বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে চলতি সপ্তাহের প্রথম দিন দ্বিতীয় দফায় যে সংলাপ করলেন তাতে ‘দ্রুত নির্বাচন’ কিংবা ‘নির্বাচন কবে হবে সেই রোডম্যাপ’ নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর চাপ আরেকটু বেড়েছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকদের অনেকে।
কেন বাড়ছে চাপ অন্তবর্তীকালীন সরকারের উপর প্রত্যাশাইবা কি? তাদের মতে সরকার গঠনের পর পর প্রথম দফার সংলাপে নির্বাচনের প্রসঙ্গ আসলেও তখন নতুন সরকারকে সমর্থন জানানোটাই ছিলো মুখ্য বিষয়। কিন্তু এখন ধীরে ধীরে নির্বাচনের সময়সীমা সম্পর্কে একটি সুনির্দিষ্ট ধারণা পেতে চাইছে দলগুলো। সংলাপে বিএনপি কি বলছেন নির্বাচন নিয়ে?
বিএনপি কি বলছেন নির্বাচন নিয়ে?
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স বলছেন জরুরি সংস্কার শেষ করে দ্রুতই নির্বাচনের দিকে যাওয়াই যে সরকারের এখন একমাত্র কাজ-সেটিই তার দলের পক্ষ থেকে সংলাপে বলা হয়েছে। সংলাপের পর দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন নির্বাচনই তাদের এক নম্বর প্রায়োরিটি। তবে নির্বাচনের রোডম্যাপ নিয়ে তারা সরকারের কাছে কোনও মাস বা দিনকালের কথা বলেননি।“বিএনপি অন্তর্বর্তী সরকারকে সমর্থন দিয়েছে। তাই তারা চায় না অন্তর্বর্তী সরকার ব্যর্থ হোক।
আর জামায়াতে ইসলামের চাওয়া কি?
জামায়াতে ইসলামীর মুখপাত্র মতিউর রহমান আকন্দ বলছেন নির্বাচনের দায়িত্ব সরকারের এবং নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করে যৌক্তিক সময়ের মধ্যে নির্বাচনের বিষয়টি তার দলীয় প্রধান ২য় দফার সংলাপে গুরুত্ব দিয়ে তুলে ধরেছেন। সংলাপ শেষে জামায়াতের আমীর ডা. শফিকুর রহমান গণমাধ্যমকে বলেছেন, “আমাদের দেওয়া দু’টি রোডম্যাপের মধ্যে একটি হবে সংস্কারের, আরেকটি নির্বাচনের। সংস্কার সফল হলেই নির্বাচন সফল হবে। তিনি বলেন, নিরপেক্ষ ও ভালো নির্বাচনের জন্য সরকারকে তারা যৌক্তিক সময় দিতে চান। সংলাপে এবার অন্য দলগুলো কী বললো?
সংলাপে এবার অন্য দলগুলো কী বললো?
ওদিকে বাম গণতান্ত্রিক জোট ও অন্য যেসব দল সংলাপে অংশ নিয়েছে তাদের মন্তব্যেও নির্বাচনে গুরুত্ব দেয়ার বিষয়টি উঠে এসেছে। তারা বলেছেন নির্বাচিত সরকার ছাড়া সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা রক্ষা হবে না- এটিই তারা তুলে ধরেছেন। তাই নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার করে নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা এখনই শুরু করা প্রয়োজন বলেও কোন কোন দল সংলাপ শেষে গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে মন্তব্য করেছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা ভবিষ্যত নির্বাচন নিয়ে কি অভিমত দিচ্ছেন?
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা নির্বাচন নিয়ে কি অভিমত দিচ্ছেন?
রাজনৈতিক দলগুলো বহু বছর পর একটি ভালো নির্বাচনের যে মুখিয়ে আছে সংলাপে তারই বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে বলে মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। নির্বাচন ইস্যুতে দলগুলো তাগাদা দিলেও অন্তর্বর্তী সরকার নির্বাচন প্রসঙ্গে তার আগের অবস্থান- অর্থাৎ সংস্কার শেষে নির্বাচন- সেটিই প্রকাশ করেছে বলে মনে হয়েছে তাদের। অন্তবর্তীকালীন সরকার এ বিষয়ে কি বলছেন এখন পর্যন্ত?
অন্তবর্তীকালীন সরকার এ বিষয়ে কি বলছেন?
অন্তবর্তীকালীন সরকারের তরফ থেকে আগেই বলা হয়েছে যে নির্বাচন কমিশনসহ বিভিন্ন বিষয়ে সংস্কারের জন্য যে কমিশন গঠন করা হয়েছে তাদের রিপোর্ট পাওয়ার পর রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আবার আলোচনার পর নির্বাচনের সময়সীমা ঘোষণা করা হবে। প্রধান উপদেষ্টার পক্ষ থেকে তার প্রেস সচিব সংলাপের পর সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন সংস্কারের বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলো একটি ন্যূনতম ঐকমত্যে এলে এর ওপর নির্ভর করবে নির্বাচনের টাইমলাইন বা সময়সীমা। তিনি বলেন, সংস্কারে গঠিত কমিশনগুলো রাজনৈতিক দল ও অংশীজনের সঙ্গে কথা বলে তিন মাসের মধ্যে প্রতিবেদন দেবে। এরপর সরকার আবার কথা বলবে। এরপর রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংস্কারের বিষয়ে একটি ঐকমত্য এলে এর ওপর নির্ভর করবে নির্বাচনটা হতে কতদিন লাগবে। জনগণের প্রত্যাশাইবা কি আগামী নির্বাচন নিয়ে?
আগামী নির্বাচন নিয়ে জনগণের প্রত্যাশা কি?
দেশে বিদ্যামান দলগুলোর কর্মী ও সমর্থকরা বহু বছর একটি ভালো ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য লড়াই করেছে। তেমনি সাধারণ মানুষও চায় একটি অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন। আর দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের ওপর তৃণমূলের দিক থেকেও চাপ বাড়ছে বলেই কেন্দ্রীয় পর্যায় থেকে দ্রুত নির্বাচনের কথা বলা হচ্ছে। আসলে সবাই চাইছে দ্রুত নির্বাচনের মাধ্যমে দেশ যেন গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় উত্তরণ করতে পারে।