এমডি সানি আহম্মেদঃ শেয়ারবাজারকে স্থিতিশীল করতে ব্যর্থ হওয়ায় বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান ড. রাশেদ মাকসুদের পদত্যাগ চেয়েছেন বিনিয়োগকারীরা। আজ (বুধবার) ২ অক্টোবর ডিএসই মতিঝিল ভবনের সামনে নিয়ন্ত্রক সংস্থা চেয়ারম্যানের পদত্যাগ চেয়ে মানববন্ধন করেছেন বিনিয়োগকারীরা।
পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বেক্সিমকো লিমিটেডের শেয়ার কারসাজি ইস্যুতে অর্থদন্ডের নজির স্থাপন করেছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। শেয়ারবাজারের ইতিহাসে এমন জরিমানা (৪২৮ কোটি ৫২ লাখ টাকা) এর আাগে কখনো করা হয়নি। বিএসইসির এমন কঠোর হস্তক্ষেপে গোটা শেয়ারবাজারে আজ আতঙ্ক বিরাজ করছে।
শেয়ার ক্রয়-বিক্রয় এবং হস্তান্তরে দেশের সাতটি কোম্পানির নিষেধাজ্ঞা চেয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স সেলের মহাপরিচালক আহসান হাবিব স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এ নির্দেশনা দেওয়া হয়। চিঠিটি যৌথমূলধন কোম্পানি ও ফার্মসমূহের পরিদফতরের নিবন্ধক বরাবর পাঠানো হয়েছে।
কোম্পানিগুলো হলো– বসুন্ধরা গ্রুপ, ওরিয়ন গ্রুপ, সামিট গ্রুপ, বেক্সিমকো গ্রুপ, এস আলম গ্রুপ, নাসা গ্রুপের সব প্রতিষ্ঠান ও থার্ড ওয়েভ টেকনোলজিস লিমিটেড (নগদ)।
চিঠিতে বলা হয়েছে, ২০২৩ সালের আয়কর আইনের ২২৩ ধারার আওতায় এনবিআর কর ফাঁকি রোধে সম্পত্তির অন্তবর্তীকালীন অবরুদ্ধকরণ বা ক্রোকের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার ক্ষমতা সংরক্ষণ করে।
এ কারণ দেখিয়ে ‘জনস্বার্থে’ এসব কোম্পানির শেয়ার স্থানান্তর (কেনাবেচা ও দান) স্থগিত করার অনুরোধ জানানো হয়েছে যৌথমূলধনী কোম্পানি ও ফার্মসমূহের পরিদফতরে পাঠানো চিঠিতে।
চিঠিতে আরও বলা হয়– চলমান তদন্ত অনুযায়ী, এই কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে কর ফাঁকির অভিযোগসহ আর্থিক অনিয়মের বিষয়ে গুরুতর অভিযোগ রয়েছে।
বড় ব্যক্তি বিনিয়োগকারী ও প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা হাতে শেয়ার বিক্রি করে দিচ্ছেন। অন্যদিকে এতো বিপুল পরিমাণ শেয়ার কিনতে কেউই আগ্রহ দেখাচ্ছে না। দিনশেষে আরেকটি ধসের চিত্র দেখলো শেয়ারবাজার।
জানা যায়, ডিএসই’র ব্রড ইনডেক্স আগের দিনের চেয়ে ২ দশমিক ৩৭ শতাংশ বা ১৩২ দশমিক ২৯ পয়েন্ট কমে অবস্থান করেছে ৫ হাজার ৪৫৩ দশমিক ৯৯ পয়েন্টে। আর ডিএসই শরিয়াহ সূচক ৩২ দশমিক ৫২ পয়েন্ট কমে অবস্থান করেছে ১ হাজার ২১৯ দশমিক ৭১ পয়েন্টে এবং ডিএসই–৩০ সূচক ৫১ দশমিক ৩৩ পয়েন্ট কমে অবস্থান করেছে ১ হাজার ৯৮৮ দশমিক ০২ পয়েন্টে।
দিনভর লেনদেন হওয়া ৩৯৮ টি কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ২৯টির, কমেছে ৩৪৭টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ২২টি।
অর্থাৎ পুঁজিবাজারে আজ ৮ দশমিক ৩৬ শতাংশ শেয়ারের দর বেড়েছে। সারাদিনে ডিএসইতে ১৬ কোটি ৬৮ লাখ ৭৬ হাজার ৪০৪ টি শেয়ার ১ লাখ ৪২ হাজার ৫৯১ বার হাতবদল হয়েছে। আর দিন শেষে লেনদেন হয়েছে ৪৪০ কোটি ৮৩ লাখ ১২ হাজার টাকা।
গত কার্যদিবসে অর্থাৎ ৩০ সেপ্টেম্বর ডিএসই’র ব্রড ইনডেক্স আগের দিনের চেয়ে ০ দশমিক ৬৮ শতাংশ বা ৩৮ দশমিক ২২ পয়েন্ট কমে অবস্থান করেছিল ৫ হাজার ৫৮৬ দশমিক ২৯ পয়েন্টে। আর ডিএসই শরিয়াহ সূচক ১১ দশমিক ৫০ পয়েন্ট কমে অবস্থান করেছে ১ হাজার ২৫২ দশমিক ২২ পয়েন্টে এবং ডিএসই–৩০ সূচক ১৪ দশমিক ০১ পয়েন্ট কমে অবস্থান করেছে ২ হাজার ০৩৯ দশমিক ৩৫ পয়েন্টে। দিনভর লেনদেন হওয়া ৩৯৭টি কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বৃদ্ধি পায় ১০৫ টির, কমে ২৪৪টির এবং অপরিবর্তিত রয় ৪৮টির।
অর্থাৎ পুঁজিবাজারে গত কার্যদিবসে ২৬ দশমিক ৪৫ শতাংশ শেয়ারের দর বৃদ্ধি পায়। সারাদিনে ডিএসইতে ১৪ কোটি ৪৭ লাখ ২৩ হাজার ১৪১ টি শেয়ার ১ লাখ ৩১ হাজার ১৫৯ বার হাতবদল হয়। আর দিন শেষে লেনদেন হয় ৩৮৯ কোটি ৪৭ লাখ ৮৩ হাজার টাকা।সে হিসেবে আজ লেনদেন বেড়েছে ৫১ কোটি ৩৫ লাখ ২৯ হাজার টাকা।
এদিকে আজ দিন শেষে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সাধারণ মূল্য সূচক সিএএসপিআই ১ দশমিক ৯৬ শতাংশ বা ৩০৬ দশমিক ১৭ পয়েন্ট কমে অবস্থান করেছে ১৫ হাজার ২৯১ দশমিক ০৪ পয়েন্টে। দিনভর লেনদেন হওয়া ২১৬টি কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ২৪টির, কমেছে ১৭৭টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ১৫টির। আজ দিন শেষে সিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৫ কোটি ৯৬ লাখ ৪০ হাজার ৫১৪ টাকা।