চুম্বকের ব্যবহার করে জটিল অপারেশন সম্পন্ন হচ্ছে আধুনিক প্রযুক্তি নির্ভর চিকিৎসায়। চুম্বকের সাহায্য শরীরের স্পর্শকাতর নানা অংশে সমস্যা আক্রান্ত অংশকে টেনে আলাদা করাসহ নানা কাজ করা হচ্ছে। চুম্বকের ব্যবহার হচ্ছে- কানে কম শোনার সমস্যা থেকে উত্তরণে ব্যবহৃত ককলিয়ার ইমপ্লান্টে, রোলারকোস্টারের জরুরী ব্রেকসহ নানা ক্ষেত্রে, এমনকি মার্কিন মহাকাশ সংস্থা নাসাতেও।
চুম্বকের সাহায্যে বৈদ্যুতিক গাড়িতে এক্সেল চালিত হয়ে চাকা ঘোরে। উচ্চমানের চুম্বকে গাড়ির ওজন কম হয় এবং মোটর চলে কার্যকরভাবে। বৈদ্যুতিক গাড়ি, উইন্ড টার্বাইন ইঞ্জিনসহ সব ধরনের সম্প্রসারণশীল প্রযুক্তিখাতে চুম্বকের ব্যবহার রয়েছে। বিদ্যুতায়নের ক্ষেত্রে চুম্বকের ব্যবহার হয়। বিরল খনিজ থেকে চুম্বক তৈরি হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের ওহাইও অঙ্গরাজ্যের ক্লিভল্যান্ড হাসপাতালের চিকিৎসক ডাক্তার ম্যাথিউ ক্রহ সম্প্রতি চুম্বকের সাহায্যে কয়েকটি অপারেশন সম্পন্ন করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, এ প্রক্রিয়ায় অপারেশন ভয়হীনভাবে সম্পন্ন করা যায় এবং অপারেশনের সময় শরীরের অংশ কম কাটার প্রয়োজন পড়ে।
ছোট-খাটও কাজেও চুম্বকের নিত্য ব্যবহার হচ্ছে। ঘরের ফ্রিজের সঙ্গে সুন্দর স্যুভেনির সাজানো থেকে শুরু করে আরও অনেক কাজেই এ ব্যবহার রয়েছে। বর্তমানে প্রযুক্তি গবেষকরা শক্তিশালী চুম্বক তৈরিতে অন্যান্য যে কোন সময়ের থেকে বেশি জোর দিয়েছেন।
যুক্তরাজ্যের বান্টিক চুম্বক উৎপাদক কেন্দ্রের যান্ত্রিক উৎপাদক ব্যবস্থাপক ম্যাথিউ শুয়ালো জানিয়েছেন, ‘‘গত ১০ বছরে উৎপাদিত চুম্বকগুলো অনেক শক্তিশালী। এসময়ে ‘নিওডাইমিয়াম’ নামক উপাদান দিয়ে তৈরি শক্তিশালী চুম্বক ২০০ সি তাপমাত্রায় টিকে থাকতে সক্ষম। চুম্বকের দক্ষতা আরও বাড়াতে আরেক ধরনের খনিজ উপাদান ডাইসপ্রোসিয়ামে চুম্বক তৈরির চেষ্টা চলছে।
বর্তমানে বিশ্বের স্থায়ী চুম্বক তৈরির বাজারের ৯০ শতাংশ শেয়ারই চীনের দখলে। বিশ্বে চুম্বকের বাজারে চীনের আধিপত্যের কারণ, এ খাতে দেশটি ভর্তুকি দিচ্ছে। এ দেশ থেকে স্থায়ী চুম্বক রপ্তানিতে ১৩ শতাংশ ভ্যাট ছাড় দেওয়া হয়েছে। চীনের চুম্বকের বাইরে আইরন এবং নাইট্রোজেন ব্যবহার করে ম্যাগনেটিক ফিল্ড বা চুম্বকীয় আকর্ষণ তৈরি করতে সক্ষম চুম্বক তৈরি করছে যুক্তরাষ্ট্র।