ নিয়ে তৃতীয় মেয়াদের জন্য লড়ছেন তিনি।