ফিলিস্তিনের যুদ্ধরত গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের বোমা হামলায় ৭ সেবা কর্মী নিহত হয়েছেন। নিহত সেবা কর্মীরা ওয়ার্ল্ড সেন্ট্রাল কিচেন-ডব্লিউসি নামক মানবিক সংস্থার হয়ে কাজ করছিলেন। এ ঘটনার পর সংস্থাটি তাদের কার্যক্রম বন্ধ রেখেছে।
ডব্লিউসিকে জানিয়েছে, তাদের কর্মীরা ইসরায়েলি বাহিনীর সঙ্গে সমন্বয় করে দুটি সাজোয়া যানে বুলেট প্রুফ পোশাক এবং শরীরে ডব্লিউসিকের লোগো নিয়ে তাদের কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছিলেন। মধ্য-গাজার দিয়ার আল বালাহর একটি খাদ্য গুদাম থেকে বের হওয়ার পরই তাদের ওপর বিমান হামলা হয়। ওই গুদামে প্রায় ১০০ টন খাদ্য মানবিক সহায়তার জন্য মজুদ করা আছে। ডব্লিউসিকে সাইপ্রাস থেকে সমুদ্র পথে গাজায় সহায়তা পৌছে দিচ্ছিলো। এ হামলার জন্য তারা ইসরায়েলকে দায়ী করেছে।
নিহতদের মধ্যে একজন অস্ট্রেলিয়ান, একজন ব্রিটিশ এবং একজন পোল্যান্ডের নাগরিক বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। পোল্যান্ডের সহায়তাকর্মীর নাম ডেমিয়ান শ্যাবল বলে নিশ্চিত করেছে দেশটি। যদিও ইসরায়েল সরকারের কাছ থেকে নিহতদের পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার অপেক্ষায় আছেন কর্মকর্তারা।
নিহত অস্ট্রেলিয়ান কর্মীর নাম লালজোয়ামি ফ্রাঙ্ককম বলে নিশ্চিত করেছেন অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজ। তিনি এ ঘটনাকে অগ্রহণযোগ্য বলে অভিহিত করেছেন। জাতিসংঘের শিশু বিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ বলেছে, সহায়তাকর্মীদের ওপর হামলার ঘটনায় বিষয়টি আরও স্পষ্ট হয়েছে যে গাজার পরিবেশ এখন কতটা ভয়ঙ্কর রূপ নিয়েছে।
ইসরায়েলের সশস্ত্র বাহিনী-আইডিএফ এর পক্ষ থেকে ঘটনা তদন্তের কথা জানানো হয়েছে। আইডিএফ জানিয়েছে, মানবিক সহায়তা যেনো গাজাবাসীর কাছে পৌছায় সে বিষয়টি নিশ্চিতে তারাও কাজ করছেন। ব্রিটিশ সেবাকর্মী নিহত হওয়ার ঘটনায় উদ্বেগের কথা জানিয়েছেন দেশটির শিক্ষামন্ত্রী গিলিয়ান কিগান। বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষায় ইসরায়েলকে দায়িত্বশীল হওয়ার আহবান জানিয়েছেন তিনি। এছাড়া, আইডিএফকে গাজাতে ত্রাণ প্রবেশের অনুমতি দিতে অনুরোধ করেছেন এ ব্রিটিশমন্ত্রী।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর গাজায় সশস্ত্র রাজনৈতিক গোষ্ঠী হামাস ইসরায়েলের ভেতরে হামলা চালায়। ওই হামলায় অন্তত ১২শ ইসরায়েলি নিহত হয়। হামলায় সময় অন্তত ২৪০ জন ইসরায়েলিকে জিম্মি করে হামাস। এরপর থেকে জিম্মি উদ্ধার এবং হামলার প্রতিবাদে গাজায় অভিযান শুরু করে আইডিএফ। এ হামলায় ২ এপ্রিল পর্যন্ত অন্তত ৩১ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে।