18 C
Dhaka
সোমবার, ডিসেম্বর ২৩, ২০২৪

৫ আগস্টের পর মাঠে নামছে আওয়ামী লীগ?

তিন মাস সময় পেয়ে ধীরে ধীরে নিজেদের গুছিয়ে নিয়ে ফের রাজপথে নামার ছক কষছে আওয়ামী লীগ। চলছে তার প্রস্তুতিও। এমন আভাস ইংগিতই পাওয়া যাচ্ছে আওয়ামী শিবির থেকে।

বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে মাঠে নামার পরিকল্পনা আওয়ামী লীগের! কিছুদিন ধরেই এমন সংবাদ ঘুরে বেড়াচ্ছে সংবাদ মাধ্যম থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের পাতায় পাতায়। এরই মধ্যে আওয়ামী লীগ খোদ রাজধানীর বুকে বিক্ষোভ সমাবেশের ঘোষণা দিয়েছে। আর এতেই সদ্য ক্ষমতাহারা দলটির মাঠে নামার বিষয়টি হয়ে উঠেছে ‘টক অব দ্যা টাউন’।

গত সপ্তাহে ইউনূস সরকারের বিরুদ্ধে শিগগিরই রাজপথে আন্দোলন শুরু করতে পারে বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দল। আওয়ামী লীগের এক শীর্ষ নেতার বরাত দিয়ে এমন সংবাদ প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম ভয়েস অব আমেরিকা।

আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল ভয়েস অব আমেরিকাকে বলেছেন, আওয়ামী লীগ আন্দোলন এবং রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড শুরু করার পরিকল্পনা করছে। নাদেল আওয়ামী লীগের সেই কয়েক ডজন নেতাদের একজন যারা হাসিনার পতনের পর বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে যান।

প্রধানমন্ত্রী হিসেবে টানা চতুর্থ মেয়াদে দায়িত্ব পালন করছিলেন হাসিনা। তবে ৫ আগস্ট পদত্যাগ করতে এবং একটি সামরিক হেলিকপ্টারে ভারতে পালিয়ে যেতে বাধ্য হন তিনি। সরকার পতনের পর আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকে বিক্ষোভকারীদের ওপর হিংসাত্মক দমন-পীড়নের (জুলাই থেকে আগস্টের মধ্যে) সঙ্গে জড়িত থাকার দায়ে গ্রেফতার করা হয়েছে।

এছাড়া হামলার ভয়ে ‘আন্ডারগ্রাউন্ডে’ চলে গেছেন আওয়ামী লীগের হাজার হাজার কর্মী-সমর্থক। আওয়ামী লীগের ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগকে ‘সন্ত্রাসী সংগঠন’ হিসাবে ঘোষণা করে নিষিদ্ধ করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। এছাড়া অক্টোবরের শুরুর দিকে শেখ হাসিনা এবং আরও ৪৫ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। 

এমন পরিস্থিতিতে দেশ-বিদেশে ছিন্নবিচ্ছিন্ন হয়ে পরা দলটি কিভাবে সংগঠিত হবে? প্রত্যেক ইউনিটের বড় নেতারা পলাতক, কাদের নেতৃত্বে কর্মীরা এক হয়ে মাঠে নামবে? এমন প্রশ্ন এখন সামনে। যদিও ৫ আগস্টের পর ১৫ আগস্ট, ৩ নভেম্বর ছাড়াও রাজধানী ও দেশের বিভিন্ন স্থানে আওয়ামী কর্মীদের দেখা মিলেছে ঝটিকা মিছিলে। তাই বলে নিজেদের রাজনৈতিক অবস্থান ও বর্তমান এই পরিস্থিতিতে ঘোষণা দিয়ে সমাবেশ করার বিষয়টি আলোচনার জন্ম দিয়েছে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে। তবে কি এ নিয়ে ভাবনায় পড়েছে অন্তর্বর্তী সরকার?

বাংলাদেশের প্রধান রাজনৈতিক দলগুলো বিভিন্ন ক্ষেত্রে সংস্কারের জন্য অন্তর্বর্তী সরকারকে সমর্থন দিচ্ছে। আবার গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা দ্রুত ফেরানোর কাজ নিশ্চিত করতে ইউনূস সরকারকে প্রকাশ্যে চাপও দিচ্ছে রাজনৈতিক দলগুলো।

সংস্কারের পাশাপাশি আওয়ামী লীগের ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগকে ‘সন্ত্রাসী সংগঠন’ ঘোষণা করে নিষিদ্ধ করলেও, আওয়ামীলীগকে নিষিদ্ধের বিষটি এড়িয়ে গেছে সরকার। রাজনৈতিক দলগুলোও সে পথে হাটেনি। তবে কি সেই সুযোগ নিচ্ছে আওয়ামী লীগ? আওয়ামী লীগের মাঠে নামার আভাস খোদ হাসিনাই দিয়েছেন। পালিয়ে থাকা অবস্থায় নেতা-কর্মীদের সাথে তার বেশ কয়েকটি ফোনালাপেও তার প্রমান মেলে। যদিও সেসবের সত্যতা যাচাই করা যায়নি।

এদিকে হাসিনার পতনের পরে আওয়ামী লীগের রাজনীতির কার্যক্রমে এবং তাদের কৌশলে বড় ধরনের পরিবর্তন এসেছে। মাঠে সক্রিয় থাকার পরিবর্তে, দলটি এখন রাজনৈতিক লড়াইয়ের জন্য প্রধানত সোশ্যাল মিডিয়া নির্ভর হয়ে পড়েছে। ফেসবুক, টুইটার, টেলিগ্রাম এবং ইউটিউবের মতো প্ল্যাটফর্মে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা রাজনৈতিক বার্তা, তথ্য এবং সমর্থন বজায় রাখতে নিয়মিতভাবে প্রচারণা চালাচ্ছেন।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারণার মাধ্যমে আওয়ামী লীগ তাদের সমর্থকদের দিকনির্দেশনা দিয়ে, দলীয় মনোভাব শক্তিশালী করতে এবং বিরোধীদের মোকাবিলা করার চেষ্টা করছে। দলের সিনিয়র নেতারা বিভিন্ন সময়ে কর্মীদের বিভিন্ন নির্দেশনা দিচ্ছেন এবং সোশ্যাল মিডিয়াকে দলীয় সংহতির মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করছেন।

এদিকে শহীদ নূর হোসেন দিবসে গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠার দাবি তুলে গুলিস্তানের জিরো পয়েন্টে যে বিক্ষোভ সমাবেশের ডাক দিয়েছে আওয়ামী লীগ, এটি কি আওয়ামী লীগের সংঘটিত হয়ে মাঠে নামার পূর্ব প্রস্তুতি কিনা সেটি ভাববার বিষয়। যদিও দলটিকে ফ্যাসিবাদী উল্লেখ করে দেশের ভেতর সভা-সমাবেশ, এমনকি কোনো ধরনের মিছিল করার কোনো সুযোগ নেই বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।

আরও পড়ুন

দেশজুড়ে আওয়ামী লীগের শো-ডাউন, অবস্থান কর্মসূচি

পঁচাত্তরে আওয়ামী লীগ: প্রবীণদের ভাবতে হবে ভবিষ্যৎ নিয়ে

ভারতে পালিয়ে বেকায়দায় আওয়ামী লীগের নেতারা

বিজ্ঞাপন

আরও পড়ুন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

বিশেষ প্রতিবেদন