কয়েকটি পাত্রে সাজানো রয়েছে প্রায় তিন শতাধিক জোঁক। সামনে জীবন্ত জোঁক নিয়ে বসে আছেন। ক্যানভাসার বলছেন বিভিন্ন রোগের সমাধান নাকি জোঁক ও জোঁকের তেল দিয়েই হয়! জোঁক আর জোঁকের তেলের কার্যকারিতা বর্ণনায় ক্যানভাসারের মুখরোচক কথা শুনে উৎসুক জনতাও তাকে ঘিরে রেখেছেন।
হ্যান্ড মাইকে নিজের স্টাইলে ব্যাখ্যা করছেন, বিভিন্ন রোগের সমাধান কিভাবে করা হয় তার জোঁক ও জোঁকের মাধ্যমে। রোগ সমাধানের তার সফলতার গল্পকে এমন চটকদারভাবে তুলে ধরা হচ্ছে। মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার ঐতিহ্যবাহী গোহার সংলগ্ন এলাকায় মোকসেদ গাজী জোঁকের তেল বিক্রি করেন।
জোঁকের তেল বিক্রেতা মোকসেদ গাজী জানান, বিভিন্ন হাট-বাজার ঘুরে জোঁক ও জোঁকের তেল বিক্রি করেন তিনি। ক্রেতাদের সামনেই জোঁক এবং বিচ্ছু থেকে তেল তৈরি করেন। বাত-ব্যথাসহ বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের জন্য মানুষ কিনে নিয়ে যান এসব তেল। বিশেষ করে পুরাতন ব্যথা থেকে মুক্তি পেতে এসব তেল ব্যবহারে অনেক মানুষ উপকার পাচ্ছেন বলেও দাবি করেন তিনি।
এই জোঁকের তেল বিক্রি করে দৈনিক ১ থেকে দেড় হাজার টাকা আয় করেন মোকসেদ আলী। গত ২৮ বছর ধরে নিজের এলাকা নওগাঁ জেলার মান্দা থানার বিভিন্ন হাট-বাজার ঘুরে ঘুরে তেল বিক্রি করেন তিনি। বছরে এক মাস কেবল মেহেরপুরে এসে এসব তেল বিক্রি করেন। যা দিয়েই চলে তার সংসার। নাটোরের চলন বিল ঘুরে জোঁক সংগ্রহ করা হয় বলে জানান তিনি। জোঁকের খাবার হিসেবে দেন গরু ও ছাগলের জমাটবাঁধা রক্ত।
অনেক আগে থেকেই বাত-ব্যথা সমাধানে বিভিন্ন এলাকায় জোঁকের তেল ব্যবহার করার প্রচলন রয়েছে বলে জানা যায়। এসব ক্রেতাদের মতে, এটি অনেক ক্ষেত্রে কার্যকর। এছাড়া বিচ্ছুর তেলও পুরাতন ব্যথা নিরাময় করে। তাই অনেকেই এসব ব্যবহার করছেন বলে জানান মোকসেদ গাজী।
মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক জমির মোঃ হাসিবুস সাত্তার জানিয়েছেন, জোঁকের তেল মানুষের শরীরে কোন উপকার করে না বরং এর রাসায়নিক কেমিক্যালের কারণে মানবদেহের ক্ষতি হয়। জোঁকের তেল বিক্রি এক ধরনের প্রতারণা।