28.4 C
Dhaka
সোমবার, এপ্রিল ২১, ২০২৫

নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি জাকির খানের মুক্তি

নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি জাকির খান মুক্তি পেয়েছেন। কারাগার থেকে বের হওয়ার পর বিএনপির নেতাকর্মী ও জাকির খাঁনের সমর্থকরা তাকে সংবর্ধনা জানান। ফুলের মালা দিয়ে বরণ করে নেন। রোববার (১৩ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ১০ টায় দুই বছর সাত মাস ১০ দিন কারাভোগের পর নারায়ণগঞ্জ জেলা কারাগার থেকে জামিনে মুক্তি পান। ছাদখোলা গাড়িতে করে যাওয়ার সময় জাকির খাঁন সড়কের দু’পাশে দাড়ানো শত শত বিএনপির নেতাকর্মী ও সমর্থকদেও সাথে হ্যান্ডশেক করেন। আদালতের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হওয়ায় মুক্তি পান।

নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি জাকির খাঁনের বিরুদ্ধে চারটি হত্যা মামলাসহ মোট ৩৩টি মামলা ছিল।

দীর্ঘদিন পলাতক থাকার পর ২০২২ সালের ৩ সেপ্টেম্বর র‌্যাব-১১ এর ঢাকার বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা থেকে জাকির খাঁনকে গ্রেপ্তার করে। এরপর ধাপে ধাপে বিভিন্ন মামলায় জামিন পান তিনি। চলতি বছরের ৭ জানুয়ারি সাব্বির আলম হত্যা মামলার রায়ে তিনি এবং মামলার অন্য অভিযুক্ত আসামিরা খালাস পান। নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক মমিনুল ইসলাম এ রায় ঘোষণা করেন।


এরপর জাকির খানের আইনজীবী অ্যাডভোকেট রাজিব মন্ডল জানান, জাকির খানের বিরুদ্ধে ৩৩টি মামলা ছিল। এরমধ্যে ৩০টিতে তিনি খালাস পেয়েছেন। এ মামলায় খালাস পাওয়া অন্যান্যরা হলেন জাকির খানের দুই ছোটভাই জিকু খান ও মামুন খান, তার সহযোগী জঙ্গল ওরফে লিটন, মোক্তার হোসেন, নাজির আহমেদ, আব্দুল আজিজ এবং মৃত মনিরুজ্জামান শাহীন। বাকি দুটি মামলায় জামিনে আছেন। আদালতের কাগজপত্র কারাগারে পৌঁছেছে, তাই তার মুক্তিতে আর কোনো বাধা নেই।

তৎকালিন সময়ে র‌্যাব এর সূত্র মতে, নব্বইয়ের দশকে জাতীয় পার্টির ছাত্রসংগঠন থেকে রাজনীতিতে যাত্রা শুরু করেন জাকির। পরে তিনি বিএনপির ছাত্রসংগঠন ছাত্রদলের নেতৃত্বে আসেন। দায়িত্ব পান নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের সভাপতির পদে। তার বিরুদ্ধে সন্ত্রাস, অস্ত্র, মাদক, চাঁদাবাজিসহ বহু অভিযোগ ছিল।

র‌্যাবের ভাষ্য অনুযায়ী, সাব্বির হত্যা মামলার পর জাকির খান দেশ ছেড়ে থাইল্যান্ডে পালিয়ে যান। এরপর প্রায় দুই দশক দেশে না থেকে ২০২১ সালে ভারত হয়ে ফের দেশে আসেন। পরে র‌্যাব তাকে গ্রেপ্তার করে।

গ্রেপ্তারের পর সাব্বির হত্যা মামলার বিচার কাজ গতি পায়। গত বছরের ১৫ ফেব্রুয়ারি এই মামলার বাদী তৈমুর আলম খন্দকার আদালতে সাক্ষ্য দেন। এরপর উচ্চ আদালতের নির্দেশে মামলাটির দ্রুত নিষ্পত্তি ঘটে।

কারাগার থেকে বেড়িয়ে জাকির খান বলেন, ওয়াদা করছি আমরা ঐক্যবন্ধ হয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার ৩১ দফা বাস্তবায়ন করব।  তিনি বলেন, যদি আমরা গাজায় ইজরাইলি হামলার প্রতবিাদ না করি তাহলে মুসলমানদের কাতারে নেই। তিনি বলেন, আমরা রাজনৈতিক ভাবে অনেক হয়রানি হয়েছে শেখ হাসিনার সময়ে। পরবর্তী প্রজন্ম যেন এমন মিথ্যা হয়রানির শিকার না হয় সেই চেষ্ঠা করব।

জাকির খানের আইনজীবী অ্যাডভোকেট রাজিব মন্ডল জানান, জাকির খাঁনের জনপ্রিয়তায় হিস্যনিত হয়ে ষড়যন্ত্রমুলক মামলার শিকার হয়েছিলেন। একটি মহল সব সময় চেয়েছে যেন জাকির খাঁনের জামিন না হয়, কারাগার থেকে যেন বের হতে না পারে। আমরা আইনী লড়াইয়ের মধ্যদিয়েই জাকির খানকে মুক্ত করতে পেরিছি। তিনি বলেন, জাকির খাঁনের মুক্তিতে আজ শহরে উৎসব মুখর পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছে। এটাই প্রমাস করে তার জনপ্রিয়তা।

উল্লেখ্য, ২০০৩ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি সকালে মাসদাইর এলাকায় নিজ বাসার সামনে গুলি করে হত্যা করা হয় বিকেএমইএ’র সাবেক সহ-সভাপতি সাব্বির আলম খন্দকারকে। নিহত সাব্বির বিএনপি চেয়ারপারসনের সাবেক উপদেষ্টা (বহিষ্কৃত) ও বর্তমানে তৃণমূল বিএনপির মহাসচিব অ্যাডভোকেট তৈমুর আলম খন্দকারের ছোট ভাই।
ঘটনার পর তার বড় ভাই তৈমুর আলম খন্দকার বাদী হয়ে ফতুল্লা মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলায় নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের তৎকালীন বিএনপি সংসদ সদস্য মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন, জাকির খানসহ কয়েকজনকে অভিযুক্ত করা হয়। সিআইডি তদন্ত শেষে ২০০৬ সালে জাকির খানসহ আটজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করে।

পড়ুন: নারায়ণগঞ্জে দুই নারী ও এক শিশুর বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ

দেখুন: ৬ কোটি টাকার বিক্রির আশা নারায়ণগঞ্জের ফুল চাষীদের 

ইম/

বিজ্ঞাপন

আরও পড়ুন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

বিশেষ প্রতিবেদন