সাবেক সঙ্গীর জন্য জীবনে আলাদা সময় এবং শুভকামনা রাখা জরুরী, যখন বিয়েতে বিচ্ছেদের মতো ঘটনা ঘটে। যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের সমাজবিজ্ঞানী অ্যামি মাজুর এমনটাই মনে করছেন। মার্কিন বার্তা সংস্থা সিএনএনকে মাজুর জানিয়েছেন, দাম্পত্য সম্পর্ক ছিন্ন হওয়ার পরও তিনি তার সন্তান এবং স্বামীর সঙ্গে এখনো ছুটির দিন এবং নানা উৎসবে একসঙ্গে সময় কাটান এবং এতে তার এবং তার সন্তানদের ওপর বাড়তি কোন চাপ পড়েনা।
যদিও মাজুরের তার সাবেক স্বামীর সঙ্গে যে সুসম্পর্ক বিচ্ছেদের পরে সব সম্পর্কই যে সুখকর হবে এমনটা নয়। মাজুর তার সাবেক স্বামীর সাথে ইতিবাচক এ সম্পর্ক তার পরিবারের জন্যও কাজে লাগছে। তিনি জানিয়েছেন, বিয়ে হওয়ার সময়ে তারা ততটা অভিজ্ঞ ছিলেন না। যখন বিষয়গুলো তারা ঠিকভাবে বুঝতে শুরু করেছেন, তখন বিয়ের সম্পর্কের বাইরে থেকেও তারা নতুনভাবে তাদের সম্পর্ককে এগিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
সাজানো সংসার ভেঙ্গে যাওয়া, কারো সাথে জড়িয়ে থাকা নামের পরিবর্তন, একে-অন্যের সঙ্গে থাকা আবেগ ও নিয়মকানুনসহ নানা কিছুর পরিবর্তন করতে হয় দাম্পত্য সম্পর্কের ইতি হলে। তবে হঠাৎ করেই সঙ্গীহীন হয়ে পড়লে সেখান থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য বেশ কিছু সমর্থনের প্রয়োজন হয়। ধর্মীয় নেতা, বন্ধু, বিচ্ছেদ এর জীবনকে ইতিবাচক ধারায় চালাতে করণীয় ঠিক করতে সহায়তাকারী দল, এমনকি বই এবং গণমাধ্যমও এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। জীবনসঙ্গীর জায়গায় স্থান নিতে শুরু করে এসব মাধ্যম। এক্ষেত্রে বন্ধুর সঙ্গে সপ্তাহে কয়েকবার একসঙ্গে সময় কাটানোর মতো বিষয় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
একটি সম্পর্কের অবসানে নতুন আরেকটি সম্পর্কের শুরু হয় বিয়ে বিচ্ছেদের মাধ্যমে। সাবেক স্ত্রী বা স্বামী হতে পারে ভবিষ্যতে পথ চলার ভালো সঙ্গী। এক্ষেত্রে অভিজ্ঞদের মত, বিচ্ছেদের পরের সম্পর্কটি নির্ভর করে দুজনেরই ওপর। তারা চাইলে নতুন ইতিবাচক সম্পর্ক বজায় রাখতে পারে।
আবার চাইলে সেটা নাও করতে পারে। ইতিবাচক সম্পর্ক থাকলে সন্তানদের ওপরও বাবা-মা দুজনেরই গুরুত্ব বেশি থাকে। যদিও বিয়ে বিচ্ছেদের পর সম্পর্কে আগের মতো অধিকারের বিষয়টি না থাকায় সম্পর্কের গুরুত্ব কমে আসে। এছাড়া সাবেক সঙ্গীর জীবনে নতুন কেউ আসলে, তার সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার পর নতুন পরিস্থিতির মোকাবেলা করা, দাম্পত্য সম্পর্কে থাকাকালীন গুরুত্বপূর্ণ তারিখগুলো মনে করে সেসব উদযাপনের ধরন পরিবর্তনসহ নানা সংকটকালও রয়েছে এক্ষেত্রে। বিচ্ছেদকালীন জটিলতা কাটিয়ে জীবনকে আরও অর্থবহ করার শিক্ষাও রয়েছে দাম্পত্য সমাপ্তিতে।
সন্তানদের দেখভালে নতুন জটিলতাও দেখা দিতে পারে। কারণ, স্বামী-স্ত্রী থেকে সন্তানদের লালনপালন এক বিষয় আর বিচ্ছিন্ন হয়ে সন্তানদের দেখাশোনা করা অন্য বিষয়। এসব ক্ষেত্রে দুজনের মাঝে দ্বন্দ্ব থাকলেও এক হয়েই কোন সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে হয়।