মেয়াদ ছিল ২০ বছর। অথচ দু বছর পর থেকেই অকেজো হওয়া শুরু। ১০ বছরের মাথায় একেবারেই বিকল হয়ে, মুখ থুবরে পড়েছে ৬৫০ কোটি টাকার ডেমু ট্রেন। প্রকল্পটির অনুমোদন, দরপত্র প্রক্রিয়া, ক্রয় প্রক্রিয়াসহ প্রতিটি ধাপে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ থাকলেও এর ব্যর্থতার দায় নিচ্ছে না রেলের কেউ।
ঢাকা ও চট্টগ্রাম শহরের নিকটবর্তী এলাকার অফিসগামী যাত্রীদের দ্রুত যাতায়াতের স্বপ্ন দেখিয়েছিল ডেমু ট্রেন। চীনের তাঙসান রেলওয়ে ভেহিকল কোম্পানি লিমিটেডের কাছ থেকে ২০১৩ সালে কেনা এসব ট্রেনের আয়ু ধরা হয়েছিল ২০ বছর। কিন্তু নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণের জন্য প্রয়োজনীয় জনবল ও বিশেষায়িত কারখানা না থাকায় এক দশকের মধ্যেই রেলের বহর থেকে হারিয়ে যেতে বসেছে ডেমু ট্রেন।
এ প্রকল্পের প্রায় প্রতিটি ধাপেই যে ব্যাপক অনিয়ম হয়েছে তা বহুল আলোচিত। ডেমুর যন্ত্রাংশ স্থানীয়ভাবে কোথাও পাওয়া যায় না। যে কদিন ট্রেনগুলো চলাচল করেছে সে সময় মেরামতের পেছনে অতিরিক্ত ব্যয়ের কারণে লোকসান হয়েছে প্রায় ৩০ কোটি টাকা। সব মিলে ডেমু ট্রেনের পেছনে সরকারের ৬৫০ কোটি টাকার পুরোটাই গেছে জলে।
এ বিষয়ে পাওয়া যায়নি রেল কর্তৃপক্ষের বক্তব্য। রেলপথ মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে গঠিত তদন্ত কমিটির রিপোর্ট জমা দেওয়া হয়েছে গত বছরের মে মাসে। তদন্ত রিপোর্টের সুপারিশে বলা হয়েছে, ডেমু ট্রেনে ব্যবহৃত মডিউল, সেন্সর আনুষঙ্গিক যন্ত্রপাতি সংগ্রহ করা না গেলে ট্রেনগুলো মেরামত করা সম্ভব নয়।
ডেমু ক্রয় পরিকল্পনা থেকে শুরু করে বিদেশে যাওয়া কর্মকর্তা এবং বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা এর দায় এড়াতে পারেন না বলে মনে করেন এই পরিবহন বিশেষজ্ঞ।
সেই সাথে প্ল্যানিং কমিশন থেকে শুরু করে রেলপথ মন্ত্রণালয় এবং সংশ্লিষ্ট দফতরে এ প্রকল্পে জড়িতদের জবাবদিহি নিশ্চিত করা উচিত বলে মনে করেন পরিবহন বিশেষজ্ঞরা।