শেষ দিকে এসে কোচ হাভিয়ের কাবরেরা মিডফিল্ডার পাপন সিংহকে মাঠে নামান। কে ভেবেছিল সেই পাপনই হবেন বাংলাদেশের ত্রাতা! শাহরিয়ার ইমনের দারুণ এক ক্রসে পাপন লাল-সবুজ দলের জয় নিশ্চিত করেছেন। তাতেই ফিফা প্রীতি ম্যাচের দ্বিতীয় ও শেষটিতে বাংলাদেশ পিছিয়ে থেকে ২-১ গোলে মালদ্বীপকে হারিয়েছে। পাপনের আগে মজিবর রহমান জনি সমতায়সূচক গোলটি করেছিলেন।
বাংলাদেশ শুরুটা করেছে কাজেম শাহর জায়গায় মজিবর রহমান জনিকে একাদশে নামিয়ে। আর শুরু থেকে খেলার সুযোগ পেয়ে তার গোলেই বাংলাদেশ সমতায় ফিরেছে। এর আগে অধিনায়ক তপু বর্মণের ভুলে স্বাগতিকরা পিছিয়ে পড়ে। আলি ফাসির আজকেও গোল করে মালদ্বীপকে শুরুতে এগিয়ে নেন।
শনিবার কিংস অ্যারেনাতে একাদশে একটি পরিবর্তন রেখে হাভিয়ের কাবরেরার শিষ্যরা মাঠে খেলছে। আজকের একাদশে নেই আগের ম্যাচে খেলা কানাডা প্রবাসী সৈয়দ কাজেম। তার জায়গায় আগের ম্যাচে বদলি খেলা জনি সুযোগ পেয়েছেন।
ম্যাচের শুরু থেকে মালদ্বীপ খোলস ছেড়ে বেরিয়ে এসে ৪-২-৩-১ ছকে খেলছে। প্রেসিং ফুটবল তো ছিলই। সেক্ষেত্রে বাংলাদেশ বিল্ডআপ করে খেলার চেষ্টা করেছে। নিচ থেকে খেলা তৈরি করে আক্রমণ করার চেষ্টা। তবে আগের ম্যাচের মতো সুবর্ণ সুযোগ সেভাবে তৈরি করতে পেরেছে কমই।
তাই আক্রমণে মালদ্বীপ এগিয়ে।
১৯ মিনিটে বক্সের বাইরে থেকে ফাসিরের জোরালো শট অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট।
আগের ম্যাচে গোল এসেছিল ১৮ মিনিটে। আজ হয়েছে ২৩ মিনিটে। তপুর ভুলের মাশুল দিতে হয়েছে। ফাসির আরও একবার বাংলাদেশের হৃদয় ভাঙেন। তপুর শট গিয়ে পড়ে মালদ্বীপের একজনের পায়ে, সেখান থেকে ডিফেন্স চেড়া পাস ফাসির পেয়ে আগুয়ান গোলকিপারের পাশ দিয়ে বাঁ পায়ে আলতো করে জড়িয়ে দেন জালে। তপু আটকানোর চেষ্টা করেন ফাসিরকে, কিন্তু গোল বাঁচাতে পারেননি।
তবে পিছিয়ে থেকে বাংলাদেশ বলার মতো দুটি সুযোগ পায়। ২৮ মিনিটে রাকিবের শট পোস্টের অনেক দূর দিয়ে যায়।
৪০ মিনিটে আরও একটি সুযোগ নষ্ট হয়েছে। রাকিবের নিচু ক্রসে ফাহিম চলতি বলে প্লেসিং করলে গোলকিপার একটু পাশে সরে হাত দিয়ে প্রতিহত করেন। ফিরতি বলে মোরসালিনের শট পোস্টের অনেক ওপর দিয়ে যায়।
তিন মিনিট পর মজিবর রহমান জনি দারুণ এক গোলে গ্যালারিতে আনন্দের বন্যা বইয়ে দেন। বক্সের বাইরে থেকে মোরসালিনের ভেতর থেকে পাসে এক ডিফেন্ডারকে ডজ দিয়ে চার জনের মাঝ দিয়ে দারুণভাবে জায়গা বের করে নিয়ে দূরের পোস্ট দিয়ে জাল কাঁপান। গোলকিপার বাঁ দিকে ঝাঁপিয়ে পড়েও গোল বাঁচাতে পারেননি।
বিরতির পর আবার বাংলাদেশ ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ অনেকটাই নিজেদের কাছে রাখে।
৪৯ মিনিটে ভালো সুযোগ ছিল। রাকিব বক্সের বাইরে এক জনকে ডজ দিয়ে বা পায়ের বুলেট গতির শট জালে জড়ানোর আগ মুহূর্তে গোলকিপার হুসেইন শরীফ এক হাত দিয়ে কোনমতো প্রতিহত করে ব্যবধান বাড়তে দেননি।
৫৩ মিনিটে মালদ্বীপের একজনের ক্রস থেকে আহমেদ রিজুভানের হেড গোলকিপার রুখে দেয় তাদেরকেও এগিয়ে যেতে দেননি।
রহমত মিয়া,শাহরিয়ার ইমন,চন্দন রায় নামেন মাঠে। আক্রমণে গতি আরও বাড়ে।
৭৭ মিনিটে আবার মোরসালিনের জায়গায় পিয়াস আহমেদ নোভার অভিষেক হয়।
৮৪ মিনিটে অভিষেক ম্যাচেই গোল পেতে পারতেন নোভা। কিন্তু শাহরিয়ার ইমনের শট গোলকিপার শরীফ ঠিকমতো তালুতে জমাতে পারেননি,ফিরতি বলে সামনে থাকা নোভার দুর্বল শট আস্তে আস্তে বারের পাশ দিয়ে যায়।
৮৮ মিনিটে রহমতের ফ্রি-কিকে তপুর হেড বারের পাশ দিয়ে যায়।
এরপরই পাপন সিংহ সোহেল রানার জায়গায় নামেন।
যোগ করা সময়ে বদলি পাপন সিংহের গোলে বাংলাদেশের জয় নিশ্চিত হয়। শাহরিয়ার ইমনের নিঁখুত ক্রসে পাপন সিংহ বক্সের ভিতরে থেকে দারুণ এক প্লেসিং শটে জয় নিশ্চিত করেন।
বছরের শেষটা বাংলাদেশ জয় দিয়ে শেষ করতে পেরেছে। এটাই বড় আনন্দের।