27.3 C
Dhaka
মঙ্গলবার, এপ্রিল ২২, ২০২৫

পুনর্গঠন ও নির্বাচনের চিন্তা নেই আ.লীগের নেতাকর্মীদের

আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মাথায় এখন শুধুই টিকে থাকার চিন্তা। পুনর্গঠন, আগামী জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণ বা দল গোছানো নিয়ে তাদের কোনো ভাবনা নেই।

বিএনপি-জামায়াত কর্মীদের হামলা এবং জুলাই অভ্যুত্থানের গণহত্যা ও অন্যান্য হামলার মামলায় গ্রেপ্তার এড়াতে নেতাকর্মীরা আত্মগোপনে রয়েছেন।

টানা ১৫ বছর ক্ষমতায় থাকার পর নজিরবিহীন দুর্নীতি ও গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের মধ্য দিয়ে গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ ক্ষমতাচ্যুত হয়। তৃণমূলের বেশিরভাগ নেতাকর্মী দলের বর্তমান অবস্থার জন্য সরাসরি দায়ী করছেন ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে।

তারা বলছেন, আত্মগোপনে থাকা শীর্ষ নেতারা তৃণমূল পর্যায়ের কারও কাছে এখনও পুনর্গঠন কোনো দিকনির্দেশনা পাঠাননি।

৫ আগস্টের পর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক কার্যক্রম সম্পূর্ণ ভেঙে পড়ে। দীর্ঘ শাসনামলে নির্বাচনে কারচুপি ও রাজনৈতিক বিরোধীদের দমন করে কার্যত একদলীয় শাসন প্রতিষ্ঠা করেছিল আওয়ামী লীগ।

পুনর্গঠন ও নির্বাচনের চিন্তা নেই আ.লীগের নেতাকর্মীদের

জুলাই-আগস্টে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে বিক্ষোভ দমনে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। এতে শত শত মানুষ নিহত ও হাজার হাজার আহত হয়। সরকার পতনের পর দেশব্যাপী জনসাধারণ ও রাজনৈতিক বিরোধীদের তীব্র রোষের মুখে পড়ে দলটি।

হাসিনার পতনের পর আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রী, এমপি, দলের নেতাকর্মী, এমনকি সমর্থকদের বাড়িতেও ভাঙচুর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ শুরু হয়। ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে শেখ মুজিবুর রহমানের বাসভবনও পুড়িয়ে দেওয়া হয়।

একসঙ্গে বসার মতো কার্যালয়ও নেই বললেই চলে, প্রায় সবগুলো পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।

আ.লীগের পুনর্বাসন নিয়ে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে রুদ্ধদ্বার বঠৈক
ছবি: সংগৃহীত

নিষিদ্ধ করা হয়েছে দলটির ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন ছাত্রলীগকে। এছাড়াও আওয়ামী লীগ বা দলটির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কাউকে আগামী জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে না দেওয়ার দাবিও উঠেছে।

কয়েকজন দলীয় নেতাকর্মী বলেন, এই পরিস্থিতিতে আওয়ামী লীগের কেউই দল পুনর্গঠন বা আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণের কথা ভাবছেন না।

আত্মগোপনে থাকা দলের একজন সাংগঠনিক সম্পাদক বলেন, ‘অভ্যুত্থানের সময়কার হত্যা-গণহত্যার ঘটনায় কত হাজার মামলা হয়েছে, তা এখনও জানা নেই। দলের কেন্দ্রীয় থেকে স্থানীয় সব পর্যায়ের নেতা মামলার আসামি। হাজার হাজার নেতাকর্মী জেলে।

‘আবার একদিকে পুলিশের গ্রেপ্তারি তৎপরতা, অন্যদিকে বিএনপি-জামায়াত অনেক এলাকায় এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে যে, এমন অবস্থায় দলের কোনো নেতাকর্মী প্রকাশ্যে বের হতে পারছেন না। এমনকি কোথাও কোনো কথাও বলতে পারছেন না।’

সম্প্রতি আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার ফাঁস হওয়া বিভিন্ন অডিও রেকর্ডের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘ওইসব রেকর্ডে দল গোছানো বা আগামী নির্বাচনে অংশ নেওয়ার বিষয়ে কোনো ইঙ্গিত নেই। বরং সবাইকে নিরাপদে অবস্থানের পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।’

সম্প্রতি আওয়ামী লীগের নির্বাচনে অংশগ্রহণের সম্ভাবনা সম্পর্কে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন বলেন, সময়ই বলে দেবে দলটির নিবন্ধন বহাল থাকবে কি না এবং তারা আসন্ন নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে কি না।

সম্প্রতি সিলেটে এক সভা শেষে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘সময় আসলে দেখা যাবে কোন কোন দলের নিবন্ধন থাকে। আওয়ামী লীগ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে কি না, তা সময় বলে দেবে।’

দেখুন – সরকারের এক মাস: পুনর্গঠন-সংস্কারের আকাঙ্ক্ষায় অর্থনীতি

বিজ্ঞাপন

আরও পড়ুন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

বিশেষ প্রতিবেদন