দলীয় মন্ত্রী-এমপিদের সন্তান, পরিবারের সদস্য ও নিকটাত্মীয়দের উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করতে নির্দেশনা দিয়েছে আওয়ামী লীগ । ১৮ এপ্রিল সকালে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদকদের এই নির্দেশনা দেন। দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা জানান, ইতোমধ্যে তারা দলের নির্দেশ জানাতে শুরু করেছেন। এরপরও কেউ ভোটে অংশগ্রহণ করলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এবার চার ধাপে হতে যাচ্ছে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন। প্রথম ধাপে ১৫০টি উপজেলায় ভোট গ্রহণের আনুষ্ঠানিকতা শুরু করেছে নির্বাচন কমিশন। এবার দলীয় প্রতীকে নির্বাচন না হওয়ায় প্রার্থীর সংখ্যাও বেড়েছে কয়েকগুণ। প্রথম ধাপে ১৪ উপজেলায় মন্ত্রী–সংসদ সদস্যদের সন্তান, পরিবারের সদস্য ও নিকটাত্মীয়রা চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়েছেন। তাদের অনেকের বিরুদ্ধে পেশিশক্তি ব্যবহারের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
নোয়াখালীর সুবর্ণচরে নিজের ছেলেকে ভোট না দিলে উন্নয়নকাজ না করার হুমকি দিয়েছেন স্থানীয় সংসদ সদস্য একরামুল করিম চৌধুরী। নাটোরে তথ্য ও প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদের শ্যালক লুৎফুল হাবিব ও তার লোকজনের বিরুদ্ধে প্রতিপক্ষ প্রার্থীকে অপহরণের অভিযোগ উঠেছে। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেছেন, বিষয়টিতে তারা সতর্ক দৃষ্টি রাখছেন। এমন প্রেক্ষাপটের মধ্যেই সকালে দলের এই সিদ্ধান্তের কথা জানান তিনি।
আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন নাগরিককে জানান, উদ্ভুত পরিস্থিতির কারণেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন আওয়ামী লীগ।
আওয়ামী লীগের দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, সারা দেশে মন্ত্রী–সংসদ সদস্যদের মধ্যে যাঁদের স্বজন ও পরিবারের সদস্য নির্বাচন করছেন, সেই তালিকা তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। ৩০ এপ্রিল দলের কার্য নির্বাহী কমিটির বৈঠকে এ নিয়ে আরও সিদ্ধান্ত আসবে।
আওয়ামী লীগের নেতারা জানিয়েছেন, এই নির্দেশনা শুধু প্রথম ধাপেই নয়, সব কটি ধাপের জন্যই প্রযোজ্য। ভোট সুষ্ঠু করা, ভোটারের উপস্থিতি বাড়ানো ও স্থানীয় কোন্দল–সংঘাত কমানোর লক্ষ্যেই এই সিদ্ধান্ত।
মন্ত্রী–সংসদ সদস্যদের হস্তক্ষেপ বন্ধে কঠোর নির্দেশনা
এদিকে, উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মন্ত্রী, সংসদ সদস্য ও দলীয় নেতারা যাতে কোনো ধরনের হস্তক্ষেপ করতে না পারেন, সে জন্য কঠোর সাংগঠনিক নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেছেন, প্রথম ধাপের নির্বাচন উপলক্ষে সারা দেশে প্রার্থীদের ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা এবং জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ পরিলক্ষিত হচ্ছে।
আজ বৃহস্পতিবার আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়ার সই করা এক বিবৃতিতে এসব কথা বলেন ওবায়দুল কাদের।
বিবৃতিতে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি নির্বাচনবিরোধী অবস্থান নেওয়ায় ভিন্ন প্রেক্ষাপটে আওয়ামী লীগকেও কৌশলগত অবস্থান গ্রহণ করতে হয়েছে। তাই আওয়ামী লীগ এবার দলীয় প্রতীক বরাদ্দ দেয়নি। দল ও দলের বাইরে জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য ব্যক্তি যাতে নির্বাচিত হন, সেটাই আওয়ামী লীগ প্রত্যাশা করে।