লক্ষ্মীপুরে এক খাবার হোটেল থেকে রোজা না রাখা বৃদ্ধসহ কয়েকজনকে রাস্তায় কান ধরিয়ে উঠবস করানো বণিক সমিতির সেই নেতা আব্দুল আজিজ ক্ষমা চেয়েছেন।
গতকাল বুধবার (১২ মার্চ) তিনি দুপুরে লাঠি হাতে নিয়ে তাদেরকে কান ধরিয়ে উঠবস করতে বাধ্য করেন।
এই ঘটনায় দেশব্যাপী তোলপাড় শুরু হয়। পরে তিনি রাতে জেলা পুলিশের হস্তক্ষেপে সদর থানা এলাকায় এক ভিডিও বার্তায় ভুক্তভোগীদের মধ্যে দুইজনকে সঙ্গে নিয়ে ক্ষমা চান তিনি।
ভিডিও বার্তায় আজিজ মুনছুরুল হক ও মো. সাজুকে জড়িয়ে ধরে ক্ষমা চান। তবে ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া লাল চুল ও দাড়িওয়ালা বৃদ্ধকে ভিডিওতে দেখা যায়নি।
ওই ভিডিও বার্তায় আব্দুল আজিজ বলেন, কয়েকজন হোটেলে খাবার খাওয়ার জন্য ঢুকেন। রমজানের পবিত্রতা রক্ষায় তাৎক্ষণিক আমি গিয়ে উনাদেরকে বলেছি আপনারা কেন খাচ্ছেন? আপনারাতো মুসলমান। সেক্ষেত্রে তারা বলেছে রোজা রাখেননি। আমি আসলে যে কাজটি করেছি এটি অন্যায়, অপরাধ। এটা ধর্মীয় অনুভূতি, সেজন্য এটা আমার করা ঠিক হয়নি। এজন্য আমি উনাদের কাছে ক্ষমা চাই। উনারা যেন আমাকে ক্ষমা করে দেন। আমি এ ধরনের কাজ আর কখনো করবো না। এ ধরনের কাজের সঙ্গে জড়িত হব না।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয়রা জানান, বুধবার দুপুরে থানা রোড এলাকায় হিন্দুদের খাবার হোটেলে আজিজ অভিযান চালান। রোজা না রাখা কয়েকজন যুবক-বৃদ্ধকে তিনি হোটেল থেকে বের করে রাস্তায় কান ধরিয়ে উঠবস করান। ভিডিওটি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে সমালোচনা শুরু হয় এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে খবরটি প্রকাশিত হয়। এতে রাতে সদর থানা পুলিশ আজিজকে আটক করে।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ভুক্তভোগী মুনছুরুল হক ও মো. সাজু জানান, রমজানের পবিত্রতা রক্ষায় বণিক সমিতি নেতা তাদেরকে শাস্তি দিয়েছেন। এখন তিনি ক্ষমা চেয়েছেন। তাই তারা আইনগত ব্যবস্থা নেবেন না।
এ বিষয়ে লক্ষ্মীপুর সদর মডেল থানার ওসি আব্দুল মোন্নাফ জানান, ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে আজিজকে থানায় ডেকে আনা হয়। ভুক্তভোগীদের মধ্যে দুই ব্যক্তিকেও আমরা থানায় এনেছিলাম। কেউ তার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ দেয়নি। এছাড়া আজিজ নিজেও ক্ষমা চেয়েছেন। তাই তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। ভুক্তভোগী লাল চুল-দাড়িওয়ালাকে আমরা খুঁজে পাইনি। শুধু লাল দাড়িওয়ালা না, ভুক্তভোগী অন্য কেউ এসেও যদি অভিযোগ দেয় আমরা আইনগত ব্যবস্থা নেব।
এনএ/