ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) আউটরিচ অ্যান্ড কমিউনিকেশনের পরিচালক তৌহিদুল ইসলাম বলেছেন, সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ-২০২৪ এ মত প্রকাশের স্বাধীনতা ঝুঁকির মুখে আছে। সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর জবাবদিহিতার কিছু নেই। শনিবার (৪ জানুয়ারি) সাইবার সুরক্ষা ২০২৪ অধ্যাদেশ নিয়ে গোলটেবিল আলোচনায় তিনি এসব কথা বলেন।
গোলটেবিল আলোচনায় আরও উপস্থিত ছিলেন, আইনজীবী জ্যোতির্ময় বড়ুয়া, রাজনীতিবিদ ববি হাজ্জাজ, আইনজীবী সাইমুন রেজা, মানবাধিকার কর্মী আইরিন খান, আইনজীবী সারা হোসেন, রাষ্ট্র চিন্তা দিনার ভূঁইয়া, রাজনীতিবিদ আসাদুজ্জামান ফুয়াদ, আলোকচিত্রী শহিদুল ইসলাম।

সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশে মত প্রকাশের স্বাধীনতা ঝুঁকির মুখে আছে:
আইনজীবী জ্যোতির্ময় বড়ুয়া বলেন, এটাও নিয়ন্ত্রণের চিন্তা ধারা থেকে তৈরি করা একটি আইন। বিভিন্ন ধারা আপত্তিকর। সাইবার বুলিংটা আসবে কিভাবে তাও পরিস্কার নয়। একি রকম ছিল ডিজিটাল সিকিউরিটি আইন কোনো পরিবর্ত নেই। যারা আইনটি ড্রাফটিং করে তাদের প্রেকটিকেলি আদালত নিয়ে ধারণা কম।

রাজনীতিবিদ ববি হাজ্জাজ বলেন, আগে এই আইন নিয়ে যত অভিযোগ ছিল, জুলাই অভুত্থ্যানের পরও তার পরিবর্তন হয়নি। আওয়ামী লীগ তাদের কথা মতো আইন পরিচালনা করার জন্য এই আইন তৈরি করেছে। আইনের জায়গা থেকে আইনকে পরিচালিত হতে হবে। আইনের ধারাগুলো পরিস্কার করে বলা হয়নি। নতুন বাংলাদেশে এই আইন বাস্তবায়ন হবে তা আমরা চাইবো না।
মানবাধিকার কর্মী আইরিন খান বলেন, আন্তর্জাতিক আইনে সবার উপরে মানবাধিকারের কথা রয়েছে। সাইবার সিকিউরিটি আইনে মানবাধিকার নিয়ে আগের সরকারও আলোচনা করেনি এই সরকারও করছে না। মানহানি হলে একজন মানুষ সিভিল কোর্টে যেতে পারে। কেন সরকার তার পাশে দাঁড়াবে। এতে অন্যপক্ষ তো কখনো সরকারের সঙ্গে পেরে উঠবে না।
আইনজীবী সারা হোসেন বলেন, এই আইনকে সরকারের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে দেখা উচিত। ২০০৬ সালে বিএনপির সময় এই আইন তৈরি হয়েছে। পরে আওয়ামী লীগও তা রেখে দিলো। এখনও শব্দ চয়নে ভিন্নতা এনে একি আইন রেখে দেয়া হয়েছে। এই আইনে মামলা করার মূল উদ্দেশ্যে ছিল হয়রানি করা।
দিনার ভূঁইয়া বলেন, অন্তবর্তী সরকারের কাজের প্রেক্ষাপটে মনে হচ্ছে পরবর্তী সরকারের অগ্রবর্তী বাহিনী হয়ে কাজ করছেন কিনা। অনেক বড় বড় দলের নেতারা কোনো প্রশ্ন ছাড়া মামলা থেকে খালাস পেয়েছে। গণ অভুত্থানে নির্বিচারে গুলি চালানো পুলিশকে কেন বিনা ওয়ারেন্টে গ্রেপ্তারের সুযোগ রাখা হয়েছে?
আলোচনায় রাজনীতিবিদ আসাদুজ্জামান ফুয়াদ বলেন, প্রভাবশালীদের মামলা থেকে অভ্যাহতি দেয়া হলেও সাধারণ মানুষ এখনও ভুক্তভোগী। অন্তবর্তী সরকারকেও জবাবদিহিতার মধ্যেও আনতে হবে। তারা আমলাদের মোহনায় পড়লে চুল-দাড়ি সব পেকে যাবে। কাজের কাজ কিছু হবে না।
আলোকচিত্রী শহিদুল ইসলাম বলেন, এই সিদ্ধান্তগুলো কার স্বার্থে নেয়া হচ্ছে তা জানতে হবে। জনগণ ছাড়া সবার স্বার্থ এই আইনে রক্ষা করা হয়েছে। জনগণের চিন্তাকে কোনোভাবেই আমলে নেয়া হচ্ছে না। এই সরকার স্বার্থক হোক তা আমরা চাই, কিন্তু সরকার যা বলবে তাই শুনতে হবে এমন হলে চলবে না।
টিএ/