27 C
Dhaka
রবিবার, মার্চ ১৬, ২০২৫

গাজায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করলো ইসরায়েল 

ইসরায়েল, ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাসের ওপর চাপ সৃষ্টি করার জন্য অবরুদ্ধ গাজায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে। দেশটি যুদ্ধবিরতির ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনা শুরু করার প্রেক্ষাপটে এই পদক্ষেপ নিয়েছে। রোববার (৯ মার্চ) ইসরায়েলের জ্বালানিমন্ত্রী এলি কোহেন অবিলম্বে গাজায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করার আদেশ দেন। কোহেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে পোস্ট করে বলেন, “সব জিম্মিকে বাড়ি ফিরিয়ে আনতে এবং যুদ্ধ শেষেযেন হামাস আর না থাকে, তা নিশ্চিত করতেই আমরা সকল পথ অবলম্বন করব।” তিনি আরও বলেন, “এখন সময় এসেছে পদক্ষেপ নেওয়ার!”

এটি প্রথম নয়, এর আগেও ইসরায়েল ত্রাণ সরবরাহ আটকে দিয়েছিল। গত সপ্তাহে গাজার সমস্ত ত্রাণ সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হয়, এবং যুদ্ধের শুরুর দিনগুলোতেও ইসরায়েল গাজা অবরুদ্ধ করার ঘোষণা দিয়েছিল। এখন, গাজার বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করার এই পদক্ষেপ পানির সংকট সৃষ্টি করতে পারে, যা রোজা মাসে এক চরম সমস্যা সৃষ্টি করবে।

বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্তকে হামাস ‘ব্ল্যাকমেইল’ হিসেবে উল্লেখ করেছে। হামাসের দাবি, ইসরায়েল তাদের জনগণ এবং প্রতিরোধ আন্দোলনের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে এই পদক্ষেপ নিয়েছে। হামাসের রাজনৈতিক ব্যুরোর সদস্য ইজ্জাত আল-রিশক বলেন, “গাজাকে খাদ্য, পানি ও ওষুধ থেকে বঞ্চিত করার পর এখন বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করা এক হতাশাজনক প্রচেষ্টা। এটি সস্তা ও অগ্রহণযোগ্য ব্ল্যাকমেইল কৌশল।”

ইসরায়েল গাজায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করলেও,

হামাসের দাবি, ত্রাণ সরবরাহ বন্ধ করার পরেও তারা এই সিদ্ধান্তকে নিন্দা জানিয়েছে। ইসরায়েলের জ্বালানিমন্ত্রী কোহেন এক ভিডিও বার্তায় বলেছেন, “আমরা সব কিছু ব্যবহার করব, যাতে জিম্মিদের ফিরিয়ে আনতে পারি এবং যুদ্ধ শেষে হামাসের অস্তিত্ব না থাকে।”

বিশ্বব্যাপী মানবাধিকার বিশেষজ্ঞরা ইসরায়েলের এই পদক্ষেপের তীব্র সমালোচনা করেছেন। ১২টির বেশি মানবাধিকার বিশেষজ্ঞ এক বিবৃতিতে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে “অস্ত্র হিসেবে ব্যবহৃত অনাহার” নীতি ফের চালু করার অভিযোগ এনেছেন। তারা ইসরায়েলের যুদ্ধবিরতি প্রচেষ্টাকে ব্যাহত করার জন্য এবং গাজার মানবিক সহায়তা বন্ধ করার জন্য এই পদক্ষেপকে নিন্দা করেছেন। জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, “ইসরায়েলের এই পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক আইন ও শান্তির সম্ভাবনাকে লঙ্ঘন করছে।”

এদিকে, ইসরায়েলি হামলায় আরও পাঁচ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, আহত হয়েছেন আরও অনেক ফিলিস্তিনি। যুদ্ধবিরতি চুক্তি সত্ত্বেও ইসরায়েল প্রায় প্রতিদিনই গাজায় হামলা চালাচ্ছে। এ হামলার ফলে নিহতের সংখ্যা প্রায় ৪৮ হাজার ৪৬০ জনে পৌঁছেছে।

গাজার বর্তমান পরিস্থিতি অত্যন্ত সংকটাপন্ন হয়ে উঠেছে। বিদ্যুৎ, খাদ্য, ওষুধ, পানি—এইসব মৌলিক মানবিক সহায়তা এখন গাজার জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ইসরায়েলের এই পদক্ষেপ শুধু গাজার জনগণের জন্য নয়, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছেও বড় একটি প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে, যেখানে মানবিক সহায়তা এবং আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের ঝুঁকি বেড়ে যাচ্ছে।

পড়ুন : বন্দি মুক্তি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র-হামাস আলোচনা ব্যর্থ

দেখুন : যুদ্ধবিরতি: জিতল কে ইসরায়েল না হামাস? |

ইম/

বিজ্ঞাপন

আরও পড়ুন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

বিশেষ প্রতিবেদন