এবার মৌসুম শুরুর আগেই দেশে ডেঙ্গু সংক্রমণ আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে। মার্চের তুলনায় এপ্রিল মাসে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা দ্বিগুণ হয়েছে। তবে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়লেও এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে কার্যকর কোনো উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, থেমে থেমে বৃষ্টিতে জমে থাকা পানির কারণে মশার বিস্তার বাড়ছে। সবচেয়ে উদ্বেগের বিষয়, মোট রোগীর প্রায় ৫৭ শতাংশই রাজধানীর বাইরের।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, মার্চে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন ৩৩৬ জন, মারা যান তিনজন। এপ্রিল পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ৭০১ জন, মারা গেছেন সাতজন। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত ২ হাজার ৬১১ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন এবং মারা গেছেন ২০ জন।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কীটতত্ত্ববিদ ড. কবিরুল বাশারের নেতৃত্বে পরিচালিত ‘মশা জরিপ ও ডেঙ্গু পূর্বাভাস’ প্রতিবেদনে দেখা গেছে, এ বছর এপ্রিলে মশার ঘনত্ব ছিল ১০.২৬ শতাংশ, যা গত বছরের একই সময়ে ছিল ৯.২৫ শতাংশ। ঢাকার বাইরেও চট্টগ্রাম, বরগুনা, বরিশাল, চাঁদপুর, গাজীপুর ও ময়মনসিংহে মশার ঘনত্ব বেশি।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জুলাইয়ের গণ-অভ্যুত্থানের পর সিটি করপোরেশন ও পৌরসভার কার্যক্রম ধীর হয়ে গেছে। ফলে মশক নিধনে মাঠপর্যায়ে কার্যক্রম নেই বললেই চলে। লার্ভিসাইডিং, সচেতনতামূলক প্রচার, জলাশয় পরিষ্কার, স্কুলভিত্তিক সচেতনতা কার্যক্রম, এমনকি ভ্রাম্যমাণ আদালতের কার্যক্রমও বন্ধ রয়েছে।
এদিকে মহাখালীর কভিড-১৯ হাসপাতালটিকে ডেঙ্গু চিকিৎসার জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে, চিকিৎসাসেবা নিশ্চিতে হাসপাতালগুলোতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে এবং ডেঙ্গুর গাইডলাইন হালনাগাদ করে চিকিৎসকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. নিশাত পারভীন জানান, সচেতনতা কার্যক্রম চলছে এবং ভ্রাম্যমাণ আদালতের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। উত্তরের সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ইমরুল কায়েস জানান, সেনাবাহিনীর সহায়তায় মশক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে।
পড়ুন: ডিএনসিসির সব নগর স্বাস্থ্যকেন্দ্রে বিনামূল্যে ডেঙ্গু টেস্ট করা যাচ্ছে: ডিএনসিসি প্রশাসক
দেখুন: ডেঙ্গু থেকে বাঁচতে সবার সচেতনতা প্রয়োজন: চিকিৎসক
ইম/