বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপটি উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে আরও এগিয়েছে। এটি যেকোন সময় ঘূর্ণিঝড় রিমাল-এ পরিণত হতে পারে। এরপর এটি শক্তি বাড়িয়ে প্রবল ঘূর্ণিঝড় হিসেবে খুলনা ও বরিশাল উপকূল অতিক্রম করতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস। পূর্ব সতর্কতা হিসেবে এরইমধ্যে প্রস্তুত করা হয়েছে উপকূলের আশ্রয়কেন্দ্রগুলো।
পূর্বমধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন পশ্চিমমধ্য বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত গভীর নিম্নচাপটি, উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে এগিয়েছে। এর প্রভাবে পটুয়াখালীর কুয়াকাটা সংলগ্ন বঙ্গোপসাগর বেশ উত্তাল।
পায়রা বন্দরে চলছে ৩ নম্বর সতর্ক সংকেত। আকাশ ঘন মেঘাচ্ছন্ন। বাতাসের চাপ কিছুটা বেড়েছে। স্বাভাবিকের চেয়ে নদ-নদীর পানির উচ্চতাও বাড়ছে। এরইমধ্যে উপকূলের বাসিন্দাদের সতর্ক করা হয়েছে। প্রস্তুত রাখা হয়েছে আশ্রয়কেন্দ্রগুলো।
এদিকে, গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে রাঙ্গাবালীর নদ-নদীতে জোয়ারের পানি আজও স্বাভাবিকের চেয়ে বাড়তে শুরু করেছে। এরইমধ্যে প্রায় এক-দুইফুট পানি বৃদ্ধি পেয়েছে।
সম্ভাব্য ঘূর্নিঝড় রিমাল মোকাবেলায় জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে পটুয়াখালীতে। জেলা প্রশাসক জানান, দুর্যোগ মোকাবেলায় জেলায় ৭০৩টি সাইক্লোন শেল্টার, ৩৫টি মুজিব কিল্লা, ৭৩০ মেট্রিক টন চাল, ১০ লাখ টাকার শিশু খাদ্য, ১০ লাখ টাকার গোখাদ্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় প্রস্তুত ভোলা জেলা প্রশাসনও। নেয়া হয়েছে সকল প্রস্তুতি। জেলায় ৮৬৯টি সাইক্লোন শেল্টার, ১৪টি মুজিব কেল্লা প্রস্তুত রয়েছে। পাশাপাশি শুকনো খাবার, ত্রাণ সামগ্রী, পানিরও ব্যবস্থা করা হয়েছে।
এদিকে, ঘূর্ণিঝড়ের আগেই বাগেরহাটে শুরু হয়েছে বৃষ্টিপাত। ঝড় থেকে বাঁচতে প্রস্তুত করা হয়েছে ৩৫৯ আশ্রয় কেন্দ্রে। নদীতে থাকা মাছ ধরা ট্রলার গুলো উপকূলের ছোট ছোট খালে আশ্রয় নিয়েছে। কোস্টগার্ডের পক্ষ থেকে চালানো হচ্ছে জনসচেতনামূলক প্রচার-প্রচারনা।
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের কারণে উপকূলীয় জনগণের মাঝে সচেতনতার জন্য কাজ করে যাচ্ছে বাংলাদেশ কোস্টগার্ড। চট্টগ্রাম কক্সবাজার সমুদ্র উপকূলের এই বিস্তীর্ণ এলাকায় বাংলাদেশ কোস্ট গার্ডের স্টেশন এবং আউটপোস্টগুলো মাইকিং ও লিফলেট বিতরণ করছে।
গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে উত্তাল কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতও। পর্যটকদের নিরাপত্তায় নানান পদক্ষেপে নিয়েছে লাইফগার্ডরা। আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, নিম্নচাপটি গতি বাড়িয়ে অগ্রসর হচ্ছে উপকূলের দিকে। নিম্নচাপটির প্রভাবে সাগরের ঢেউয়ের উচ্চতা স্বাভাবিকের চেয়ে ২ থেকে ৩ ফুট বেড়েছে।