স্বাধীন বাংলাদেশে প্রথম বই নিষিদ্ধ হয় নব্বইয়ের দশকে। তবে, স্বাধীনতার কয়েক বছরের মধ্যেই কবিতা লিখে আলোচনা ও বিতর্কের জন্ম দিয়ে এক পর্যায়ে দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়েছিলেন কবি দাউদ হায়দার। সেই সময় দাউদ হায়দারের বিরুদ্ধে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেওয়ার অভিযোগে একটি মামলাও দায়ের করা হয়।
তারপর একে একে নিষিদ্ধ হতে থাকে অনেক বই। তালিকায় আছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক হুমায়ুন আজাদের লেখা ‘নারী’। ভারতে বসবাসরত বাংলাদেশি নারীবাদী লেখক তসলিমা নাসরিনের বেশ কয়েকটি বই নিষিদ্ধ হয়েছে বাংলাদেশে।
বাংলাদেশে ১৯৯৯ সালের মার্চে মতিউর রহমান রেন্টুর ‘আমার ফাঁসি চাই’ নামক একটি বই প্রকাশিত হয়, এবং অল্প কিছুদিনের মধ্যেই সরকার বইটি রাজনৈতিক কারণে নিষিদ্ধ করে। গত সরকারের আমলেও নিষিদ্ধ হয়েছিলো অনেক বই।
তবে আওয়ামী লীগের সরকার পতনের পর যে সব ইতিহাস-ভিত্তিক বই একসময় ছিল নিষিদ্ধ, কিংবা চাপা পড়ে ছিল অন্ধকারে- সেগুলাই এখন বেস্টসেলার।
হরদম বিক্রি হচ্ছে ‘আমার ফাঁসি চাই’ বইটি। প্রকাশের পরেই ইতিহাস বিকৃতি ও রাজনৈতিক বিতর্ক ছড়ানোর অভিযোগে নিষিদ্ধ করা হয় বইটি। নিষিদ্ধের পর দীর্ঘদিন বইটিকে আর প্রকাশ্যে দেখা যায়নি।
১৯৮১ থেকে ৯৭ সাল পর্যন্ত তিনি ছিলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত উপদেষ্টা ছিলেন মতিউর রহমান রেন্টু। সে সময়ের রাজনৈতিক ও সামাজিক প্রেক্ষাপটে লেখা এ বইয়ে হাসিনা ও তার দলের নানা অনিয়মের কথা তুলে ধরেন লেখক।
শেখ মুজির রহমানকে সপরিবারে হত্যার সাথে জড়িত মেজর শফিকুল হক ডালিমের বই ‘আমি মেজর ডালিম বলছি’। ২০০২ সালে প্রকাশিত এই বইটি বিক্রি হচ্ছে পুরোদমে। মেজর ডালিমের ‘যা দেখেছি যা বুঝেছি যা করেছি’ বইটিও নতুন করে পেয়েছে ব্যাপক জনপ্রিয়তা।
শারমিন আহমেদের লেখা ‘নেতা ও পিতা’, পিনাকী ভট্টাচার্যের লেখা ‘স্বাধীনতা উত্তর বাংলাদেশ’, এ কে খন্দকারের ‘১৯৭১ : ভেতরে বাইরে’, আহমেদ মুসার ‘ইতিহাসের কাঠগড়ায় আওয়ামী লীগ’— বিক্রি হচ্ছে সবচেয়ে বেশি।
পাশাপাশি মহিউদ্দিন আহমেদের সম্প্রতি প্রকাশিত বই ‘জামাতে ইসলামী : উত্থান, বিপর্যয়, পুনরুত্থান’ নিয়েও আগ্রহ দেখাচ্ছেন মানুষ। চমকপ্রদ সব তথ্য থাকার কারণে পাঠকের মধ্যে সাড়া ফেলেছে বইগুলো।