সদ্য শেষ হওয়া সিরিজের শেষ টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশ জিতলেও, দলের আসল চেহারাটা একেবারেই স্পষ্ট। প্রধাণ নির্বাচক গাজী আশরাফ হোসেন লিপু বলছেন- রিয়েলিটি চেক। সাম্প্রতিক সময়ে টি টোয়েন্টিতে সাকিব-লিটনদের খেলার ধরণ নিয়েও উঠেছে প্রশ্ন, টাইগারদের সামর্থ্য কি এতটুকুই? নাকি সামর্থ্যের সর্বোচ্চ ব্যবহারটা করতে পারছেন না শান্ত-সৌম্যরা?
ডালাসের আকাশটা যতটা স্বচ্ছ ঠিক ততটাই অস্বচ্ছ টাইগারদের রিসেন্ট পারফরম্যান্স। এমন এক সবুজের গালিচায় যেখানে চার ছয়ের প্রত্যাশা সেখানে দেখতে হলো টাইগার ব্যাটারদের আসা যাওয়া, যেন প্যাভিলিয়নে ফেরার বড্ড তাড়া! লিটন দাসের এই শটটা দেখুন না, খেলতে চেয়েছিলেন কাভার ড্রাইভ, কিন্তু ব্যাটে বলে হয়নি ওয়েল কানেকটেড! তাই এলকেডির আফসোসটাও বেশ।
যে নান্দনিক শটগুলো খেলে উপাধি পেয়েছিলেন লিওনার্দো দ্যা ভিঞ্চি, সেই শটগুলোতেই পরাস্ত হচ্ছেন বার বার! বুঝতেই পারছেন কতটা বিবর্ণ টাইগারদের টপ অর্ডার। চলতি বছরে ৮ ম্যাচ খেলে লিটনের উইলোতে মাত্র ৯৩ রান! শয়ের নিচে স্ট্রাইক রেট, কাপ্তানের উইলোবাজি নেই বললেই চলে, এই বছরে ১১ ম্যাচ খেলে ১৯৪ রান শান্তর ব্যাটে, স্ট্রাইক রেটে এলকেডির চেয়ে খানিক এগিয়ে, ১০২.৬৪। তবে এ দুজনের চেয়ে ঢের এগিয়ে সৌম্য সরকার। চলতি বছরে ৮ ম্যাচে ব্যাট চালিয়ে জমা করেছেন ১৬০ রান। স্ট্রাইক রেটটাও সমীহ জাগানিয়া, প্রায় ১২৭। আন্তর্জাতিক আঙিনায় পা রেখেই উইলোবাজি দেখাচ্ছেন তানজিদ তামিম। ৭ ম্যাচেই ৩ ফিফটি, ধরে রেখেছেন টি টোয়েন্টির ফুল রিদম। ১২৭ এর কাছাকাছি স্ট্রাইক রেট। তামিম-সৌম্যের ব্যাট আশা দেখালেও লিটন-শান্ত ফেলছেন শংকায়। বিগ স্টেজে ফ্লাইং স্টার্ট না পেলেই যে মুখ থুবড়ে পড়বে পুরো দল।
বিশ্বকাপের আগে শংকা আরও একটা জায়গায়। সেটা ডেথ বোলিং। ভীষন খরুচে মোস্তাফিজ-শরীফুলরা। আমেরিকার বিপক্ষে প্রথম টি টোয়েন্টিতে শেষ চার ওভারে ৫৫ রান দিয়ে স্বাগতিকদের জয় সহজ করে তুলেছেন টাইগার বোলাররা।
দলের সবচেয়ে বড় তারকা সাকিব আল হাসানের অফফর্মটাও ভোগাতে পারে বাংলাদেশকে। বল হাতে স্বরুপে নেই মিস্টার আল হাসান। আমেরিকার বিপক্ষে প্রথম টি টোয়েন্টিতে ৩ ওভারে ১৬ রান দিয়ে ছিলেন উইকেটশূন্য। দ্বিতীয় ম্যাচে ভীষন খরুচে, চার ওভারে ৩৫, নিতে পারেন নি কোন উইকেট। তৃতীয় ম্যাচে অবশ্য প্রথম উইকেটের দেখা পান টাইগার পোস্টার বয়, ৩ ওভার হাত ঘুরিয়ে গুনতে হয় ২৩ রান ।
মিডল অর্ডারেও ধুকছে শান্তরা। আমেরিকার বিপক্ষে সিরিজ নির্ধারনী ম্যাচে শেষ ৫ ওভারে মাত্র ৩৯ রানের সমীকরণ মেলাতে পারেনি হাথুরুর শিষ্যরা। যদিও শেষ টি টোয়েন্টি জিতে হোয়াইটওয়াশের লজ্জা এড়ায় টিম টাইগার।
এই প্রতিকূল পরিস্থিতিতে ঘুরে দাড়ানোর ছক কষতে হবে ক্রিকেটার ও টিম ম্যানেজম্যান্টকেই। এর ব্যাতয় হলে যে, আরও একবার ক্রিকেট প্রেমী গোটা বাংলা ছেয়ে যাবে বিষাদের কালো ছায়ায়।