বিপ্লবের মাধ্যমে ছাত্র ও শিক্ষক সমাজ তাদের চিন্তার স্বাধীনতা, মুক্তবুদ্ধির চর্চাকে আবার ফিরে পেয়েছেন বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
আজ বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের সেমিনারে তিনি এ মন্তব্য করেন।
ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘১৯২৪ সাল অনেক পেছনে রেখে এসেছি। কালের পরিক্রমায় বসুর আবিষ্কারটি কি এতটুকু ম্লান হয়েছে? পদার্থবিদরা বলছেন মোটেই না। যার প্রমাণ এই আবিষ্কারের ভবিষ্যদ্বাণীকে সত্য প্রমাণ করে সৃষ্ট বোস-আইনস্টাইন কনডেনসেট পদার্থবিদ্যায় নোবেল পুরস্কারে ভূষিত হয়েছে ২০০১ সালে। এ নিয়ে গবেষণা চলছেই।’
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘শুনেছি কার্জন হলে পঠন-পাঠনের কাজের ভেতরেই নবীন অধ্যাপক বসুর কাছে নতুন কোয়ান্টাম থিওরির শুরুর মধ্যে যে অসঙ্গতি ধরা পড়েছিল, তার থেকেই ওই আবিষ্কারের চিন্তাটি তার মাথায় এসেছিল। অখ্যাত জায়গার অখ্যাত এই বিজ্ঞানীর এই অদ্ভুত আবিষ্কারের কথা দুনিয়ার কোন জার্নাল ছাপতে যাবে? কিন্তু নিজের কাজের ওপর অত্যন্ত আস্থাশীল বসু সোজা সেদিনের দুনিয়ায় সবচেয়ে প্রতিষ্ঠিত বিজ্ঞানী আইনস্টাইনের কাছে জার্মানিতে পাঠিয়ে দিলেন এ আবিষ্কার নিয়ে তার ছোট্ট প্রবন্ধটি। সঙ্গে চিঠি দিলেন, নিজের পরিচয় দিলেন— আমি আপনার সরাসরি ছাত্র না হলেও, আপনার ভাব-শিষ্য, এই বলে। আইনস্টাইন চট করে বুঝে ফেললেন এ কোনো সাধারণ আবিষ্কার নয়। এর সঙ্গে নিজেরও একটি বাড়তি ধারণা যোগ করে এবং প্রবন্ধটি নিজের হাতে জার্মান ভাষায় অনুবাদ করে পদার্থবিদ্যার বিখ্যাত জার্নালে পাঠিয়ে দিলেন। সেই থেকে এটি বোস-আইনস্টাইন থিওরি।’
তিনি বলেন, ‘বর্তমানে বিশ্বমানের গবেষণা বাড়ানো প্রয়োজন। সেইসঙ্গে বিজ্ঞান চর্চাকে এগিয়ে নেওয়ার প্রয়োজনীয় সংস্কার করতে সরকার বদ্ধপরিকর। এ জন্য সংশ্লিষ্ট সবার কাছ থেকে সংস্কারের চাহিদা নিয়ে কাজ করা হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা বিশ্বের কাছে যাব না, বিশ্বই যেন বাংলাদেশের কাছে আসে, সেভাবেই দেশকে গড়ে তুলতে হবে।’
এনএ/