25 C
Dhaka
বৃহস্পতিবার, নভেম্বর ২১, ২০২৪
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন

শেয়ারবাজারের গলার কাঁটা ফোর্সসেল

সানি আহম্মেদ

শেয়ারবাজার উন্নয়নে গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে ফোর্সসেল। অনিয়ম-দুর্নীতি দূর করতে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) প্রশংসনীয় কাজ করলেও টানা দরপতনে নি:স্ব হয়ে পড়ছেন বিনিয়োগকারীরা।

বেশকিছু শীর্ষ সিকিউরিটিজ হাউজ ও মার্চেন্ট ব্যাংক তাদের নিজেদের টাকা তুলে নিতে মার্জিন অ্যাকাউন্টের শেয়ার জোরপূর্বক বিক্রি করে দিচ্ছেন। যাকে শেয়ারবাজারের ভাষায় ফোর্সসেল বলা হয়। আর এই ফোর্সসেলের কারণে শেয়ারবাজারে অতিরিক্ত বিক্রির চাপ পড়ছে। এতে পতন থেকে বের হতে পারছে না শেয়ারবাজার।

অন্যদিকে সিকিউরিটিজ হাউজ ও মার্চেন্ট ব্যাংকগুলো নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে বাধ্য হয়েই ফোর্সসেলের রাস্তা বেছে নিয়েছেন। তবে এর থেকে বের হতে প্রয়োজন নতুন বিনিয়োগ এবং যুগপোযোগী সিদ্ধান্ত।

তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, অন্তবর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর দেশের বিভিন্ন সেক্টরের সংস্কার কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়। যার থেকে বাদ যায়নি অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ অংশ শেয়ারবাজার। বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) নতুন পর্ষদ দায়িত্ব নেওয়ার পর শেয়ারবাজারের অনিয়ম-দুর্নীতির তদন্ত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

যার ফলশ্রুতিতে এখন পর্যন্ত ২৫ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে বিপুল পরিমাণ আর্থিক জরিমানা করা হয়। এছাড়া ৬০টি বিও (বেনিফিশিয়ারি ওনার্স) হিসাব জব্দ, ২৭ কোম্পানিকে ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে স্থানান্তর, ৯ কোম্পানির আইপিও এবং আরপিও ফান্ড ব্যবহার এবং ২৪ কোম্পানির অনিয়ম ও দর বৃদ্ধি নিয়ে তদন্ত করা হয়। যার নেতিবাচক প্রভাব পড়ে শেয়ারবাজারে।

তবে বেক্সিমকো গ্রুপের সালমান এফ রহমান এবং এসআলম গ্রুপ ও তাদের পরিবারের মালিকানাধীন কোম্পানি নিয়ে তদন্ত করার সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরই শেয়ারবাজারের অবস্থা আরও নাজুক হয়ে পড়ে। যার প্রভাব এখনো চলমান রয়েছে।

এদিকে যখনই শেয়ারবাজারে দরপতন হয় তখনই মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা হয়ে দাঁড়ায় মার্জিন ঋণ। যদি কোন বিনিয়োগকারী তার ট্রেডিং হাউজ থেকে শেয়ার কেনার ঋণ গ্রহণ করেন তখন বেশকিছু শর্তারোপ করা হয়।

নিয়মানুযায়ী, শেয়ারের বাজারমূল্য যদি গ্রহীত ঋণের ১২৫ শতাংশের নিচে নেমে যায় তখন বিনিয়োগকারীকে নগদ অর্থ জমা অথবা শেয়ার বিক্রির মাধ্যমে ঋণ সমন্বয় করতে হয়।

যদি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ঋণ সমন্বয় করতে ব্যর্থ হয় তাহলে বিনিয়োগকারীর শেয়ার জোরপূর্বক বিক্রি বা ফোর্সসেল করা হয়। এতে শেয়ারের ওপর অতিরিক্ত বিক্রির চাপ বেড়ে যাওয়ায় নেতিবাচক প্রভাব পড়ে শেয়ারবাজারে।

সাম্প্রতিক সময়ে শেয়ারবাজারে টানা পতনের নেপথ্যে রয়েছে এই ফোর্সসেল। মার্জিন ঋণের বিনিয়োগকারীদের শেয়ার জোরপূর্বক বিক্রি করার কারণে শেয়ারবাজার ঘুরে দাঁড়াতে পারছে না।

এ ব্যাপারে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো: রেজাউল করিম নাগরিককে জানান, “শেয়ারবাজারে উন্নয়ন করতে টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে। সেখানে পুরাতন মার্জিন রুলস যুগপোযোগী করার কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে অনেক ফোর্সসেল হয়ে গেছে। যদি মার্কেট ইতিবাচক থাকে তাহলে ফোর্সসেল কমে যাবে। তখন বিনিয়োগকারীরাও পুনরায় পারচেস পাওয়ার নিতে পারবেন। তবে বিএসইসি স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদে কাজ করছে। বিনিয়োগকারীরা খুব শিগগিরই এর ভালো প্রতিফলন দেখতে পারবেন।

বিজ্ঞাপন

আরও পড়ুন

বিজ্ঞাপন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

বিশেষ প্রতিবেদন