28 C
Dhaka
বৃহস্পতিবার, অক্টোবর ১০, ২০২৪
spot_imgspot_img

ইরানের বিরুদ্ধে যেকোনো পদক্ষেপের সম্মিলিত জবাবের হুঁশিয়ারি সেনাপ্রধানের

ইরানের বিরুদ্ধে কোনো ধরনের হামলার জোরালো এবং সম্মিলিত জবাব দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ইরানের সেনাপ্রধান মেজর জেনারেল আব্দলরহিম মৌসাভি। ১৫ এপ্রিল দেশটির সেনাদিবস উপলক্ষে এক বিবৃতিতে তিনি এ কথা জানিয়েছেন। সেসময় তিনি ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর আত্মরক্ষা এবং শত্রুকে প্রতিহত করার শক্তির প্রশংসা করেন। মৌসাভি জানিয়েছেন, ‘‘ইরানের এ হামলা ছিলো নির্লজ্জ আগ্রাসনের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত প্রতিবাদ। এ হামলায় অত্যাচারিত হওয়া মানুষ খুশি হয়েছে, বিশেষত ফিলিস্তিনবাসী‘’।

১ এপ্রিল সিরিয়ায় ইরানি দূতাবাসে হামলার জবাবে ১৩ এপ্রিল ইসরায়েলে হামলা করে ইরানের ইসলামিক রেভ্যুলেশনারী গার্ডস কর্পস- আইআরজিসি। ইরানের ইসলামি শাসনকে টিকিয়ে রাখার দায়িত্বে ১৯৭৯ সালে দেশটির ইসলামি বিপ্লবের সময় মিলিশিয়া বাহিনী হিসেবে আইআরজিসি গঠিত হয় । মিলিশিয়া বাহিনী মূল সেনাবাহিনীর অংশ নয়। ১ লাখ ২৫ হাজার সদস্য থাকা এ সংস্থাটি মূলত দেশটির একটি অভিজাত সামরিক শাখা। ৯০ হাজার সদস্য থাকা আধাসামরিক বাহিনী বাসিজ মিলিশিয়া বাহিনীও আইআরজিসির নিয়ন্ত্রণে পরিচালিত হয়। শুরুতে শুধু দেশের ভেতরে আইআরজিসির কর্মকাণ্ড পরিচালিত হলেও ১৯৮০ সালে ইরাকের একনায়ক সাদ্দাম হোসেন ইরানে হামলা করলে ইরানের ইসলামি বিপ্লবের প্রতিষ্ঠাতা আয়াতুল্লাহ রুহুলুল্লা খামেনি এ সংস্থাকে নিজস্ব স্থল, বিমান ও নৌ বাহিনী গঠন করে দেন।

ইরানে আইআরজিসির ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় হতভম্ব হয়ে যাওয়া ইসরায়েল ইরানের বিরুদ্ধে কোন ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া যায় সে বিষয়ে আলোচনায় জরুরিভাবে যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভার বৈঠকের আহবান করতে বাধ্য হয়।

মন্ত্রিসভার বৈঠকে কি সিদ্ধান্ত হলো সে বিষয়ে এখনো চূড়ান্ত কিছু জানায়নি ইসরায়েল। তবে বিবিসিসহ কয়েকটি গণমাধ্যমের খবরে জানানো হয়েছে, ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচিতে অবরোধ আরোপের আহবান জানিয়েছে ইসরায়েল। ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী ইসরায়েল ডিফেন্স ফোর্স-আইডিএফ এর প্রধান হার্জি হালেভি বলেছেন, ইসরায়েলের ওপর হামলাকারীদের ছাড় দেওয়া হবে না। ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ জানিয়েছেন, কূটনৈতিকভাবে ইরানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। ৩২টি দেশকে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচির বিরুদ্ধে অবরোধ দিতে চিঠি দেওয়া হয়েছে।

ইসরায়েলকে পরমাণু শক্তিধর দেশ মনে করা হলেও দেশটির রাষ্ট্রীয় নীতি অনুসারে তারা এ বিষয়ে পরিস্কারভাবে কিছু বলে না। অন্যদিকে ইরানের পরমাণু অস্ত্র নেই এবং ইরান অস্ত্র তৈরির চেষ্টা করছে না বলেও দাবি করে আসছে। যদিও ২০২৩ সালে পরমাণু কর্মসূচির আন্তর্জাতিক যাচাইকারী দল দাবি করে, ইরানের ভূগর্ভস্থ ফর্ডো কেন্দ্রে পরমাণু অস্ত্র তৈরির কাছাকাছি পর্যায়ের প্রায় ৮৩.৭ শতাংশ বিশুদ্ধতায় সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম পাওয়া যায়। একটি পরমাণু অস্ত্র তৈরি করতে ৯০ শতাংশ বিশুদ্ধতায় সমৃদ্ধ ২৫ কেজি ইউরেনিয়াম প্রয়োজন হয়। আন্তর্জাতিক আনবিক শক্তি সংস্থা আইএইএ জানিয়েছে, ৬০ শতাংশ বিশুদ্ধতায় সমৃদ্ধ ৪৩.১ কেজি ইউরেনিয়াম আছে ইরানের।   

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী রিশি সুনাক সবপক্ষকে ধৈর্য ধরার আহবান জানিয়েছেন। ব্রিটেনের গোয়েন্দা সংস্থা এম আই সিক্সের সাবেক প্রধান স্যার জন সয়ার্স জরুরি মনে করছেন না আইআরজিসিকে নিষিদ্ধ করা। তিনি জানিয়েছেন, ‘‘ইরান এখন সন্ত্রাসের পৃষ্ঠপোষক হয়েছে। তবে একটি গোষ্ঠীর থেকে একটি রাষ্ট্র যখন এ কর্মকাণ্ডে যুক্ত হয় তখন তার হুমকিও আরও বেশি।’’

ইরানের সঙ্গে চলমান উত্তেজনার মাঝেও গাজার বেইত হানুন শহরে হামলা অব্যাহত রেখেছে ইসরায়েল। ১৬ এপ্রিল সকালে ওই শহরে ট্যাংক এবং সাজোয়া যান নিয়ে ইসরায়েলি বাহিনী প্রবেশ করে এবং ৩টি স্কুল ঘিরে ফেলে যেখানে বাস্তুচ্যুত মানুষরা আশ্রয় নিয়েছিলো। এর আগে সেখানে বোমা ও কামানের গোলা বর্ষণ করা হয়। 

spot_img
spot_img

আরও পড়ুন

spot_img

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

বিশেষ প্রতিবেদন