33 C
Dhaka
শনিবার, মার্চ ১৫, ২০২৫

টাকা ছাপিয়ে ফের ঋণ দিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক

বাংলাদেশ ব্যাংক সম্প্রতি সংকটে থাকা সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক (এসআইবিএল) এবং ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংককে আরও ২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা তারল্য সহায়তা প্রদান করেছে। বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর এই তারল্য সহায়তা প্রদান করার অনুমোদন দেন। সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংককে ১ হাজার ৪০০ কোটি টাকা এবং ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংককে ১ হাজার কোটি টাকা সহায়তা দেওয়া হয়েছে। এর ফলে, বাংলাদেশ ব্যাংক এ পর্যন্ত দুর্বল ব্যাংকগুলোকে ২৯ হাজার ৪১০ কোটি টাকা সহায়তা প্রদান করেছে।

প্রসঙ্গত, গত নভেম্বরে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ছয়টি ব্যাংককে ২২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা ঋণ দেয়,

এরপর জানুয়ারিতে আরও ৪ হাজার ৯১০ কোটি টাকা প্রদান করা হয়। এ সহায়তা জামানত ছাড়াই দেওয়া হয়েছে, যা সরাসরি ব্যাংকগুলোর অ্যাকাউন্টে স্থানান্তরিত হয়েছে। এর ফলে, সংকটে থাকা ব্যাংকগুলো তারল্য সংকট কাটাতে কিছুটা সাহায্য পেয়েছে, তবে এসব পদক্ষেপ মূল্যস্ফীতির ওপর প্রভাব ফেলতে পারে।

গত বছর ব্যাংক খাতের বেশ কিছু দুর্বলতার কারণে ব্যাংকগুলোতে আমানতকারী গ্রাহকদের আস্থা কমে গেছে এবং গ্রাহকরা অর্থ তুলে নিতে শুরু করেছেন। এ কারণে ব্যাংকগুলো তারল্য সংকটে পড়েছে। কিছু ব্যাংক বিধিবদ্ধ নগদ তারল্য সংরক্ষণ এবং সরকারি সিকিউরিটিজ রাখা নিয়ে ব্যর্থ হয়েছে। তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক, বাজার থেকে অর্থ উত্তোলনের পাশাপাশি কিছু ব্যাংককে তারল্য সহায়তা দিচ্ছে।

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ব্যাংক খাতে এই ধরণের তারল্য সহায়তার পরিমাণ বৃদ্ধি পেলে দেশে মূল্যস্ফীতির হার বাড়তে পারে, যা আর্থিক পরিস্থিতি আরও অস্থিতিশীল করতে পারে। তবে গভর্নর আহসান এইচ মনসুর জানিয়েছেন, ব্যাংকগুলোকে তারল্য সহায়তা প্রদান করলেও, বাজারের তারল্য পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে তারা ব্যবস্থা গ্রহণ করছেন। একই সঙ্গে, এই ধরণের সহায়তা ফেরত নেওয়ার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক বিলের মাধ্যমে বাজার থেকে উদ্বৃত্ত টাকা তুলে নেওয়ার প্রক্রিয়া চালু করেছে।

এদিকে, ব্যাংকগুলোকে অতিরিক্ত তারল্য সহায়তা প্রদানের মাধ্যমে সরকার তাদের স্থিতিশীল রাখতে চায়, যাতে ব্যাংক খাতের আমানত বৃদ্ধি পায় এবং গ্রাহকরা ফের ব্যাংকগুলোতে আস্থা রাখতে পারেন। তবে, ব্যাংক খাতের এই দুর্বলতার জন্য সরকারের বিরুদ্ধে সমালোচনা চলছে এবং কিছু বিশেষজ্ঞ মনে করছেন, রাষ্ট্রীয় মদদে কিছু ব্যবসায়ী গ্রুপ ঋণের নামে বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ করেছে, যার কারণে ব্যাংকগুলো বর্তমানে সংকটে পড়েছে।

সাম্প্রতিক সময়ে ব্যাংকগুলো বিশেষ করে সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক ও ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক সহায়তা পাওয়ার পরও এখনও তাদের কার্যক্রম পূর্ণভাবে স্বাভাবিক হতে পারেনি। এসব ব্যাংকগুলোর দুর্বল অবস্থার কারণে দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা কিছুটা ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে এবং সাধারণ মানুষও ব্যাংকিং ব্যবস্থার ওপর আস্থাহীন হতে শুরু করেছে।

এই পরিস্থিতিতে, বাংলাদেশ ব্যাংক আগামীতে ব্যাংকগুলোর আরো শৃঙ্খলা নিশ্চিত করতে আরও কঠোর পদক্ষেপ নিতে পারে, যাতে তারা ভবিষ্যতে আর্থিক সংকটে না পড়ে এবং জনগণের আস্থা ফিরে আসে।

পড়ুন: অবহেলায় মা ও শিশুর মৃত্যু : ৫০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে রুল

দেখুন: টাকার নোটে থাকছে না বঙ্গবন্ধুর ছবি | 

ইম/

বিজ্ঞাপন

আরও পড়ুন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

বিশেষ প্রতিবেদন