চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় স্টাই বা হরডিওলামকে বলা হয় চোখের অঞ্জনি। চোখের পাপড়ি যেখান থেকে গজায়, সেই রেখা ঘেঁষে যে লাল লাল ছোট দানা বা পুঁটুলির মতো তৈরি হয় সেটাই মূলত অঞ্জনি।
চোখে অঞ্জনি উঠলে চোখ ফুলে লাল হয়ে যায়, পাতায় ফুসকুড়ির মতো কিছু একটা বের হয়। এ ছাড়া চোখ দিয়ে পানি পড়া শুরু করে বা অনেক সময় পুঁজও হয়ে যায় চোখে।
আঞ্জনি কেন হয়?
আমাদের চোখের পাতার ওপর অনেক ক্ষুদ্র তেল গ্রন্থি থাকে। মৃত ত্বক, ময়লা বা তেল জমে এই ছোট ছোট তেল গ্রন্থিগুলোকে বন্ধ করে দেয়। এগুলো বন্ধ হয়ে গেলে তার ভেতরে ব্যাকটেরিয়া জন্ম নেয়। যার ফলে চোখে অঞ্জনি উঠে। অঞ্জনি চোখের ভেতরে ও বাইরেও হতে পারে।
যেসব লক্ষণ দেখলে বুঝবেন চোখে অঞ্জনি উঠেছে-
চোখ ফুলে যাওয়া, ব্যথা, চুলকানি, চোখ থেকে অনবরত পানি পড়া, চোখের পলকের চারপাশ থেকে পুঁজ বের হওয়া, সূর্যের আলোয় চোখ খুলতে সমস্যা ও চোখের পলক ফেলতে সমস্যা হওয়া- এসব লক্ষণ দেখা দিলেই বুঝবেন চোখে অঞ্জনি উঠেছে।
কী করবেন
১. একটি পরিষ্কার কাপড় নিয়ে সেটিকে গরম পানিতে ডুবিয়ে নিন। কাপড় থেকে পানি নিংড়ে নিয়ে যে চোখে অঞ্জনি সে চোখের ওপর ৫ থেকে ১০ মিনিট রাখুন। এভাবে চোখে গরম সেঁক দিলে পুঁজ বেরিয়ে অঞ্জনি ভালো হয়ে যায়। প্রতিদিন ৩ থেকে ৪ বার এটা করতে পারেন।
২. হালকা গরম পানিতে শ্যাম্পু মিশিয়ে তুলোয় করে চোখের পাতা পরিষ্কার করুন। এতে অঞ্জনি ভালো হয়ে যায়। চোখে ক্ষারযুক্ত সাবান না ব্যবহার করে টিয়ার ফ্রি বেবি শ্যাম্পু ব্যবহার করতে পারেন।
৩. ব্ল্যাক টি সব থেকে ভালো কাজ করে অঞ্জনিকে সারিয়ে তুলতে। কারণ এতে থাকে অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল উপাদান। একটা বড় কাপে গরম পানিতে এক মিনিটের মতো রেখে টি ব্যাগটা বের করে নিন। এরপর ঠাণ্ডা হয়ে গেলে চোখের ওপর রাখুন। ৫ থেকে ১০ মিনিটের মতো রাখলেই হবে।
৪. চোখে হাত দেওয়া যাবে না। চোখ ঘষাও যাবে না। এছাড়াও, চোখে কোনো ধরনের প্রসাধনী ব্যবহার করা যাবে না। যেমন-কাজল, আইলাইনার, আইশ্যাডো, মাসকারা
৫. চোখে অঞ্জনি উঠলে কন্টাক্ট লেন্সের ব্যবহার থেকে বিরত থাকতে হবে। এবং এসময় চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কোনো ওষুধ ব্যবহার করা যাবে না।