বসন্ত ঋতুর আগমনের সাথে সাথে প্রতি বছরের মত এবারও প্রকৃতি সেজেছে নতুন রূপে। শীত বিদায় নিয়ে ফাল্গুনের হাওয়া দক্ষিণের জানালা দিয়ে বইতে শুরু করেছে, যা প্রকৃতিকে রঙিন ও প্রাণবন্ত করে তোলে। এ সময় গাছপালা নতুন প্রাণ ফিরে পায় এবং চারিদিক মুখরিত হয়ে ওঠে।
বসন্তকে ঋতুরাজ বলা হয়। কারণ এ সময় প্রকৃতি নতুন সবুজ পাতা, পলাশ-শিমুলের লাল-কমলা রঙে রঙিন হয় এবং কোকিলের কুহু ধ্বনিতে ভরে ওঠে। ফাগুনের হাওয়ায় মানুষের মনেও নতুন অনুভূতি জাগে।

পহেলা ফাল্গুন কেবল বসন্তের সূচনা নয়, এটি আনন্দ, ভালোবাসা ও সংস্কৃতির এক অনন্য মেলবন্ধন। নতুন সম্ভাবনা, আনন্দ ও প্রেমের বার্তা নিয়ে আসে বসন্তের প্রথম দিন। এ দিন বাঙালির জীবনে এক অনন্য উৎসব হিসেবে রয়ে যাবে।
বাংলার মাটিতে প্রাচীনকাল থেকেই বসন্ত উৎসবের প্রচলন রয়েছে। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর শান্তিনিকেতনে বসন্ত উৎসবের সূচনা করেন, যা আজও চলে আসছে। বাংলাদেশে ১৪০১ বঙ্গাব্দ থেকে বসন্ত উৎসব আনুষ্ঠানিকভাবে উদযাপন শুরু হয়, যা দেশজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে।
দেশজুড়ে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠন ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বসন্তবরণ উপলক্ষে সংগীত, নৃত্য ও কবিতা আবৃত্তির অনুষ্ঠান আয়োজন করে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী, চট্টগ্রাম, সিলেটসহ বিভিন্ন শহরে বসন্ত উৎসব হয়। গ্রামের মেলায় লোকসংগীত, নাটক ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়। মানুষ বাসন্তী রঙে সেজে উঠে, নারীরা ফুল ও রঙিন চুড়ি পরে।

সময়ের সাথে সাথে পহেলা ফাল্গুনের উদযাপন আরও বিস্তৃত হয়েছে। শহর থেকে গ্রাম পর্যন্ত বসন্তবরণে নানা আয়োজন লক্ষ করা যায়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বসন্তের ছবি, কবিতা ও অভিব্যক্তি প্রকাশের মাধ্যমে এ উৎসবের ব্যাপ্তি বাড়ছে।
এনএ/