বিদ্রোহীদের হাত থেকে বাঁচতে দামেস্ক থেকে পালিয়ে রাশিয়ায় আশ্রয় নেওয়া ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ এবার হারাতে চলছেন প্রিয়তমা স্ত্রী আসমা আল-আসাদকে।
তুর্কি ও আরব মিডিয়ার বরাত দিয়ে দ্য জেরুজালেম পোস্টের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাশার আল-আসাদের স্ত্রী আসমা আল-আসাদ বিবাহবিচ্ছেদের আবেদন করেছেন এবং যুক্তরাজ্যে ফিরে যাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মস্কোর জীবন নিয়ে অসন্তুষ্টি প্রকাশ করে ৪৯ বছর বয়সি আসমা সম্প্রতি রাশিয়ার আদালতে আবেদন করেছেন এবং মস্কো ছাড়ার জন্য বিশেষ অনুমতি চেয়েছেন। তার আবেদন বর্তমানে রাশিয়ার কর্তৃপক্ষ মূল্যায়ন করছে বলে জানা গেছে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, ১৯৭৫ সালে লন্ডনে সিরিয়ান বাবা-মায়ের ঘরে জন্মগ্রহণ করেন আসমা। সেখানেই তার বেড়ে ওঠা। ব্যাংকিংয়ে ক্যারিয়ার গড়ার আগে আসমা লন্ডনের কিংস কলেজে কম্পিউটার বিজ্ঞান এবং ফরাসি সাহিত্যে ডিগ্রি অর্জন করেন। আসমা ২০০০ সালের ডিসেম্বরে বাশার আল-আসাদকে বিয়ে করেন।
বাবা হাফেজ আল-আসাদের মৃত্যুর পর ২০০০ সালে সিরিয়ার ক্ষমতায় আসেন বাশার আল-আসাদ। এরপর ২৪ বছর শক্ত হাতে শাসন করেন সিরিয়া। তবে ১২ দিনের ঝটিকা আক্রমণে গত ৮ ডিসেম্বর সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কের নিয়ন্ত্রণ নেয় হায়াত তাহরির আল-শাম (এইচটিএস) ও আরও কিছু বিদ্রোহী গোষ্ঠী। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে প্লেনে করে দেশ ছেড়ে রাশিয়ায় আশ্রয় নেন প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ।
বাশার-আসমা দম্পতির তিনটি সন্তান রয়েছে- হাফেজ, জেইন এবং করিম। সিরিয়ার বিদ্রোহ শুরু হওয়ার পর থেকে আসমা তার সন্তানদের নিয়ে লন্ডনে নির্বাসিত হতে চেয়েছিলেন বলে জানা গেছে।
ক্ষমতাচ্যুত বাশার আল-আসাদ মস্কোতে বসবাস করলেও তার ওপর বেশ কিছু বিধিনিষেধ জারি করা হয়। তাকে মস্কো ত্যাগ করার অনুমতি দেওয়া হয়নি বা রাজনৈতিক কোনো তৎপরতা চালানোর অনুমোদন দেওয়া হয়নি।
রুশ কর্তৃপক্ষ তার সম্পদ ও অর্থ জব্দ করেছে। তার সম্পদের মধ্যে ছিল ২৭০ কেজি সোনা, ২ বিলিয়ন ডলার, মস্কোতে ১৮টি অ্যাপার্টমেন্ট।
বাশার আল-আসাদের ভাই মাহের আল-আসাদকে রাশিয়ায় আশ্রয় দেওয়া হয়নি। তার অনুরোধ এখনো বিবেচনাধীন রয়েছে বলে সৌদি ও তুর্কি মিডিয়া জানিয়েছে। মাহের ও তার পরিবার রাশিয়ায় গৃহবন্দী রয়েছেন।
পতনের পর সিরিয়া থেকে বাশার আল-আসাদের রাশিয়ায় চলে যাওয়াটা ছিল অপরিকল্পিত। গত ১৬ ডিসেম্বর সিরিয়ার প্রেসিডেন্সি টেলিগ্রাম অ্যাকাউন্টে পোস্ট করা এক বিবৃতিতে এমন দাবি করা হয়। বিবৃতিতে বলা হয়, বাশার আল-আসাদ সিরিয়া ছেড়ে যেতে চাননি।