২৩/০৫/২০২৫, ২১:২৭ অপরাহ্ণ
28 C
Dhaka
২৩/০৫/২০২৫, ২১:২৭ অপরাহ্ণ

নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের সুপারিশমালা নিয়ে সাধারণ আলেম সমাজের গভীর উদ্বেগ

অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের সুপারিশমালার বিরুদ্ধে গভীর উদ্বেগ জানিয়েছে সাধারণ আলেম সমাজ।

রোববার (২০ এপ্রিল) গণমাধ্যমে পাঠানো সাধারণ আলেম সমাজের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘বাংলাদেশে নারীর অধিকার একটি গুরুত্বপূর্ণ ও স্পর্শকাতর ইস্যু। এটি কোনো নির্দিষ্ট শ্রেণি, মতাদর্শ কিংবা লাইফস্টাইলের একচেটিয়া বিষয় নয়। আমাদের দেশের নারীরা বৈচিত্র্যময় সমাজ ও সংস্কৃতির প্রতিনিধিত্ব করেন, যেখানে পল্লী সমাজের গৃহবধূ থেকে শুরু করে শহুরে চাকরিজীবী, হিজাব পরা মাদরাসা শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে উচ্চশিক্ষিত পেশাজীবী নারী পর্যন্ত অন্তর্ভুক্ত। অথচ আমরা গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি, সম্প্রতি গঠিত নারী অধিকার সংস্কার কমিশন নামে একটি কাঠামো এ দেশের নারীদের এই বৈচিত্র্যময় বাস্তবতা, বিশ্বাস ও জীবনযাত্রাকে পুরোপুরি উপেক্ষা করে গঠিত হয়েছে।’

এতে আরও বলা হয়, ‘এই কমিশনে বোরকা-হিজাব পরা কোনো নারী নেই, মাদরাসা-শিক্ষিত নারী তো দূরের কথা, ইসলামি জীবনদর্শনে বিশ্বাসী নারীদেরও কোনো প্রতিনিধিত্ব নেই। অথচ দেশের অন্তত অর্ধেক নারী হিজাব, নিকাব কিংবা বোরকা পরেন, যাদের জীবনবোধ ও মূল্যবোধ ইসলামি শরীয়ত ও সংস্কৃতির সঙ্গে গভীরভাবে যুক্ত। এই নারীরা কি নারী নন? নাকি নারী অধিকার মানেই কেবল শহুরে এক শ্রেণির এলিট নারীবাদী চিন্তার একচেটিয়া উপস্থাপন?’

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘এর চেয়েও ভয়ংকর হলো, এই কমিশন এখন ধর্মীয় পারিবারিক আইন ও উত্তরাধিকার নিয়ে প্রশ্ন তুলছে, যেটা এই দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমান জনগণের ধর্মীয় বিশ্বাসের কেন্দ্র। আমরা স্পষ্টভাবে বলতে চাই, মুসলিম পারিবারিক আইন কোনো একক শ্রেণির বোঝার পরিসরে পড়ে না। এটি একটি পবিত্র শরয়ী কাঠামো, যার সঙ্গে সমাজের গভীর আস্থা ও আবেগ জড়িয়ে আছে। এটিকে ছুঁতে হলে চাই সর্বোচ্চ সংবেদনশীলতা, বিনয়, ব্যাখ্যা, পর্যালোচনা এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে প্রতিনিধিত্ব।’

সাধারণ আলেম সমাজ দৃঢ়ভাবে নিম্নোক্ত দাবিগুলো পেশ করেছে—

১. বর্তমান পক্ষপাতদুষ্ট ও জনবিচ্ছিন্ন নারী অধিকার সংস্কার কমিশন বাতিল করতে হবে।

২. নতুন করে একটি স্বাধীন, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও প্রতিনিধিত্বশীল কমিশন গঠন করতে হবে, যেখানে কেবল শহুরে এলিট নয়; গ্রামীণ, প্রান্তিক, হিজাবী, ইসলামি জীবনচর্চাকারী নারী, মাদরাসা শিক্ষিত নারী এবং ধর্মীয় বিশেষজ্ঞ নারীরা সম্মানজনক প্রতিনিধিত্ব পাবেন।

৩. মুসলিম পারিবারিক ও উত্তরাধিকার আইন নিয়ে কোনো আলোচনা করতে হলে—তা অবশ্যই ইসলামী ফিকহ, শরীয়ত, জাতীয় ঐতিহ্য ও জনগণের বিশ্বাসের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে করতে হবে।

৪. মুসলিম পারিবারিক আইনের বাস্তব প্রয়োগে সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে তা দীর্ঘস্থায়ী সমাধানের জন্য ধর্মীয় এবং নারীদের ন্যায্য অধিকার নিয়ে কাজ করে এমন আইনজ্ঞদের সমন্বয়ে একটি শরিয়া কাউন্সিল গঠন করতে হবে। কারণ, এ ধরনের পরিস্থিতিতে ধর্মীয় আইনের সঠিক ব্যাখ্যা ও প্রয়োগ নিশ্চিত করা জরুরি, যাতে উভয় পক্ষের ন্যায্যতা রক্ষা পায়।

পড়ুন : নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন দেখে বিস্মিত হয়েছেন জামায়াত আমির

বিজ্ঞাপন

আরও পড়ুন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

বিশেষ প্রতিবেদন