সরকারের ঋণের বোঝা ভারী হলে, সুদের চাপও বাড়ে। পাঁচ বছরে এই দায় মেটানোর বরাদ্দ হয়েছে প্রায় দিগুণ। এবারও বাড়ছে প্রায় ৩৫ হাজার কোটি টাকা। অর্থাৎ, আসন্ন বাজেটে ঋণের সুদ দিতে রাখা হচ্ছে, সোয়া লাখ কোটি টাকার বেশি। সব মিলিয়ে অর্থনীতির নাজুক চিত্রই দেখছেন অর্থনীতিবিদরা।
অর্থনীতির স্বস্তি বিদেশি ঋণ। এই ঋণের সুদ দিতে চলতি অর্থবছরে বরাদ্দ ১২ হাজার কোটি টাকার কিছু বেশি। কিন্তু এপ্রিল পর্যন্ত খরচ, বরাদ্দ ছাড়িয়ে গেছে।
এটা শুধু সরকারের বিদেশি ঋণের সুদের চিত্র। সঙ্গে রয়েছে দেশি ঋণ। দুইয়ে মিলে, সুদ পরিশোধে গত জুলাই থেকে জানুয়ারি- এই সাত মাসে খরচ প্রায় ৬১ হাজার কোটি টাকা। যতোটা বরাদ্দ রাখা হয়, তা দিয়ে সুদ পরিশোধ করে আর কুলিয়ে ওঠা যায় না। তাই, বরাদ্দ বাড়াতেই হয়।
আসন্ন ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে এই খাতে বরাদ্দ বাড়াতে হচ্ছে প্রায় ৩৫ হাজার কোটি টাকা। মোট বরাদ্দের প্রস্তাব প্রায় ১ লাখ ২৯ হাজার কোটি টাকা।
অর্থমন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থানীয় ঋণের সুদখাতে বরাদ্দ হতে পারে ১ লাখ ৯ হাজার কোটি টাকার কাছাকাছি। আর বিদেশ থেকে নেয়া সুদে যাবে আরও ২০ হাজার কোটি টাকা।
সুদ দিতে চলতি অর্থবছরে বরাদ্দ ৯৪ হাজার কোটি টাকার কিছু বেশি। তবে, কুলাতে না পারার শঙ্কায়, বাড়িয়ে করা হয় ১ লাখ ২ হাজার কোটি টাকা।
এমন অবস্থার পেছনে ব্যাংক ঋণের সুদ হার ও ডলারের দাম বাড়াকে কারণ হিসেবে দেখছেন অর্থনীতিবিদরা।
২০২০-২১ অর্থবছরে সুদ পরিশোধে বরাদ্দ ছিলো ৭০ হাজার কোটি টাকা। আগামী অর্থবছরে অংকটা হতে চলেছে প্রায় দ্বিগুণ। ব্যবসায়ী-অর্থনীতিবিদ সবাই মানছেন, এতো সুদ সামষ্টিক অর্থনীতির নাজুক চিত্রেরই ইঙ্গিত দেয়। অর্থাৎ, জনগণের করের টাকা উন্নয়ন থেকে কেটে-ছেঁটে, চলে যাচ্ছে সুদ পরিশোধ করতে।