বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের হত্যা মামলার আসামি গাজীপুরের সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীরের ঘনিষ্ঠ ও যুবলীগ নেতা তানভীর সিদ্দীকী বর্তমানে প্রকাশ্যে কিশোরগঞ্জ জেলায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন।
ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারের শাসনামলে তিনি শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে একটি শক্তিশালী ঠিকাদারি সিন্ডিকেট গড়ে তোলেন, যা এখনো সক্রিয় রয়েছে। তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা ও অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও রহস্যজনকভাবে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি, বরং তিনি অবাধে ঠিকাদারি ব্যবসা পরিচালনা করছেন।
গত ২৫ জানুয়ারি শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য পণ্য ও লিনেন সামগ্রী ধৌতকরণ সরবরাহের উন্মুক্ত দরপত্র আহ্বান করে। ওই টেন্ডারে অংশ নেন তানভীর সিদ্দীকী, যার ফলে কিশোরগঞ্জে ব্যাপক আলোচনা ও সমালোচনা সৃষ্টি হয়।
কিশোরগঞ্জ জেলা যুবদলের সহ-সভাপতি ও ব্যবসায়ী মো. জাহাঙ্গীর আলম অভিযোগ করেন, তানভীর সিদ্দীকী হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে মোটা অঙ্কের অর্থ দিয়ে টেন্ডার বাগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছেন। তার প্রতিনিধি ফাহিম দাবি করেন যে, তারা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে ১২.৫ লাখ টাকা দিয়ে ম্যানেজ করে কাজ পেয়েছেন।

স্থানীয়রা মনে করেন, একজন নাগরিক হিসেবে টেন্ডারে অংশ নেওয়ার অধিকার থাকলেও, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের হত্যা মামলার আসামি ও ক্ষমতাসীন দলের নেতা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছেন, যা হতাশাজনক। অনেকে মনে করেন, এ ধরনের অপরাধীদের প্রশ্রয় দেওয়াই ভবিষ্যতের ছাত্র-জনতার আন্দোলনকে ব্যর্থ করে দিতে পারে। তারা দ্রুত তানভীর সিদ্দীকীকে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
তানভীর সিদ্দীকীর কিশোরগঞ্জে অবস্থানের বিষয়ে ৩ মার্চ কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার ও শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালকের কাছে লিখিত আবেদন করেছেন যুবদল নেতা মো. জাহাঙ্গীর আলম।
তিনি উল্লেখ করেন যে, গাজীপুরের ৪ নম্বর আমলী আদালতে দায়ের করা একটি মামলায় তানভীর সিদ্দীকী ৫১ নম্বর এজাহারভুক্ত আসামি। গাছা থানায় মামলাটি এফআইআর হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছে। তানভীর সিদ্দীকী ২০২৩-২৪ অর্থবছর থেকে শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে অবৈধভাবে ব্যবসা পরিচালনা করছেন এবং বর্তমানে কিশোরগঞ্জেই অবস্থান করছেন।
এ বিষয়ে হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক হেলিশ চন্দ্র সরকার জানান, তানভীর সিদ্দীকীর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ পেয়েছেন, যা পরবর্তী মিটিংয়ে উপস্থাপন করা হবে এবং কমিটি যাচাই-বাছাই করে সিদ্ধান্ত নেবে।
এনএ/