স্বপ্নজয়ের দুই বছর পূর্ণ হলো আজ। ২০২২ সালের ২৫ জুন পদ্মা সেতুর উদ্বোধন হয়। দেশের ইতিহাসের যোগাযোগ খাতে সবচেয়ে বড় অবকাঠামো এই সেতু। যার ফলে দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থা বিশেষ উচ্চতায় পৌঁছে যায়। ৬.১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এই সেতু পদ্মা নদী দিয়ে বিচ্ছিন্ন দক্ষিণকে মধ্য ও উত্তরাঞ্চলের সঙ্গে এক সুতায় বেঁধেছে।
২০২২ সালের এই দিনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদ্মা সেতুর উদ্বোধন করেন। এর এক দিন পর থেকেই শুরু হয় সেতুতে যান চলাচল। যেন দেখতে দেখতেই সেতু চালু হওয়ার দুই বছর পেরিয়ে গেল আজ। আর প্রধানমন্ত্রী ২০২৩ সালের ১০ অক্টোবর উদ্বোধন করেন পদ্মা সেতুর রেলপথ।
পদ্মা সেতু দিয়ে এ পর্যন্ত পাড় হয়েছে প্রায় সোয়া এক কোটি গাড়ি। সেতু থেকে প্রায় ১৭শ’ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করা হয়েছে। এছাড়াও পদ্মা সেতু পারাপারে ১৩ ধরনের যানবাহনের জন্য টোল নির্ধারণ করা আছে। ২০২২ সালের জুন থেকে ২০২৪ সালের ২৩ জুন পর্যন্ত টোল থেকে এক হাজার ৬৪৫ কোটি ২৪ লাখ ৯৮ হাজার ১৫০ টাকা আয় করা হয়েছে। সেতু বিভাগের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, পূর্বাভাসে যা বলা হয়েছিল তার আড়াই থেকে তিন গুণ বেশি টোল আদায় করা হয়েছে।
দুই বছর আগেও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষকে রাজধানী ঢাকায় আসতে দীর্ঘ সময় ফেরিঘাটে অপেক্ষা করতে হতো। যানজট, কুয়াশার মতো বিপত্তি বা ফেরির সমস্যা হলে দুর্ভোগের শেষ ছিল না সাধারণ জনগণের। পদ্মা সেতুর ফলে যাতায়াতের দূরত্ব, সময় এবং ব্যয় সবই কমেছে।
পদ্মা সেতু চালুর পর দেশের দক্ষিণাঞ্চলের যোগাযোগব্যবস্থার পুরো চিত্রই পাল্টে গেছে। সড়ক পরিবহন ব্যবসার প্রসার হয়েছে। খুলনাসহ দক্ষিণ-পশ্চিমের জেলাগুলোতে নতুন নতুন বিলাসবহুল বাস চলাচল শুরু হয়েছে। এসব অঞ্চলের মানুষ এখন সকালে ঢাকায় এসে কাজ সেরে বিকেল বা সন্ধ্যার মধ্যে বাড়ি ফিরে যেতে পারছে।
সেতু সচিব মো. মঞ্জুর হোসন বলেন, পদ্মা সেতু প্রকল্পের কাজ শেষ হলেও মেইনটেন্যান্সের কাজ চলমান থাকবে। প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্ন বাস্তবায়নে আমরা কাজ করতে পেরেছি। আর জনগণ উপকৃত হলেই আমাদের সবচেয়ে বড় পাওয়া হবে বলে মনে করি।