হেপাটাইটিস বি ও সি মারাত্মক ব্যাধি। তবে এটি প্রতিরোধযোগ্য। এবিষয়ে নানাবিধ উদ্যোগও নেয়া হচ্ছে। হেপাটাইটিস বি ও সি নির্মূলে নিরাপদ রক্ত পরিসঞ্চালন গুরুত্বপূর্ণ। আর এক্ষেত্রে দেশের নিঃস্বার্থ স্বেচ্ছা রক্তদাতারা রক্তদানের মাধ্যমে স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় বিরাট ভূমিকা পালন করছেন। তাই নিরাপদ রক্ত পরিসঞ্চালনে স্বেচ্ছা রক্তদান কার্যক্রমকে আরো গতিশীল আরো শক্তিশালীকরণ করা প্রয়োজন।
বিশ্ব রক্তদাতা দিবস উপলক্ষে কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন আয়োজিত ৩ দিনব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসেবে ১২ জুন বুধবার সন্ধ্যায় রাজধানীর কাকরাইলস্থ আইডিইবি ভবনে রক্তদাতা-গ্রহীতা মিলনমেলা ও বিশেষ সেমিনারে বক্তারা এসব কথা জানান।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রথিতযশা মনোচিকিৎসক ও কথাসাহিত্যিক অধ্যাপক ডা. আনোয়ারা সৈয়দ হক। সেখানে ‘হেপাটাইটিস বি ও সি প্রতিরোধে নিরাপদ রক্ত পরিসঞ্চালনের গুরুত্ব ও আমাদের করণীয়’ বিষয়ক মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ হেপাটোলজি সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের হেপাটোলজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. মো. শাহিনুল আলম।
অনুষ্ঠানে বক্তারা জানান, দেশের জনসংখ্যার প্রায় ৫ দশমিক ১ শতাংশ হেপাটাইটিস বি আক্রান্ত। অর্থাৎ এ রোগে প্রায় ৮৫ লাখ মানুষ আক্রান্ত। আর সি আক্রান্ত জনসংখ্যা প্রায় ০.৫ শতাংশ। সাধারণত রক্তের মাধ্যমে হেপাটাইটিস বি এবং সি ভাইরাস ছড়ায়। এর মধ্যে রয়েছে অনিরাপদ রক্ত সঞ্চালন, অনিরাপদ সুঁচ বা সিরিঞ্জের ব্যবহার ইত্যাদি। একই সুঁচের মাধ্যমে বিভিন্নজনে ইনজেকশন, ড্রাগ ব্যবহারের মাধ্যমেও এটি ছড়াতে পারে। অনিরাপদ ও পেশাদার রক্তদাতার রক্ত এ কারণেই ঝুঁকিপূর্ণ। এজন্যেই নিরাপদ রক্ত পরিসঞ্চালনকে গুরুত্ব দিতে হবে। হেপাটাইটিস প্রতিরোধে স্বেচ্ছা রক্তদানের ভূমিকা বিশেষ গুরুত্ব বহন করে। স্বেচ্ছা রক্তদাতাদের মাধ্যমেই হেপাটাইটিস নির্র্মূলের ২০৩০ সালের লক্ষ্য পূরণ করা সহজ হবে।
এর আগে বিকেলে প্রথম পর্বে মিলনমেলায় অংশ নেন রক্তদাতা ও গ্রহীতারা। আলাপচারিতা আর কৃতজ্ঞতায় সম্প্রীতির এক মেলবন্ধন গড়ে ওঠে সেখানে।
কোয়ান্টাম স্বেচ্ছা রক্তদান কার্যক্রমের প্রধান সমন্বয়ক মাদাম নাহার আল বোখারীর সভাপতিত্বে সন্ধ্যায় সেমিনার ও সম্মাননা পর্বে স্বাগত বক্তব্য রাখেন স্বেচ্ছা রক্তদান কার্যক্রমের পরিচালক মোটিভেশন এম রেজাউল হাসান। অনুষ্ঠানে ৫০ বার ও ২৫ বারের স্বেচ্ছা রক্তদাতাদের সম্মাননা ও ক্রেস্ট দিয়ে কৃতজ্ঞতা জানানো হয়।
প্রসঙ্গত, বিশ্ব রক্তদাতা দিবস ঘিরে তিন দিনব্যাপী বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে কোয়ান্টাম। বুধবার স্বেচ্ছা রক্তদাতা ও রক্তগ্রহীতার মিলনমেলা ও বিশেষ সেমিনার, বৃহস্পতিবার থাকছে রক্তদান কার্যক্রমের স্বেচ্ছাসেবীদের উদ্বুদ্ধকরণ এবং ১৪ জুন রক্তদাতা দিবসে কোয়ান্টাম ল্যাবে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত চলবে বিশেষ রক্তদাতা উৎসব। ল্যাবে গিয়ে রক্তদান করলে এক ব্যাগ রক্তকে একাধিক উপাদানে ভাগ করে একাধিক রোগীকে সেবা দেয়া যায়। তাই ল্যাবে গিয়ে রক্তদানে উদ্বুদ্ধ করতেই এমন আয়োজন করা হয়।