27.9 C
Dhaka
মঙ্গলবার, এপ্রিল ১৫, ২০২৫

শুল্ক নিয়ে আলোচনা করতে চায় বহু দেশ, দাবি ট্রাম্প প্রশাসনের

ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন শুল্ক ঘোষণার পর বিশ্বজুড়ে অর্থনৈতিক অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছে। ট্রাম্প প্রশাসন শুল্কের মাধ্যমে চীন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) এবং অন্যান্য দেশের সাথে যুক্তরাষ্ট্রের আর্থিক ঘাটতি কমানোর পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে। তার এই পদক্ষেপের পর থেকেই শেয়ার বাজারে ধস নেমেছে এবং অর্থনীতির বিভিন্ন খাতে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে।

ইউরোপীয় কমিশনের প্রধান উরসুলা ফন ডেয়ার লাইয়েন জানিয়েছেন, ইইউ ট্রাম্পের নতুন প্রতিক্রিয়ায় পাল্টা ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্রস্তুত। তিনি জানান, শুল্ক আরোপের পর ইইউ সমানুপাতিক হারে পাল্টা আরোপ করবে। আগামী সপ্তাহে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু ট্রাম্পের সঙ্গে সাক্ষাৎ করার সময় শুল্ক কমানোর আহ্বান জানাবেন বলে জানা গেছে।

শুল্ক আরোপের পক্ষে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প দাবি করেছেন, নতুন শুল্ক ব্যবস্থা যুক্তরাষ্ট্রের জন্য লাভজনক হবে। তিনি বলেন, “এই শুল্ক একটি সুন্দর জিনিস এবং এটি খুব দ্রুত পূর্বের প্রশাসনের সময়ের আর্থিক ঘাটতি মেটাবে।” তবে তার এই ঘোষণার পর, শেয়ার বাজারে একের পর এক পতন দেখা গেছে। বিশেষত, ওয়াল স্ট্রিটের সূচকগুলো তীব্র পতনে পড়েছে। নিউ ইয়র্ক স্টক এক্সচেঞ্জের সূচক ছিল নিম্নমুখী, এবং সোমবার বাজার খোলার সঙ্গে সঙ্গেই আরো বড় পতন ঘটবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ট্রাম্পের শুল্ক ঘোষণার পর মাত্র দুই দিনে এসঅ্যান্ডপি ৫০০ সূচক ১০ দশমিক ৫ শতাংশ পড়েছে, যা মার্চ ২০২০ সালের পর সর্বোচ্চ পতন।

বিশ্বজুড়ে শেয়ার বাজারে তীব্র ধস দেখা যাচ্ছে। সৌদি আরবের সূচক ৮০০ পয়েন্ট পড়ে সাত শতাংশ কমে গেছে, যা তাদের জন্য একটি বড় ধাক্কা। ডিসেম্বরে রেকর্ড উচ্চতায় যাওয়ার পর নাসডাক সূচকও প্রায় ২০ শতাংশ কমে গেছে। এই অবস্থায় বাজারের ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হচ্ছে। কেউ কেউ মনে করছেন শেয়ার বাজার স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসবে, তবে অনেক বিশ্লেষক আশঙ্কা করছেন, শেয়ার বাজারের এই পতন আরো কিছুদিন ধরে চলতে থাকবে।

ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী কিয়ের স্টারমার বলেছেন, “পরিচিত পৃথিবীর দিন শেষ।” তিনি দাবি করেন, ট্রাম্পের আরোপের ফলে বিশ্বব্যাপী মূলগত পরিবর্তন আসতে যাচ্ছে। তিনি বলেন, “নতুন পৃথিবী প্রথাগত নিয়মের দ্বারা পরিচালিত হবে না, বরং নতুন জোট এবং চুক্তি দ্বারা পরিচালিত হবে।”

বিশ্বব্যাপী আরোপের পর একাধিক দেশ ট্রাম্পের সঙ্গে বাণিজ্য আলোচনা শুরু করেছে। হোয়াইট হাউসের জাতীয় অর্থনৈতিক পর্ষদের পরিচালক কেভিন হেসেট জানিয়েছেন, ৫০টির বেশি দেশ ইতিমধ্যেই যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সমঝোতা আলোচনার জন্য যোগাযোগ করেছে। তবে ট্রাম্প প্রশাসন এখনও এসব আলোচনা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করেনি।

তাইওয়ান এর মধ্যেপ্রত্যাহারের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের কাছে প্রস্তাব দিয়েছে এবং দেশটির প্রেসিডেন্ট লাই চিং-তে জানিয়েছে, তারা ব্যবসায়িক বাধাগুলো দূর করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। তবে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট বলেছেন, “বিশ্ব অর্থনীতিতে মন্দা আসবে না,” কারণ যুক্তরাষ্ট্রে চাকরির সুযোগ সৃষ্টির সংখ্যা প্রত্যাশার চেয়ে অনেক বেশি।

এই শুল্ক ব্যবস্থা বাস্তবায়নের পর,

বিশ্বজুড়ে বাণিজ্যযুদ্ধ এবং অর্থনৈতিক মন্দার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। অনেক বিশেষজ্ঞ মনে করছেন, ট্রাম্পের নতুন ব্যবস্থার প্রভাব শুধু অর্থনীতিতে নয়, বৈশ্বিক বাণিজ্য সম্পর্কেও দীর্ঘমেয়াদী পরিবর্তন আনবে।

পড়ুন : মার্কিন আরোপ : ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে চিঠি দেওয়া হবে ট্রাম্পকে

দেখুন : বাংলাদেশি পণ্যে ৩৭% আরোপ করলো যুক্তরাষ্ট্র | 

ইম/

বিজ্ঞাপন

আরও পড়ুন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

বিশেষ প্রতিবেদন