23 C
Dhaka
রবিবার, ডিসেম্বর ২২, ২০২৪

আজ পপগুরু আজম খানের ১৩ তম মৃত্যুবার্ষিকী

আজ বাংলাদেশের কিংবদন্তী পপ সম্রাট আজম খানের ১৩তম মৃত্যুবার্ষিকী। দীর্ঘদিন ক্যানসারের সঙ্গে লড়াই করে ২০১১ সালের ৫জুন অসংখ্য ভক্ত, শুভাকাঙ্ক্ষী ও আপনজনদের কাঁদিয়ে না ফেরার দেশে চলে যান পপ গানের গুরু হিসেবে খ্যাত এই সংগীত তারকা। অসংখ্য কালজয়ী গান উপহার দিয়ে ভক্ত-অনুরাগীদের মনে অমর হয়ে আছেন আজম খান।

আজম খানের জন্ম ১৯৫০ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি, ঢাকার আজিমপুরে। তার পুরো নাম মোহাম্মদ মাহবুবুল হক খান, বাবা আফতাব উদ্দিন আহমেদ ও মা জোবেদা খাতুন। শিশুদের মতন শুভ্র-সুন্দর হৃদয়ের অধিকারী ছিলেন আজম খান। ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার আগপর্যন্ত জসীম উদ্দিন রোডে কিশোর, যুবকদের সাথে ক্রিকেট খেলতেন, এলাকার শিশু-কিশোরদের সাথে নিয়ে সুইমিং পুলে সাঁতার কাটতেন।

১৯৬৯ সালে আজম খান গণঅভ্যুত্থানের সময় পাকিস্তানি শাসক গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে অবস্থা নেন। তখন তিনি ক্রান্তি শিল্পী গোষ্ঠীর সক্রিয় সদস্য ছিলেন। এছাড়াও তিনি পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর শোষণের বিরুদ্ধে গণসঙ্গীত প্রচার করতেন। শুরুতে তিনি আব্দুল লতিফের গাওয়া গণসংগীত গাইতেন। ১৯৭১ সালে আজম খানের বাবা ছিলেন সচিবালয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা। বাবার অনুপ্রেরণায় ৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন আজম খান। তখন তার বয়স ছিলো ২১ বছর। প্রশিক্ষণ শিবিরে অন্যান্য মুক্তিযোদ্ধাদের প্রেরণা যোগাতো তার গাওয়া গান। যুদ্ধ শেষেই আজম খান স্বাধীন দেশে গড়েছিলেন প্রথম ব্যান্ড দল ‘উচ্চারণ’।

বন্ধু নিলু ও মনসুরকে গিটারে, সাদেককে ড্রামসে এবং নিজেকে প্রধান ভোকাল করে নিজের সংগীত জীবনের স্মরনীয় অধ্যায় শুরু করেন আজম খান। ১৯৭৫ সালে তার দেশাত্মবোধক ব্যান্ড গান ‘রেল লাইনের ওই বস্তিতে’ বিপুল জনপ্রিয়তা পায়। এরপর প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে তার অসংখ্য গান স্থান পেয়েছে শ্রোতাদের হৃদয়ে। ১৯৯১-২০০০ সাল পর্যন্ত এই সংগীতশিল্পী গোপীবাগ ফ্রেন্ডস ক্লাবের পক্ষে ক্রিকেটও খেলেছেন। এছাড়া তিনি ‘গডফাদার’ নামে একটি বাংলা সিনেমায় ভিলেনের ভূমিকায় অভিনয়ও করেন।  পাশাপাশি বেশ কিছু বিজ্ঞাপনচিত্রেও তিনি মডেল হিসেবে কাজ করেছেন।

মহান মুক্তিযুদ্ধে আজম খান ছিলেন দুই নম্বর সেক্টরের একটি সেকশনের ইনচার্জ। তিনি মূলত যাত্রাবাড়ী-গুলশান এলাকার গেরিলা অপারেশনগুলো পরিচালনার দায়িত্বে নিয়োজিত ছিলেন। আজম খান ও তার সঙ্গীরা এর আগে মাদারটেকের কাছে ত্রিমোহনীতে সংগঠিত যুদ্ধে পাক সেনাদের পরাজিত করেন। তার অংশগ্রহণ করা এই গেরিলা দলের নাম ছিলো ক্র্যাক প্লাটুন।

প্রতিবছর এই দিনে পপ গুরু আজম খানকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন তার অসংখ্য ভক্ত, শুভাকাঙ্ক্ষী ও আপনজনেরা। এই সাধাসিধে মানুষটা দেশের স্বাধীনতায় অবদান রেখেছেন, দেশের সঙ্গীতকে প্রাণ দিয়েছেন। বিনিময়ে নেননি কিছুই।

তবুও দেশের সঙ্গিতাঙ্গন কিংবা সঙ্গীতশিল্পীদের পপ গুরুকে স্মরণ করার ব্যস্ততা না থাকাটা দেশের সঙ্গীতকেই যেন থিতু করে দিচ্ছে।

বিজ্ঞাপন

আরও পড়ুন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

বিশেষ প্রতিবেদন