সবাই বলে, সিনেমা প্যারাডিসো একটি পারফেক্ট টেন আউট অফ টেন চলচ্চিত্র। আগে জানি কি সেই গল্প।
একজন সৈনিক এক মেয়ের প্রেমে পড়ল। কিন্তু সেই মেয়ে কোন সাধারন মেয়ে নয়। মেয়েটি রাজার মেয়ে। অনেক চেষ্টার পর সৈনিক টি অনেক সাহস নিয়ে মনের সমস্ত আবেগ দিয়ে একদিন রাজকন্যাকে তার ভালবাসার কথা বলল। রাজকন্যা তার আবেগ বুঝল। কিন্তু একটি শর্ত জুড়ে দিল। বলল তুমি যদি ১০০ দিন আমার বাসার সামনে একটানা দাড়িয়ে থাকতে পারো তবেই তুমি আমাকে পাবে।
সৈনিকটি শর্ত মেনে নিল। রোদ – বৃষ্টি – ঝড় সবকিছু উপেক্ষা করে দিনের পর দিন রাজকন্যার বাসার সামনে দাড়িয়ে থাকল। রাজকন্যা প্রতিদিন ব্যলকনিতে দাড়িয়ে সে সৈনিক কে দেখত। এমন করে দাড়িয়ে থাকতে থাকতে যেদিন ৯৯ দিন আসল সৈনিকটি সেদিন রাতে রাজকন্যার বাসার সামনে থেকে চলে গেল। অথচ আর একদিন দাড়ালেই সে রাজকন্যাকে পেত… তবে কেন সে চলে গেল.. এই উত্তরটিই যেন পুরো ছবিতে খোজা হচ্ছিল।
ছবিটির পটভূমি ৪০ এর দশকের শেষের দিকে। টোটো নামের পাঁচ বছরের এক ছেলেকে ঘিরে। তার বাবা দ্বীতিয় বিশ্বযুদ্ধে মারা যায়। মা আর এক বোন নিয়ে থাকে। দুরন্তপনা আর সিনেমা দেখাই তার মূল কাজ। হলের প্রোজেকশনিষ্ট আলফেরদোর সাথে বন্ধুত্ব করে ফেলে। তার খুব শখ একসময় আলফেরদোর মত সেও প্রোজেকশনিষ্ট হবে।
একদিন প্রোজেকশন রুমে আগুন লাগে। আলফেরদো মারাত্বক ভাবে আহত হয়। চোখ নষ্ট হয়ে যায়। ছোট্ট টোটাকে হয়ে যায় প্রোজেকশনিষ্ট। ধীরে ধীরে তার বয়স বাড়ে।
একদিন প্রোজেকশন রুমে আগুন লাগে। আলফেরদো মারাত্বক ভাবে আহত হয়। চোখ নষ্ট হয়ে যায়। ছোট্ট টোটাকে হয়ে যায় প্রোজেকশনিষ্ট। ধীরে ধীরে তার বয়স বাড়ে।
একদিন প্রোজেকশন রুমে আগুন লাগে। আলফেরদো মারাত্বক ভাবে আহত হয়। চোখ নষ্ট হয়ে যায়। ছোট্ট টোটাকে হয়ে যায় প্রোজেকশনিষ্ট। ধীরে ধীরে তার বয়স বাড়ে।
টোটা / সালভেদর নামে অভিনয় করে তিনটি বয়সের অভিনয় অসাধারন হয়েছে। ছোটটির ভুমিকায় অভিনয় করে Salvatore Cascio, তরুন ভুমিকায় থাকে Marco Leonardi এবং শেষর জন হল Jacques Perrin. আলফেরদোর ভুমিকায় অভিনয় করেন Philippe Noiret. ইতালীর নির্মাতা Giuseppe Tornatore
ইতালিয়ান এই মাস্টার ফিল্ম মেকার ১৯৫৬ সাল জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৮৮ সালে নির্মাণ করেন ক্যারিয়ার-সেরা চলচ্চিত্র – ‘সিনেমা প্যারাদিসো’। এটি শুধু তার নিজের নয়, ইতালিয় সিনেমার মাইলফলক।
কি ছিল সিনেমটির গল্প? সিনেমার ভেতর সিনেমা আর ব্যাক্তি মানুষের নিজেকে খোঁজার চলচ্চিত্র এটি। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইতালির এক উপশহরে এক প্রজেকশনিস্ট আলফ্রেদো এবং পাঁচ বছরের তোতোর সিনামার প্রতি ভালবাসার গল্প বলেছেন এখানে তোর্নাতোর। এই ছবিটি শেষ পর্যন্ত নির্মাতার নিজেরই গল্প। সব ভালো ছবির গল্পই তাই! গুসেপ্পে তোর্নাতোরে নিজেই একাধারে পরিচালক, রচয়িতা ও কাহিনীকার।
এবার ছবির অন্যান্য প্রসঙ্গ। দ্য এরিয়ান ফিল্মসের ব্যানারে এর দৈর্ঘ্য ১৫৫ মিনিট। অভিনয় করেছেন ফিলিপ নইরেট, এনযো ক্যান্নাভেলসহ অনেকে। সিনেমাটির বাজেট ৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। ব্যবসাসফল চলচ্চিত্রটি শুধু অ্যামেরিকায়ই আয় করেছে ১২ মিলিয়ন মার্কিন ডলারেও বেশি।
৬২তম একাডেমি অ্যাওয়ার্ডসে সেরা বিদেশী ভাষা চলচ্চিত্রের জন্য পুরস্কার পায় সিনেমা পারাদিসো। এছাড়া ১৯৮৯ সালে জেতে কান চলচ্চিত্র উৎসবে গ্রঁ পি দ্য জুরি ও গোল্ডেন গ্লোবসহ অসংখ্য পুরস্কার। শুধু কি তাই? বিবিসির ১০০ সেরা ক্লাসিক তালিকায় জায়গা করে নিয়েছে তোর্নাতোরের সিনেমা পারাদিসো।