উদ্যোক্তা হুমায়ুন জহির জীবন দিয়ে গেছেন, শেয়ার হোল্ডার-আমানতকারীদের স্বার্থ রক্ষায়। রাষ্ট্রীয় মদদে, বিগত সরকারের সময়, সেই ব্যাংক থেকেই বিতাড়িত করা হয় তারই পরিবারকে। সেই ইউসিবির চেয়ারম্যান এখন হুমায়ুন জহিরের ছেলে-শরীফ জহির। নাগরিককে দেয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলছেন, সুশাসনে ফেরানো তাদের অগ্রাধিকার, যেকোন মূল্যে রক্ষা করে যাবেন আমানতকারীদের স্বার্থ। আর পর্ষদ আর ব্যবস্থাপনা মিলে, লক্ষ্য-ব্যাংকটিকে ফের শীর্ষে নিয়ে আসা, জানালেন নতুন চেয়ারম্যান।
ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক, ১৯৮৩ সালে কাযক্রম শুরু করে। প্রয়াত উদ্যোক্তা হুমায়ুন জহির ও আক্তারুজ্জামান বাবু মিলে ব্যাংকটি প্রতিষ্ঠা করলেও, ১৯৯৩ সালে হুমায়ুন জহির খুন হয়েছিলেন-শেয়ার হোল্ডার আর আমানতকারীর স্বার্থ রক্ষায়।
প্রথম প্রজন্মের ব্যাংকটি নিয়ে, তারপর অবশ্য নানা চড়াই উৎরাই গেছে, পর্ষদ মিটিংয়ে অস্ত্র, গুলির ইতিহাসও লেখা আছে। কলংক তৈরির পর, বাবুর পরিবার ২০১৩ সাল পর্যন্ত ব্যাংকটিতে তারা আসতে না পারলেও, পরের বছর, আওয়ামী লীগের দ্বিতীয় মেয়াদে পর্ষদে ফেরেন তার পরিবার। হুমায়ুন জহিরের পরিবারকে জোড়পূর্বক বিতারিত করে, ২০১৮ সালে নেন পুরো নিয়ন্ত্রণ।
আক্তারুজ্জামানের ছেলে সাবেক মন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর স্ত্রী রুখমিলা জামান ব্যাংকের চেয়ারম্যান হলেও, ৬০ হাজার কোটি টাকা আমানতের, বড় ব্যাংকটি চালাতে তৎকালীন মন্ত্রী নিজেই। আর্থিক সূচকে অগ্রগতিতে থাকা ব্যাংকটি হতে থাকে দুর্বল। নতুন চেয়ারম্যান বলছেন, ফরেনসিক নীরিক্ষা শুরুর কথা।
ব্যাংকটির দখল, নিয়ন্ত্রণ আর অবনতির সব কথাই জানতেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তবে, আমানতকারীর স্বার্থ রক্ষায় তার নীরবতায় হতাশ হয়েছিলেন উদ্যোক্তারা। নতুন পর্ষদ বলছে, তাদের লক্ষ্য, সুশাসন ফেরানো, আর ফের শীর্ষ ব্যাংক হিসেবে জায়গা নেয়া।
ইউসিবির গ্রাহক সংখ্যা ২০ লাখ, অনেক ব্যাংক যখন তীব্র তারল্য সংকটে, গ্রাহকের চাহিদা সামাল দিতে সংকট নেই ব্যাংকটির। ব্যাংকের পর্ষদ আর ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ চায়, স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা, নৈতিকতা চর্চায় হবে মূলনীতি।