সরকারি ব্যাংকে না রেখে নিয়ম ভেঙ্গে জমা রেখেছেন বেসরকারি বিভিন্ন ব্যাংকে। নিজ স্বার্থে অযোগ্য ব্যক্তিদের নিয়োগে সুপারিশ ও অদক্ষ কর্মকর্তাদের পদোন্নতি দেওয়ার অভিযোগও তার বিরুদ্ধে। তিনি বিমান বাংলাদেশের প্রধান আর্থিক কর্মকর্তা নওশাদ হোসেন। নাগরিক টিভির অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে তার নানা অনিয়মের ফিরিস্তি।
বাংলাদেশ বিমানের অর্থ বিভাগের পরিচালক পদটি একটি বিশেষায়িত পদ, আন্তর্জাতিক এয়ারলাইনসের তথ্য অনুযায়ী, এই পদে নিয়োগ পেতে হলে বাণিজ্য বিভাগ হতে স্নাতকোত্তর পাশসহ প্রফেশনাল ডিগ্রি এবং অর্থ-হিসাব সংক্রান্ত অভিজ্ঞতা থাকার কথা থাকলেও শুধুমাত্র হাসিনা সরকারের মদদপুষ্টে নওশাদ হোসেনকে মন্ত্রণালয় হতে বিমানে প্রেষণে নিয়োগ দেয়া হয়। অভিযোগ উঠেছে, অভিজ্ঞতা ও যথাযথ শিক্ষাগত যোগ্যতা না থাকায় নওশাদ বিমানের অর্থ বিভাগকে একটি নাজুক ও ভঙ্গুর বিভাগে পরিণত করেন।
অভিযোগ রয়েছে, স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে অবৈধভাবে বিমান নারিতা স্টেশনে গ্রুপ ৭ এর পদে গ্রুপ-৮ এর কর্মকর্তা প্রেরণ করেন যা সম্পূর্ণ অবৈধ ও নজিরবিহীন। এছাড়াও পোস্টিং বাণিজ্য করতে বিমানের বিভিন্ন স্টেশনে পোস্টিংয়ের জন্য সুনির্দিষ্ট পে-গ্রুপ না রেখে দ্বৈত গ্রুপ রাখার নিয়ম চালু রাখেন।
অনুসন্ধানে জানা যায়, নওশাদ ও তার স্বেচ্ছাচারীতার সহযোগী মনঞ্জুর ইমাম অবৈধভাবে সরকারি ব্যাংকে টাকা না রেখে বিভিন্ন বেসরকারি ব্যাংকে টাকা রাখেন। এতে মুনাফা হারাচ্ছে বিমান।
বিমানের গত বছরের ৬ জুনের একটি গোপন নথি থেকে জানা যায়, এই কর্মকর্তা গত বছরের ২৬ ফেব্রুয়ারি শাহজালাল বিমানবন্দরের সোনালী ব্যাংকের শাখায় পরিচালিত ফরেন ক্যারেন্সি একাউন্ট নং- ০১২৮৯০৭০০০০০১ এর মাধ্যমে ৫ লাখ ইউএস ডলার পাঠাতে ইরান এয়ারপোর্ট এয়ার নেভিগেশন কোম্পানি এবং এমিরেটস জেনারেল পেট্রোলিয়ামের ইনভয়েস ব্যবহার করা হয়। পরবর্তীতে দেখা যায়, লেনদেনটি সম্পন্ন হয়নি। এছাড়াও বিমানের নানা কেনা-কাটাতেও মিলেছে অনিয়মের প্রমান।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রতিযোগিতার যুগে বিমান বাংলাদেশের টিকে থাকতে হলে এবং কাঙ্ক্ষিত মুনাফা অর্জন করতে হলে, দক্ষতা ও অভিজ্ঞতার কোনো বিকল্প নেই।
এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে নওশাদ হোসেনের সাথে যোগাযোগ করা হলে কথা বলতে রাজি হননি তিনি। জানা গেছে, সম্প্রতি নিয়োগ পাওয়া বিমানের নতুন পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যানের কাছে আবেদন করে সিএফও বিমানে তার মেয়াদ বাড়ানোর চেষ্টা করছেন। তবে তার দুর্নীতি ও অনিয়মের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেওয়ার পরিকল্পনা করেছে বিমানের বৈষম্য বিরোধী কর্মকর্তারা।