ঠাকুরগাঁওয়ে বোরো ধান রোপনে ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষীরা। সার ছাড়াই বোরো ধানের চারা রোপন করেছেন অনেক কৃষক। ডিলারের কাছে চাহিদা মত সার না পাওয়ায় খুচরা বাজারে বেশি দামে সার কিনতে বাধ্য হচ্ছেন চাষিরা। এতে উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি ও ধানের ন্যায্য মূল্য না পাওয়ার শঙ্কায় চরম দুশ্চিন্তায় জেলার কৃষকরা।
বর্তমানে বোরো বীজতলা থেকে চারা তুলে ফসলি জমিতে রোপণে ব্যস্ত সময় পার করছেন ঠাকুরগাঁওয়ের কৃষকেরা। প্রতিদিন ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত জমি প্রস্তুত, পানি সেচ, হালচাষ, সার প্রয়োগ ও বীজ তুলছেন তারা। কেউ জমিতে হাল দিচ্ছেন, কেউ তৈরি জমি ভিজিয়ে রাখছেন সেচ দিয়ে। সব কাজ শেষ করে অনেকে বীজতলা থেকে চারা তুলে রোপণ করছেন খেতে। চারা রোপণসহ প্রতিটি কাজ সঠিকভাবে সম্পন্ন করলেও শান্তি নেই কৃষকের মনে। উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়ায় এবার ধানের ন্যায্য দাম না পেলে গুনতে হবে লোকসান।

ঠাকুরগাঁও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য মতে এ জেলায় এবার বোরো ধানের লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করা হয়েছে ৬২ হাজার ২শ ৫০ হেক্টর। এ পরিমান জমি থেকে চাল উৎপাদন করা হবে ২ লক্ষ ৮৫ হাজার মেট্রিক টন। এখন পর্যন্ত ১৫ হাজার হেক্টর জমিতে রোপন কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে।
চাষিরা বলছেন, ২৮,২৯ ও ৮৯ জাতের বোরো ধানের চারা রোপন করছেন তারা। সংশ্লিষ্ট ডিলারের কাছে চাহিদা মত সার না পেয়ে ও খুচরা বাজার থেকে সরকারের নির্ধারিত মূল্যে টিএসপি, ১৩শ ৫০, এমওপি, ১হাজার, ডিএপি, ১হাজার ৫০, ও ইউরিয়া ১৩শ ৫০ এর থেকে প্রতি বস্তায় ১ শ থেকে ২শ টাকায় বেশি দামে সার সংগ্রহ এবং পরিবহনে অতিরিক্ত খরচ হচ্ছে তাদের। এতে উৎপাদন খরচ বৃদ্ধির কারণে হতাশাগ্রস্থ তারা। সার নিতে না পেরে অনেকে সার ছাড়া ধানের চারা রোপন করেছেন।
খুচরা সার ব্যবসায়ীরা বলছেন, কৃষকেরা ডিলারের কাছে চাহিদামত সার না পাওয়ায় তাদের কাছে বাধ্য হয়ে সার ক্রয় করতে আসে। এতে তাদের ১শ থেকে ২শ টাকা পর্যন্ত অতিরিক্ত দাম বৃদ্ধি পায়।
অন্যদিকে সারের ডিলার জানান, অতিরিক্ত দামে সার বিক্রয়ের কোনো সুযোগ নেই। সরকারের নির্ধারিত মূল্যে তারা কৃষকদের মাঝে সার বিতরণ করে থাকেন। ডিএপি ছাড়া তাদের সব সার পর্যাপ্ত আছে। ডিএপিও পাইপ লাইনে রয়েছে।

ঠাকুরগাঁও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বলছে, ঠাকুরগাঁওয়ে সারের মজুত যথেষ্ট রয়েছে। ইতিমধ্যে মোবাইল কোর্ট পরিচালনার মাধ্যমে কিছু অসাধু ব্যবসায়ীদের শাস্তির আওতায় আনা হয়েছে। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক ইসরাত ফারজানা বলেন, সার সংকটের বিষয় ইতিমধ্যে সমাধান করা হয়েছে ঠাকুরগাঁওয়ে যতেষ্ট স্যার ও বীজ মজুত রয়েছে।
এনএ/