27.3 C
Dhaka
মঙ্গলবার, এপ্রিল ২২, ২০২৫

ইউক্রেনীয় সেনাদের ঘিরে ফেলা হয়নি, দাবি জেলেনস্কির

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি জানিয়েছেন, রাশিয়ার কুরস্কে অবস্থানরত ইউক্রেনীয় সেনাদের ঘেরাও করা হয়নি এবং তারা এখনও লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। জেলেনস্কির এই বক্তব্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিপরীত মন্তব্যের পরে এসেছে, যেখানে ট্রাম্প দাবি করেছিলেন, রাশিয়া ইউক্রেনীয় সেনাদের সম্পূর্ণভাবে ঘেরাও করে ফেলেছে। তবে জেলেনস্কি এই দাবি প্রত্যাখ্যান করে বলেন, ইউক্রেনীয় বাহিনী কুরস্ক অঞ্চলে এখনও প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে।

এই পরিস্থিতির মধ্যেই রাশিয়া দাবি করেছে যে, তারা কুরস্কের সুদজা শহর পুনরুদ্ধার করেছে এবং সেখানে দুটি গ্রাম—রুবানশিনা এবং জাওলেশেঙ্কা পুনরুদ্ধার করেছে। রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, তারা ইউক্রেনীয় সীমান্ত থেকে ১০ কিলোমিটার (৬ মাইল) দূরে এই অঞ্চলে অভিযান চালিয়েছে। মস্কো আরও জানায়, ৩০০ জনেরও বেশি বাসিন্দাকে সুদজার আশপাশ থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। রাশিয়ার শীর্ষ কর্মকর্তারা বলছেন, ইউক্রেনীয় সেনাদের বিতাড়িত করার জন্য তাদের বাহিনী এই অঞ্চলে তীব্র অভিযানে নেমেছে।

এদিকে, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি দাবি করেছেন, রাশিয়া সুমি অঞ্চলে নতুন আক্রমণ চালানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে এবং ইউক্রেনের সেনারা এর বিরুদ্ধে শক্তিশালী প্রতিরোধ গড়বে। তিনি বলেন, “আমরা এই হামলার ব্যাপারে সচেতন এবং আমাদের শীর্ষ জেনারেলরা এর বিরুদ্ধে লড়াই করতে প্রস্তুত।”

গত বছরের আগস্টে ইউক্রেনীয় বাহিনী রাশিয়ার কুরস্ক অঞ্চলে ব্যাপক আক্রমণ চালিয়ে বেশ কয়েকটি গ্রাম দখল করেছিল।

তবে সামরিক বিশ্লেষকরা জানিয়েছেন, রাশিয়ার বাহিনী ইউক্রেনীয় সেনাদের বিতাড়িত করার খুব কাছাকাছি পৌঁছে গেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রাশিয়া কুরস্ক অঞ্চলে তাদের আধিপত্য ফিরে পাওয়ার জন্য আরো কঠোর অভিযান চালাতে পারে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আগেই উল্লেখ করেছিলেন, রাশিয়া ইউক্রেনীয় সেনাদের সম্পূর্ণভাবে ঘেরাও করে ফেলেছে। তবে জেলেনস্কি এই তথ্যকে মিথ্যা বলে দাবি করেন এবং বলেন, ইউক্রেনীয় সেনারা এখনও কুরস্কে শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছে। তিনি জানান, ইউক্রেনের সেনারা নিজেদের অবস্থান রক্ষা করতে সক্ষম এবং রাশিয়ার আক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই অব্যাহত রেখেছে।

এছাড়া, ইউক্রেনের নতুন অস্ত্র প্রযুক্তি সম্পর্কে জানিয়ে, জেলেনস্কি জানিয়েছেন, ইউক্রেন তার নিজস্ব “লং নেপচুন” ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি করেছে, যার পাল্লা ১০০০ কিলোমিটার (৬২১ মাইল) পর্যন্ত হতে পারে। এই ক্ষেপণাস্ত্র ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা সক্ষমতা আরও বৃদ্ধি করবে এবং দেশের নিরাপত্তা নিশ্চিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। জেলেনস্কি বলেন, ইউক্রেনের সেনারা এখন এসব নতুন প্রযুক্তি ব্যবহার করে যুদ্ধের পরিস্থিতি নিজেদের পক্ষেও পরিবর্তন করতে সক্ষম হবে।

এদিকে, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, তিনি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব নীতিগতভাবে সমর্থন করেন, তবে তিনি কয়েকটি শর্তের কথা উল্লেখ করেছেন, যা এখনও পূর্ণাঙ্গভাবে আলোচিত হয়নি। পুতিন বলেছেন, তিনি যুদ্ধবিরতি কার্যকর করতে প্রস্তুত, তবে কিছু শর্ত পূরণ না হলে যুদ্ধ চলতেই থাকবে।

এদিকে, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারও এই পরিস্থিতিতে মন্তব্য করেছেন, রাশিয়ার সঙ্গে শান্তি চুক্তি হলে ইউরোপীয় দেশগুলো এবং পশ্চিমা মিত্ররা ইউক্রেনকে আরও শক্তিশালীভাবে সমর্থন দিতে প্রস্তুত রয়েছে। তিনি জানিয়েছেন, আগামী সপ্তাহে ইউক্রেনকে সমর্থন দেয়ার জন্য নতুন প্রতিরক্ষা পরিকল্পনা তৈরি করা হবে।

বর্তমানে ইউক্রেন এবং রাশিয়ার মধ্যে যুদ্ধের পরিস্থিতি আরো জটিল হয়ে উঠেছে, এবং দুই পক্ষই নতুন কৌশল গ্রহণ করেছে। ইউক্রেন নিজের প্রতিরক্ষা সক্ষমতা বৃদ্ধি করছে, যেখানে রাশিয়া নতুন আক্রমণ পরিকল্পনা করছে। এরই মধ্যে, কূটনৈতিক চেষ্টাগুলি শান্তির জন্য একটি সম্ভাবনা তৈরি করছে, কিন্তু পরিস্থিতি এখনও অত্যন্ত অস্থির রয়েছে।

পড়ুন: ইউক্রেনীয় বাহিনীর ওপর রুশ স্পেশাল ফোর্সের হামলা

দেখুন: রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে কে জিতবে? |

ইম/

বিজ্ঞাপন

আরও পড়ুন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

বিশেষ প্রতিবেদন