অস্ট্রিয়ায় নিযুক্ত ইসরায়েলি রাষ্ট্রদূত ডেভিড রোয়েট ফিলিস্তিনের গাজা ভূখণ্ডে ‘বন্দুক’ বা ‘গ্রেনেড’ ধরার জন্য ফিলিস্তিনি শিশুদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের পরামর্শ দিয়েছেন। তিনি ইনসব্রুকে ইহুদি সম্প্রদায়ের সাথে এক রুদ্ধদ্বার বৈঠকে এই বিতর্কিত প্রস্তাব উত্থাপন করেন। তবে, তিনি গাজার অস্ত্র বহন করার কোনো প্রমাণ দিতে পারেননি। এই তথ্যটি সম্প্রতি গোপনে রেকর্ড করা একটি ভিডিও ফাঁস হওয়ায় প্রকাশ পায়।
ভিডিওটিতে দেখা যায়, রোয়েট আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উদ্বেগকে উড়িয়ে দিয়ে বলেন, “আপনি বিশ্বাস করছেন যে ইসরায়েল ইচ্ছাকৃতভাবে শিশুদের লক্ষ্যবস্তু করছে, যা সঠিক নয়।” এই মন্তব্যের পর তার সমালোচনায় শোরগোল সৃষ্টি হয়েছে, কারণ ইসরায়েলি বাহিনী দীর্ঘদিন ধরেই গাজা উপত্যকায় বেসামরিক নাগরিকদের বিরুদ্ধে হামলা চালাচ্ছে, যার মধ্যে মৃত্যুও অন্তর্ভুক্ত।
২০২৩ সালের অক্টোবরে শুরু হওয়া গাজা যুদ্ধের পর থেকে জাতিসংঘের শিশু-বিষয়ক তহবিল (ইউনিসেফ) জানায়, ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় গাজায় সাড়ে ১৪ হাজারেরও বেশি নিহত হয়েছে। বর্তমানে এই সংখ্যা বেড়ে ১৫ হাজার ৬১৩ জনে দাঁড়িয়েছে। এই পরিস্থিতি, যেখানে প্রাণহানি অব্যাহত, ইসরায়েলি রাষ্ট্রদূতের মন্তব্য আরও বিতর্কিত করে তোলে।

ভিডিওটি ফাঁসকারী এক অজ্ঞাত কর্মী জানিয়েছে, রোয়েট যখন শিশুদের মৃত্যুদণ্ডের পরামর্শ দেন, তার কণ্ঠস্বর ছিল অবিশ্বাস্যভাবে শান্ত।
“এটা আমাকে ভাবতে বাধ্য করে যে, যখন কিছু ক্ষমতাধর ব্যক্তি যুদ্ধাপরাধের পরামর্শ দেন, তখন বিষয়টি কতটা কলুষিত হয়ে যায়,” বলেন তিনি।
এছাড়া, গত ১৮ মার্চ, গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীর যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘনের দুদিন পর রেকর্ড করা এই ভিডিওটি প্রকাশ পায়। এই হামলার পর গাজার পরিস্থিতি আরও নাজুক হয়ে ওঠে, যেখানে হাজার হাজার মানুষ বেসামরিক জীবন হারাচ্ছে।
মিডল ইস্ট মনিটর এবং মিডল ইস্ট আই রিপোর্টে জানানো হয়, ইসরায়েলি বাহিনী এবং আধাসামরিক বাহিনী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসের মধ্যে চলমান সংঘর্ষে ইতোমধ্যে বহু মানুষ নিহত হয়েছে এবং হাজার হাজার মানুষ আহত হয়েছে। সামরিক অভিযান এবং বিমান হামলাগুলোর কারণে বেসামরিক জীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে, এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এই সংঘাতের অবসান চেয়ে আসছে।
ফিলিস্তিন এবং ইসরায়েলি সরকারের মধ্যে দ্বন্দ্ব দীর্ঘদিন ধরে চলমান থাকলেও, ইসরায়েলের এই ধরণের বিতর্কিত মন্তব্য আন্তর্জাতিক মহলে ব্যাপক ক্ষোভ সৃষ্টি করেছে। এমন পরিস্থিতিতে, মৃত্যুদণ্ডের মতো প্রস্তাব মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগকেই আরও তীব্র করে তুলেছে।
পড়ুন: ফিলিস্তিনিদের জাবালিয়া ছাড়তে ‘চূড়ান্ত হুঁশিয়ারি’
দেখুন: লাখ লাখ ই/স/রা/ই/লি লুকিয়ে গেল |
ইম/