আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বিচার ব্যবস্থাকে আরও সহজ করার প্রয়োজনীয়তার উপর গুরুত্ব দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, বিচারকদের সুবিধা না পেলেও তাদের দায়িত্ব পালনে সর্বোচ্চ চেষ্টা করতে হবে এবং এর কোনো শর্ত থাকে না।
রবিবার (২০ এপ্রিল) সকালে ঢাকা শহরের বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে সহকারী জজ এবং সমপর্যায়ের বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাদের জন্য আয়োজিত ৫০তম বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ কোর্সের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন।
বিচারকদের দায়িত্ব পালনের সময় তাদের সামান্য সুবিধাও বিচার প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করতে পারে না, এমনকি তাদের পক্ষে অন্যায়-অবিচার করার কোনো সুযোগও নেই, এমন কথা উল্লেখ করেন ড. আসিফ নজরুল। তিনি আরও বলেন, বিচার বিভাগে সীমাবদ্ধতা থাকলেও, বিচারকদের সেই সীমাবদ্ধতা মেনে সর্বোচ্চ চেষ্টা করে তাদের দায়িত্ব পালন করতে হবে এবং বিচার ব্যবস্থাকে আরও সহজ করতে হবে।
প্রশিক্ষণ কোর্সের উদ্বোধনী বক্তব্যে তিনি বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটকে এমনভাবে প্রস্তুত করতে বলেন, যাতে উপমহাদেশের অন্যান্য দেশগুলো থেকে প্রশিক্ষণার্থীরা বাংলাদেশে আসতে পারেন। তিনি উল্লেখ করেন, আওয়ামী লীগ সরকারের সময়, বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে এসে অনেকেই রাজনৈতিক বক্তব্য প্রদান করতেন, যা বিচার ব্যবস্থার নিরপেক্ষতা বজায় রাখতে বাধা সৃষ্টি করতে পারে।
এ সময় ড. আসিফ নজরুল সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় গ্রেপ্তার হওয়া ১৭ বছর বয়সী শিক্ষার্থী হাসনাতুল ইসলাম ফাইয়াজের মামলার তদন্ত দ্রুত শেষ করার জন্য আইন মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে অনুরোধ জানানো হয়েছে। তিনি বলেন, “তদন্ত কার্যক্রম শেষ না হলে আইন মন্ত্রণালয়ের কিছু করার নেই,” এবং তিনি আরও বলেন, “এই মামলায় ১৬৪ ধারায় দুটি জবানবন্দি নেওয়া হয়েছে, কিন্তু ৮ মাসেও কেন সেটি প্রত্যাহার হয়নি, সেটা সংশ্লিষ্টরা বলতে পারবেন।”
ড. আসিফ নজরুল আরও জানান, “ফাইয়াজের ভাইকে কোনো আশ্বাস দেওয়া হয়নি, তবে বিচার প্রক্রিয়া সম্পর্কে তাকে অবহিত করা হয়েছে।” এর পাশাপাশি, তিনি বিচার বিভাগে দুর্নীতি এবং অবিচারের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান গ্রহণের গুরুত্বও তুলে ধরেন।
আইন উপদেষ্টা বলেন, বিচার ব্যবস্থার কার্যকারিতা এবং নিরপেক্ষতা রক্ষা করতে বিচারকদের উচিত নিজেদের দায়িত্ব পালনের সময় কোনোরূপ পক্ষপাতিত্ব না করা এবং জনগণের বিশ্বাসকে অক্ষুণ্ণ রাখা। বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের উন্নয়ন এবং প্রশিক্ষণের মান বৃদ্ধির মাধ্যমে বিচারকদের দক্ষতা আরও বৃদ্ধি করা সম্ভব হবে, যা দেশের আইনব্যবস্থা আরও মজবুত করবে।
পড়ুন: সরকারের ভিতরে-বাইরে ফ্যাসিবাদী দোসর আছে তাদের বিচার করতে হবে : রফিকুল ইসলাম খান
দেখুন: কেয়ামতের দিন প্রথম বিচার হবে কার?
ইম/