পবিত্র রমজানে, বাংলাদেশের বিভিন্ন বাজারে অধিকাংশ পণ্যের দাম নিম্নমুখী হলেও চালের দাম কিছুটা বেড়েছে। রাজধানী ঢাকা সহ দেশের বিভিন্ন বাজারে বেশিরভাগ পণ্যের দাম স্বাভাবিক পর্যায়ে রয়েছে, তবে চালের দাম ক্রেতাদের জন্য কিছুটা অস্বস্তির সৃষ্টি করছে।
এ বছর রমজান মাসের শুরুতে সাধারণত চিনি, খেজুর, ডাল ও অন্যান্য মুদিপণ্যের দাম নিম্নমুখী ছিল। কিন্তু চালের দাম গত এক সপ্তাহে আবারও কেজিপ্রতি দুই থেকে চার টাকা বেড়ে গেছে। বিশেষ করে, ভালোমানের সরু চালের দাম ৮০ থেকে ৯০ টাকা কেজি পড়ছে, যা গত ছয় মাসে তিন দফায় প্রায় ৮ থেকে ১০ টাকা বেড়েছে।
রাজধানীর কাওরান ব্যবসায়ী রুস্তম শেখ বলেন, “এখন ভালো মানের সরু চাল কিনতে কেজিপ্রতি ৮৬ থেকে ৮৮ টাকা দিতে হচ্ছে। বিখ্যাত ব্র্যান্ডের মিনিকেট চালের দাম ৯০ থেকে ৯২ টাকার আশপাশে।” তিনি আরও বলেন, “এখন ৮০ টাকার নিচে কোনো ভালো মানের চাল পাওয়া যায় না। চালের দাম বৃদ্ধি হওয়া স্বত্ত্বেও, মধ্যম আয়ের মানুষকেও এ দাম দিয়ে চাল কিনতে হচ্ছে।”
মোটা চালের দামও কম নয়। মোহাম্মদপুর, কাওরান বাজার, হাতিরপুল, রামপুরা ঘুরে দেখা যায়, মোটা সেদ্ধ চালের দাম ৫৮ থেকে ৬০ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে। তবে ব্যবসায়ীরা বলছেন, বেশি পরিমাণে চাল কিনলে কিছুটা ছাড় দেওয়া হচ্ছে।
এদিকে, সয়াবিন তেলের সরবরাহ আগের চেয়ে স্বাভাবিক থাকলেও বোতলজাত তেলের সরবরাহে এখনো কিছুটা ঘাটতি দেখা যাচ্ছে। রামপুরা ব্যবসায়ী বেলাল হোসেন জানান, “খোলা সয়াবিনের সরবরাহ এখন পর্যাপ্ত, তবে বোতলজাত তেলের চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহ কম। তবে, আগে যেভাবে তেল পাওয়া যাচ্ছিল না, এখন তেমন অবস্থা নেই।”

সবজি বাজারে কিছুটা স্বস্তি দেখা গেছে। লেবু, শসা এবং বেগুনের দাম কমেছে।
আগে বেগুন ৮০ থেকে ১০০ টাকা কেজি বিক্রি হলেও বর্তমানে তা ৫০ থেকে ৬০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। লেবুর দাম হালি ৪০ টাকা এবং শসা ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে, ঢেড়স ও উচ্ছে ছাড়া বেশিরভাগ সবজির দাম কমেছে।
পেঁয়াজের দামও ব্যাপক কমেছে। খুচরা দেশি পেঁয়াজ কেজিপ্রতি ৩৬ থেকে ৪৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা গত বছর ১১০ থেকে ১৩০ টাকার মধ্যে ছিল। আলুর দামও অর্ধেক কমে ২০ থেকে ২৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বাজারের এই পরিস্থিতি দেখে ক্রেতারা কিছুটা স্বস্তি পাচ্ছেন, তবে চালের দাম নিয়ে তাদের কিছুটা উদ্বেগ রয়ে গেছে। হাফিজ উদ্দিন নামের এক ক্রেতা বলেন, “এ বছর সবকিছুই ভালো ছিল, শুধু যদি চালের দাম কমতো, তাহলে মানুষ আরও স্বস্তির নিশ্বাস ফেলতে পারতো।”
মোটাদাগে, পবিত্র রমজানে বেশিরভাগ পণ্যের দাম স্থিতিশীল থাকলেও চালের দাম কিছুটা বাড়ছে। তবে, রোজা শুরুর আগের যে অরাজকতা ছিল, তা এবছর দেখা যায়নি এবং মুদিপণ্যের দাম আগের তুলনায় অনেক কম রয়েছে।
পড়ুন: পুঁজিবিনিয়োগ করতে চায় শ্রীলঙ্কা
দেখুন: বাজারে সবজির দাম স্থিতিশীল, কমতির দিকে মাছের দর |
ইম/