39.2 C
Dhaka
শুক্রবার, মার্চ ২৮, ২০২৫

ট্রাম্পের সিদ্ধান্তে বিপদে মার্কিনিরাই

ট্রাম্পেরন সিদ্ধান্তে বিপদে আছেন খোদ মার্কিনিরাই । গত মাসের ২০ তারিখে যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতার মসনদে বসেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এখনো পূর্ণ হয়নি এক মাসও। এরই মধ্যে বহুবার সমালোচনার মুখে পড়ছেন তিনি। নিজের নেওয়া সিদ্ধান্তে নিজেই পড়ছেন বিপদে। ফাঁসছেন মামলায়ও।

এবার ট্রাম্পের প্রশাসনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন ১৯ জন ডেমোক্রেটিক অ্যাটর্নি জেনারেল। শুক্রবার নিউইয়র্কের ফেডারেল আদালতে এ মামলা করেছেন তারা। অভিযোগ করা হয়েছে, ট্রাম্পের পরম বন্ধু ইলন মাস্কের নেতৃত্বাধীন ডিপার্টমেন্ট অব গভর্নমেন্ট ইফিসিয়েন্সি (ডিওজিই) অবৈধভাবে মার্কিন ট্রেজারি বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ পেমেন্ট সিস্টেমের ডেটায় প্রবেশ করেছে। যার ফলে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের ব্যক্তিগত গোপনীয়তা ও আর্থিক নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়েছে। এপি, রয়টার্স।

নিউইয়র্কের অ্যাটর্নি জেনারেল লেটিশিয়া জেমস বলেছেন, ট্রেজারি বিভাগের অর্থ লেনদেন ব্যবস্থা যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের সামাজিক সুরক্ষা নম্বর, ব্যাংক অ্যাকাউন্টের তথ্যসহ সংবেদনশীল ব্যক্তিগত তথ্য সংরক্ষণ করে। ট্রাম্প প্রশাসন ডিওজিইকে এই তথ্যভান্ডারে প্রবেশে অনুমতি দিয়েছে। যা ফেডারেল আইনের লঙ্ঘন। ডিওজিই মূলত সরকারি খরচ কমানোর লক্ষ্যে গঠিত হলেও এই সংস্থার হাতে নাগরিকদের ব্যক্তিগত তথ্য চলে যাওয়ায় উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। লেটিশিয়া জেমস আরও বলেছেন, ‘এই অনির্বাচিত ব্যক্তিদের দিয়ে গঠিত সংস্থা, যা বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তির নেতৃত্বে পরিচালিত, এ ধরনের সংবেদনশীল তথ্য পাওয়ার অনুমতি পেতে পারে না।’ নিউইয়র্ক ছাড়াও মামলায় আরও ১৮টি রাজ্যের অ্যাটর্নি জেনারেল যুক্ত রয়েছেন। যার মধ্যে রয়েছে অ্যারিজোনা, ক্যালিফোর্নিয়া, কলোরাডো, কানেকটিকাট, ডেলাওয়্যার, হাওয়াই, ইলিনয়, মেইন, ম্যারিল্যান্ড, ম্যাসাচুসেটস, মিনেসোটা, নেভাদা, নিউ জার্সি, নর্থ ক্যারোলাইনা, ওরেগন, রোড আইল্যান্ড, ভারমন্ট এবং উইসকনসিন অঙ্গরাজ্যের জেনারেলরা। ডিওজিই যাতে যুক্তরাষ্ট্রের পেমেন্ট সিস্টেমে প্রবেশ করতে না পারে তা নিশ্চিত করতেই এই মামলা করেছেন তারা। এই পেমেন্ট সিস্টেম দিয়ে লাখ লাখ কোটি ডলারের লেনদেন প্রক্রিয়াকরণ হয়।

নিউইয়র্কের ম্যানহাটানের ফেডারেল আদালতে করা মামলায় বলা হয়েছে, মাস্কের নেতৃত্বাধীন এই বিভাগ ফেডারেল তহবিল বিতরণ প্রক্রিয়া ব্যাহত করতে পারে। ফলে স্বাস্থ্যকেন্দ্র, প্রি-স্কুল, জলবায়ু উদ্যোগ ও অন্যান্য কর্মসূচি ক্ষতির মুখে পড়তে পারে। সবচেয়ে বড় অভিযোগ, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই তথ্য ব্যবহার করে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন করতে পারেন। ডিওজিইয়ের এই কার্যক্রম কংগ্রেস দ্বারা অনুমোদিত তহবিল ব্যবস্থায় হস্তক্ষেপ করছে এবং এটি সংবিধানের ক্ষমতার বিভাজন নীতির বিরোধী। ট্রেজারি সেক্রেটারি স্কট বেসেন্টের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিনের তথ্য সুরক্ষা নীতিতে পরিবর্তন এনে ডিওজিইকে অবৈধভাবে তথ্যপ্রাপ্তির অনুমতি দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে।

ইলন মাস্ক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে ডিওজিইয়ের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ নিয়ে ব্যঙ্গাত্মক মন্তব্য করেছেন। একই সঙ্গে দাবি করেছেন, সংস্থাটি জনগণের অর্থ সাশ্রয় করছে। তবে মামলার বাদীপক্ষ মনে করেন, এই সিদ্ধান্তের ফলে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের ব্যক্তিগত গোপনীয়তা ও আর্থিক নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়েছে। সরকারি ব্যয় হ্রাস ও আমলাতন্ত্রের রাশ টেনে ধরতে ট্রাম্প মাস্ককে ডিওজিইয়ের প্রধান হিসাবে নিয়োগ দিয়েছেন বলেও জানিয়েছেন অনেকেই।

তবে মাস্কের এই কার্যক্রম কী হবে তা নিয়ে ইতিমধ্যে ডেমোক্রেটসহ ভিন্ন অধিকারভিত্তিক সংগঠনগুলোর মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে। তারা মনে করছে, মাস্ক ক্ষমতার সীমা লঙ্ঘন করছেন। সে সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ সরকারি সংস্থাগুলো ভেঙে ফেলার চেষ্টার পাশাপাশি বিপুলসংখ্যক ফেডারেল কর্মী ছাঁটাই করতে চাইছেন।

এর আগে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় সরকারের আকার কমিয়ে সরকারি ব্যয় হ্রাসের পরিকল্পনা করছেন ট্রাম্প। এই পরিকল্পনার অংশ হিসাবে দেশটির কেন্দ্রীয় সরকারের কয়েক লাখ কর্মচারীকে প্রণোদনার বিনিময়ে স্বেচ্ছায় পদত্যাগের প্রস্তাব দিয়েছেন তিনি। তবে গত বৃহস্পতিবার প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের পরিকল্পনা সাময়িকভাবে স্থগিত করেছেন দেশটির এক বিচারক।

বিজ্ঞাপন

আরও পড়ুন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

বিশেষ প্রতিবেদন